ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪

ভুল চিকিৎসায় মা-সহ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২০:০৪, ১২ জানুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ২০:১৪, ১২ জানুয়ারি ২০২২

ঠাকুরগাঁও শহরে একতা নার্সিং হোম নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় নাসিমা খাতুন নামে (৩০) এক প্রসূতি মা ও তাঁর নবজাতক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে নিহত প্রসূতি মায়ের স্বজনেরা এই অভিযোগ করেন। ঘটনাটি টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। নিহত প্রসূতি সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের খইলসাকুরি গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী ছিলেন।

নিহতের মা আনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সন্তান সম্ভাবা আমার মেয়ে নাছিমা খাতুনকে মঙ্গলবার বিকেলে শহরের একতা নার্সিং হোম ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। রাতে কোন প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তাড়াহুড়ো করে প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সিজারের পরে ডাক্তার জানান, শিশু সন্তানটি মারা গেছে। এ কথা শুনে অমরা সবাই আমার মেয়েকে দেখতে চাইলে নার্সরা আমাদের দেখা করতে যেতে দেয়নি। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপরে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হলে ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার মেয়েকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। এরপর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একটি অ্যাম্বুলেন্সে আমার মেয়েকে রেখে পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়।’

একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা মা কান্না জড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের সুচিকিৎসা হয়নি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং এই ডাক্তারে বিচার চাই।’

এ বিষয়ে নিহতের ফুফাতো ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার সময় আমার বোন একদম সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। এখানকার ডাক্তার তাঁর চিকিৎসা ভালো দিতে পারেননি। যে কারণে আমার বোন মারা গেছেন।’

অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাচ্চা পেটেই মৃত ছিল। আমি যখন অপারেশন করে চলে যাই, তখন পর্যন্ত রোগী ভালোই ছিল। এরপর প্রায় ৫০ মিনিট পর জানতে পারি রোগীর বিপি পাওয়া যাচ্ছে না। পরে খবর পেয়ে ক্লিনিকে আবার এসে রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে রোগীকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কারণ রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু রোগীর স্বজনেরা তাকে নিয়ে যেতে রাজি হননি। তারা এই ক্লিনিকেই চিকিৎসা দিতে বলেন। দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো রোগীটিকে বাঁচানো যেত।’

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ রয়েছে, ইতিপূর্বে এই ডাক্তারের কাছে আরো কয়েকজন রোগী মারা গেলেও তিনি অজ্ঞাত কারণে অভিযোগ মুক্ত হয়েছে।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি