ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪

জনবল সংকটে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:১৭, ২১ আগস্ট ২০২২

জনবল সংকটের ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে দু’দেশের ভ্রমণ পিপাসু পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের। কোভিডের কারণে দু’বছর বন্ধ থাকার পর এ পথে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ। 

এদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রমে। এর ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন দুই দেশের যাত্রীরা।

ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনে ৩ জন এএসআই থাকার কথা থাকলেও আছেন ২ জন। ৭ জন পুলিশ সদস্য বরাদ্দ থাকলেও আছেন মাত্র ২ জন। একটি এসআই কোয়ার্টার থাকলেও তা বহু আগেই পরিত্যাক্ত হয়ে আছে। মূল ভবনের একটি অংশে পুলিশ সদস্যরা ব্যারাক করে থাকছেন, সেটিও অনেক সংকীর্ণ। 

মূল ভবনটি বেশ পুরাতন হওয়ায় ছাদের পলেস্তার খসে পড়ছে যাত্রীদের মাথায়। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং এবং সার্ভার জটিলতার ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতিদিন আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ১ থেকে দেড় হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াত করেন। এই যাত্রী সংখ্যার বিপরীতে বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবনটি একেবারেই ছোট এবং জরাজীর্ণ। 
বার বার সংস্কার করে কোনো রকমে টিকে আছে ভবনটি। টানা বৃষ্টি হলে হাঁটুপানি জমে ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে। তখন যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। বর্তমান ভবনটিতে যাত্রীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত বসার জায়গা এবং টয়লেট ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থাও।

অপরদিকে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের নকশা নিয়ে আপত্তি তুলেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বিএসএফের বাঁধার মুখে গত সাড়ে ৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ভবনের কাজ। বিষয়টি নিয়ে এখনও বিএসএফ কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় ইমিগ্রেশনের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

এ নিয়ে চার দফায় বিএসএফের আপত্তির কারণে কাজ বন্ধ হলো। 

চট্রগ্রাম থেকে আসা ভারতগামী যাত্রী বিমল ঘোষ জানান, সকাল ১০টায় এসেছি কিন্তু ১২টায়ও লাইনেই আছি। এত গরমের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ বোধ করছি। পর্যাপ্ত পরিমাণ বৈদ্যুতিক পাখা না থাকার কারণে ইমিগ্রেশনের ভেতর প্রচণ্ড গরমে তাপদাহ সৃষ্টি হয়েছে।

আখাউড়া কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৫২২ জন যাত্রী। এ অর্থ বছরে যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণকর হিসেবে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬ কোটি ২৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন ৪ হাজার ৬০৯ জন যাত্রী। ভ্রমণকর হিসেবে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩ লাখ ৪ হাজার ৫শ’ টাকা। 

২০২১-২০২২ অর্থ বছরে আখাউড়া দিয়ে ভারতে গেছেন ৫৬ হাজার ৪৬৫ জন যাত্রী। রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৫শ’ টাকা। 

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ স্বপন চন্দ্র দাস জানান, প্রতিদিন আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে হাজারেরও বেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করেন। কিন্তু বর্তমান দুই কক্ষের একতলা ইমিগ্রেশন ভবনটি যাত্রীর তুলনায় বেশ ছোট এবং জরাজীর্ণ। 

বর্তমানে দুইটি ডেক্সে যাত্রীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। দশটি ডেক্স করার জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ফলে জটিলতা দেখা দেয়। এতে করে যাত্রীদের সেবা দিতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আরএমএ/এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি