ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

শার্শায় স্ত্রীর পরকীয়ায় জীবন গেল প্রাবাসীর

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৯:৩৬, ২৯ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৯:৪১, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

স্ত্রীর পরকীয়ার বলী প্রাবাসী সামছুর রহমান ও শার্শাস্থ তার বাড়ি

স্ত্রীর পরকীয়ার বলী প্রাবাসী সামছুর রহমান ও শার্শাস্থ তার বাড়ি

যশোরের শার্শায় স্ত্রীর পরকীয়ার বলী হয়ে জীবন হারালেন বিদেশ ফেরত সামছুর রহমান সরদার (৫০)। টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত (২৯ নভেম্বর) রাতে খুলনা মেডিকেলে তার মৃত্যু হয়। 

নিহত সামছুর রহমান উপজেলার উলাশী গ্রামের সরদার পাড়ার আরশাদ আলী সরদারের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সামছুর রহমানের স্ত্রী পারুলকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সম্ভবত সে গা-ঢাকা দিয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সামছুর রহমান একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী। এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গত ৭ বছর সে প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৫ দিন আগে গত ১৪ নভেম্বর বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়িতে আসার দু'দিন পর তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা নিতে নাভারন বেসরকারি ক্লিনিকের এক ডাক্তারকে দেখান এবং প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পরামর্শ নেন। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, ডাক্তারের দেয়া ওষুধ তালিকায় পিরিটন (Piriton) নামে একটি কাশির সিরাপ ছিল। সেই সিরাপটি প্রথম ডোজ সেবন করার পর কোনও সমস্যা দেখা না গেলেও দ্বিতীয়বার সেবন করলেই বমি ও পেটে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। তখন সামছুরের ছেলে তার বাবাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামছুর বিষক্রিয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং তার অবস্থা আশংকা জনক বলে জানায়। এমনকি তাকে খুলনা মেডিকেলে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হয়। পরে সামছুর রহমান সেখানে ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। 

এ ব্যাপারে সামছুরের পিতা আরশাদ আলী সরদার অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলের বউ পারুল ও তার প্রেমিক রুবেল হোসেন মিলে কৌশলে আমার ছেলেকে বিষপান করিয়ে হত্যা করেছে। সামছুর মালয়েশিয়া থাকাকালীন সময়ে স্ত্রী পারুল ওই এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী রুবেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। 

বিষয়টি জেনে সামছুরের পরিবার রুবেল ও পারুলকে নিষেধ করলে রুবেলসহ তার ক্যাডাররা বেশ কয়েকবার তাদেরকে হুমকি-ধমকি দেয়। ফলে তারা আর বিষয়টি কাউকে জানতে সাহস পায়নি বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে সামছুরের মা শাহিদা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলের কাশির সিরাপের ভিতরে কৌশলে আমার ছেলের বউ পারুল ঘাস মারা বিষ রেখে দেয়। তার প্রেমিক রুবেল এই পরামর্শ দেয়। তারা দু'জনে ষড়যন্ত্র করে সামছুরকে মেরে ফেলেছে। আমরা তাদের অবৈধ সম্পর্কের কথা জেনেও ভয়ে কিছুই করতে পারেনি। রুবেল অনেক ক্ষমতাধর, তাই আমাদের ক্ষতি হবে জেনেও ভয়ে নিরব ছিলাম।

সামছুরের একমাত্র কন্যা তিন্নি অভিযোগ করে বলেন, আমার মা’কে ওই গুন্ডা রুবেল শিখিয়ে দিয়েছিল যে, কিভাবে আমার পিতাকে মেরে ফেলা যায়। সেই কথা শুনে মা সিরাপের সাথে বিষ মিশিয়ে বাবাকে সেবন করিয়ে মেরে ফেললো। আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পারুলের প্রেমিক মাদক ব্যবসায়ী মির্জাপুর গ্রামের রুবেল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সাথে পারুলের আগে সম্পর্ক ছিলো। সে তো সবাই জানে। কিন্তু এখন কোনও সম্পর্ক নেই। আর এ ঘটনায় আমার কোন সম্পৃক্ততার প্রশ্নই ওঠে না।

শার্শা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসান জানান, ঘটনা জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ ঘটনায় খুলনা সোনাডাঙ্গা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্ট ও আলামতের ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়া গেলে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। 

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি