ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪

ঢাবির ৬ হলের ফল: ৪টিতেই ছাত্রলীগ

প্রকাশিত : ২২:০০, ১১ মার্চ ২০১৯

ডাকসু নির্বাচনে ছয়টি হল সংসদ নির্বাচনের ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মুহসিন হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, জিয়াউর রহমান ও জসীম উদ্দিন হলে ছাত্রলীগ ভিপি ও জিএস উভয় পদে জয়ী হয়েছে। তবে শামসুন্নাহার হলের ফল পাল্টে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এখানে ভিপি, জিএস এজিএসসহ ১৩টি পদের ৮টিতেই স্বতন্ত্র প্যানেল জয়ী হয়েছে।

এছাড়াও ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের ভিপি পদটি গেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দখলে। আবার সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ভিপি পদে জয়ী হলেও জিএস পদে ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হেরে গেছেন।

সোমবার (১১ মার্চ) ডাকসু নির্বাচন শেষে হলগুলোর নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা হল সংসদ রিটার্নিং অফিসাররা এই ফল ঘোষণা করেন।

শামসুন্নাহার হলের ভিপি, জিএস এজিএসসহ ১৩টি পদের ৮টিতেই স্বতন্ত্র প্যানেল জয়ী হয়েছে। বাকিগুলোতে ছাত্রলীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। হলটিতে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি, জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন আফসানা ছপা, এজিএস ফাতিমা আক্তার। জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্যানেলটি ৮ জনেরই ছিল। এরা সবাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্যানেলের শিক্ষার্থী।

সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে সাইফুল্লাহ আব্বাসী অনন্ত। তিনি পেয়েছেন ১২৮৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোলায়মান ইসলাম পেয়েছেন ১২৬ ভোট। এই হলে জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তৌফিকুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ৮৩৬ ভোট। তার নিকটতম রিফাত উদ্দিন পেয়েছেন ৬৮০ ভোট।
জসিমউদ্দিন হল ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেলের ফরহাদ আলী। এই হলে জিএস নির্বাচিত হয়েছেন একই প্যানেলের ইমাম হাসান।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রলীগ সমর্থিত প্রার্থী শহিদুল হক শিশির। তিনি পেয়েছেন ৭৬০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাকিল মিয়া পেয়েছেন ২১৭ ভোট। জিএস নির্বাচিত হয়েছেন একই প্যানেলের মেহেদী হাসান মিজান। তিনি পেয়েছেন ৬২১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিজান রহমান পান ২৫১ ভোট।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদে ভিপি পদে ছাত্রলীগের আকমল হোসেন ও জিএস পদে মেহেদি হাসান শান্ত নির্বাচিত হয়েছেন। আকমল হোসেন পেয়েছেন ৯৭৯ ভোট ও জিএস পদে মেহেদী হাসান শান্ত পেয়েছেন ৯৯৫ ভোট। এই হলের ১১টি ছাত্রলীগ জয়ী হলেও দুটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এরা হচ্ছেন সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ইয়াসির আরাফাত ও সদস্য পদে আতাউল্লাহ আরমান।

জিয়া হলে পূর্ণ প্যানেলে জিতেছে ছাত্রলীগ। এখানে ছাত্রলীগ থেকে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন শরিফুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ৮২৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারেক হাসান পেয়েছেন ১৬৯ ভোট। এই প্যানেল থেকে জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন হাসিবুল হোসেন শান্ত। তিনি পেয়েছেন ৬৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রায়হানুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৪৪ ভোট।

তবে ফলে চমক এসেছে ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে। এতে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থী রিকি হায়দার আশা। তিনি ছাত্রলীগের প্রার্থী কোহিনুর আক্তার রাখিকে পরাজিত করেন। এই হলে সাধারণ সম্পাদক পদে ছাত্রলীগের সারা বিনতে জামাল জয়ী হন। এই হলে ১০ পদে ছাত্রলীগ জয় হলেও রিকির মতো সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে তাসলিন হালিম মিম ও সাহিত্য সম্পাদক পদে খাদিজা জয়ী হন। এই দুজনও সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থী ছিলেন।

বিজয় একাত্তর হলে ১৩টি পদের সব কটিতেই জয়ী হয়েছে ছাত্রলীগ প্রার্থীরা। এই হলে ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন সজিবুর রহমান এবং জিএস পদে জয়ী হয়েছেন নাজমুল হাসান নিশান।

সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হলেও পূর্ণ প্যানেলে জয়ী ছাত্রলীগ। এই হলে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন এম এম কামাল। জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন জুলিয়াস সিজার ও এজিএস পদে জিতেছেন নওশের। জগন্নাথ ও এসএম হলেও ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল বিজয়ী হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৬ জুন। এরপর ’৯১, ’৯৪, ’৯৫ ও ২০০৫ সালে তফসিল, এমনকি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও কিছু সহিংস ঘটনা, সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকা ও ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতা ইত্যাদি কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। ২০১২ সালে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চ’থেকে বিক্ষোভ, ধর্মঘট, কালো পতাকা মিছিলের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানান সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে এ দাবি আবার সামনে আসে। ওই বছরের ২৯ জুলাই ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ আদালতের নির্দেশে আজ নির্বাচন হলো।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি