ঢাকা, বুধবার   ০২ জুলাই ২০২৫

মাহির আহাজারি, ‘আমার ভাইটা চলে গেল’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:১২, ১ জুলাই ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ভালো নেই ছোট পর্দার দর্শকপ্রিয় মুখ সামিরা খান মাহি। গত রোববার (২৯ জুন) জানান, তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেল মারা গেছেন। তবে মাহির অভিযোগ, চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তার ভাই। শুধু তাই নয়, তার ভাইকে মেরে ফেলার অভিযোগও করেছেন এই অভিনেত্রী।

বিষয়টি নিয়ে মাহি তার ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার একটিতে তিনি লিখেছেন, “আমার ভাইটা চলে গেল। ওকে মেরে ফেলল আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না।”

অন্য একটি স্ট্যাটাসে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন সামিরা খান মাহি। এ লেখার শুরুতে মাহি বলেন, “আমি গভীর শোকের সাথে জানাচ্ছি, আমার কাজিন ছোট ভাই যে আমাদের সাথে আমাদের বাসায় থাকত একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। একটি নোয়া গাড়ি ২-৩ বার ধাক্কা দিয়ে ওকে ফেলে দেয়, গাড়িটি পানিতে পড়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট পর দুইজন মানুষ গাড়ির গ্লাস ভেঙে পানির নিচ থেকে ওকে তোলে। কিন্তু এরপর যা ঘটে, সেটা আরো ভয়ংকর।”

দুর্ঘটনার পর মাহির ভাইকে হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেয়নি। এ অভিযোগ করে মাহি বলেন, “হাসপাতাল ওকে ভর্তি নেয়নি, কারণ ওরা চিন্তা করছিল কোথাকার কে এসেছে, বিল দেবে কি না, পরিবার কারা— এই সব হিসাব। একজন মানুষের জীবন তাদের কাছে মূল্যবান ছিল না। এরপর ওকে নেওয়া হয় সরকারি হাসপাতালে, কিন্তু সেখানকার ব্যবস্থাপনাও অগোছালো। যথাযথ চিকিৎসা হয়নি।”

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সামিরা মাহি বলেন, “আমার প্রশ্ন, প্রথমে কি আসা উচিত— একজন মানুষের জীবন, না টাকা-পয়সার হিসাব? একটা মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, আর একটি গাড়িও দাঁড়ায় না— এ কেমন মানবতা? মানুষ কি সত্যিই এতটা নির্দয় হয়ে গেছে?”

মানবতা ফিরে আসার প্রার্থনা করে মাহি বলেন, “এই সমাজ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, মনুষ্যত্ব— সবকিছু আজ প্রশ্নের মুখে। আমার ভাই আর নেই, কিন্তু আমি চাই না অন্য কারো পরিবারের সাথে এমন হোক। আজকে আমার ভাই কাল আপনার। মানবতা ফিরে আসুক, মানুষের প্রাণই হোক অগ্রাধিকার।”

এদিকে, দেশের একটি গণমাধ্যমকে মাহি জানান, গত শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেল। ফেনী থেকে ঢাকা ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারান তিনি।

মাহি বলেন, “ও আমাদের বাসায় থাকত। দুই দিনের জন্য ফেনী গিয়েছিল বন্ধুর বিয়ে খেতে। ফেনী থেকে ফিরছিল। কুমিল্লার ময়নামতি ক্রস করার পর দুর্ঘটনা ঘটে। রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে ওর গাড়িকে বড় একটি গাড়ি ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। অনেক পানি ছিল। মূল রাস্তা থেকে পুকুরটা দেখাও যাচ্ছিল না। পাশাপাশি দুর্ঘটনার সময় আর কোনো গাড়িও ছিল না সেখানে। একটা বাইক ছিল। ওই বাইক আরোহীরা ওকে দেখেন। ওনারাই নিকটস্থ হাসপাতালে নেন। ওই হাসপাতালে না রাখলে পাশের আরেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে এক ঘণ্টার মতো বেঁচে ছিল আমার কাজিন।”

কাঁদতে কাঁদতে মাহি বলেন, “ওকে যে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল সেখানকার লোকজন বলেছেন, ইন্টারনাল ব্লিডিংয়ের কারণে মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু রাখতে পারছিল না। কারণ নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল।”

শাহেদের সঙ্গে ছিল মাহির বাগদত্তা সাদাত শাফি নাবিলের ভিজিটিং কার্ড। উদ্ধারকারীরা ওই কার্ড থেকে নম্বর নিয়ে শাফির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে শাহেদের মৃত্যু সংবাদ দেন।

ভাই হারিয়ে শোকগ্রস্ত মাহি। আইনি পদক্ষেপ নিতে চান কি না জানতে চাইলে মাহি বলেন, “কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে জানি না। পেছনে থেকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে। কোন গাড়ি, কী গাড়ি কিছুই জানা নেই। তা ছাড়া গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে দাফন হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে লাশের পোস্ট মর্টেম প্রয়োজন হয়। আমরা চাইনি কোনো কাটাছেড়া করা হোক।”


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি