ঢাকা, রবিবার   ১২ মে ২০২৪

সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র   

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:১৬, ১২ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার জন্য সিরিয়াকে কড়া জবাব দেওয়া হবে।   

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা নেতারা সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না আসলেও এই ঘটনায় রাশিয়া ও সিরিয়াকে তারা দায়ী মনে করে বলে জানিয়েছেন তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স।   

বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বৈঠকের কথা রয়েছে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের। মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেও।   

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সর্বশেষ এক টুইটে বলেছেন ‘রাশিয়া প্রস্তুত হও’- কারণ যে মিসাইল আসবে তা হবে ‘সুন্দর, নতুন এবং বুদ্ধিমান।’

তিনি আরও লিখেছেন, রাশিয়ার উচিত হয়নি ‘একটা গ্যাস-মারা জানোয়ারের সঙ্গে’ মিত্রতা করা।

এর আগে লেবাননে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সিরিয়ার আমেরিকা ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়লে রাশিয়া তা গুলি করে নামাবে। এমনকী যেখান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হবে, সেসব জায়গাকেও টার্গেট করবে রাশিয়া।

সিরিয়ার দুমায় গত শনিবার এক বোমা হামলায় বহু বেসামরিক লোকের মৃত্যুর এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাক-বিতন্ডা দিন দিন ভয়ানক চেহারা।

রাশিয়া আহ্বান জানিয়েছে, যেন ওই আক্রমণকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সামরিক পদক্ষেপ না নেয়।

জাতিসংঘে মস্কোর দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া একথা বলে ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ার করে দেন, যে কোনো রকম সামরিক অভিযানের দায়দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে।

মস্কো ইতিমধ্যেই ওই আক্রমণ কারা চালিয়েছে তা বের করার লক্ষে একটি মার্কিন প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে।

কিন্তু আমেরিকা এবং তাদের দুই পশ্চিমা মিত্র- ফ্রান্স এবং ব্রিটেন বলছে, সিরিয়ার সরকার দুমায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং এর জন্য প্রেসিডেন্ট আসাদকে শাস্তি পেতেই হবে।

সিরিয়ার সরকার এবং রাশিয়া বার বার বলছে, কোনও রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ দুমায় হয়নি। বরঞ্চ বিদ্রোহীরা নাটক সাজিয়ে আমেরিকাকে যুদ্ধে জড়াতে চাইছে। সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্র নিরোধে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওপিসিডিব্লিউকে দুমায় তদন্ত করতে দিতেও রাজী হয়েছে সিরিয়া।

কিন্তু সে ব্যাখ্যায় কান দিচ্ছে না আমেরিকা। সিরিয়াকে দায়ী করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এক প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দেওয়ার পর, আমেরিকা এবং ফ্রান্স সামরিক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ষ্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুমকিও দিচ্ছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়া হুমকি দিয়েছে আমেরিকা সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে, তা গুলি করে নামানো হবে।

লেবাননে রুশ রাষ্ট্রদূত অলেক্সান্দার জাসিপকিন বলেন, আমেরিকানরা যদি আঘাত করে তাহলে তাদের ক্ষেপনাস্ত্র গুলি করে নামানো হবে, এমনকী যেসব জায়গা থেকে ক্ষেপনাস্ত্র ছোঁড়া হবে, সেসব জায়গাগুলোকেও টার্গেট করা হবে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট এবং রুশ সামরিক কম্যান্ডাররা সেই ঘোষনাই দিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা অবশ্য বলছেন, সিরিয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে পুরোদস্তুর সংঘাতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে এখনও কুন্ঠা রয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে। ব্রিটেন এখনও এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান খুব ষ্পষ্ট করছে না।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে আরও প্রমান দেখতে চাইছেন। অন্যিদকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন যদি কোনো হামলার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে তার টার্গেট হবে রাশিয়ার সরকারি রাসায়নিক অস্ত্রের গুদাম।

দুরপাল্লার টমাহক ক্ষেপনাস্ত্রবাহী আমেরিকান একটি যুদ্ধ জাহাজ সিরিয়ার উপকুলের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে।

আমেরিকার সামরিক নীতি নির্ধারকরা ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ল্যাটিন আমেরিকায় তার এক নির্ধারিত সফর বাতিল করেছেন।

ওয়াশিংটন থেকে বিবিসির বারবারা প্লেট উশার বলছেন, ইঙ্গিত ষ্পষ্ট হচ্ছে যে শুধু কয়েকটি ক্ষেপনাস্ত্র ছোঁড়ার চেয়ে বড় ধরনের সামরিক অভিযানের জন্য আমেরিকা প্রস্তুত হচ্ছে।

ওদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউ এইচ ও বলেছে সিরিয়ার দুমায় পাঁচশর মত মানুষের মধ্যে রাসায়নিক অস্ত্রে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ দেখা গেছে বলে তাদের কাছে খবর। ওই জায়গায় যাওয়ার অনুমতি দাবি করেছে ডব্লিউ এইচ ও।

সূত্র: বিবিসি

একে//এসি 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি