ঢাকা, শনিবার   ০২ আগস্ট ২০২৫

জলবায়ু নিয়ে গ্রেটার পাশে লক্ষ জনতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে ১৬ বছর বয়সি সুইডিশ ছাত্রী গ্রেটা থুনবার্গের ডাকে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকাসহ ১৫০টি দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেছে শিক্ষার্থীরা।

এসব প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বড়রাও অংশগ্রহণ করেছে। এখন পর্যন্ত গ্রেটার ডাকে সাড়া দিয়ে বেড়িয়ে এসেছে বিভিন্ন শহরের লাখ লাখ জনতা।

গ্রেটার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহর কচিকাঁচারা বিক্ষোভে উত্তাল করে দিয়েছে। পরিবেশ আন্দোলনকারী গ্রেটার সঙ্গে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের রাস্তায় কাতারে কাতারে লোক বেড়িয়ে এসেছে। ছোটদের সঙ্গে সমান তালে পা বাড়িয়েছে বড়রাও। যা এক সময় রূপ নেয় জনসমুদ্রে।

সামনের সপ্তাহে নিউইয়র্কে শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের পরিবেশ সম্মেলন। তার আগে রাষ্ট্রনেতাদের কাছে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দিতে চান এই আন্দোলনকারীরা। শিক্ষার্থীরা বলছে, ‘জলবায়ু পরিবর্তনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া না পর্যন্ত এই লড়াই চলবে। দেখিয়ে দেব ছোটরাও বড় পরিবর্তন আনতে পারে।’

গত বছর আগস্ট মাসে কেউ চিনতো না সুইডিশ এই কিশোরীটিকে। ‘সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে একটি বাচ্চা মেয়ে রোজ প্ল্যাকার্ড হাতে বসে থাকে’- এরকম একটি সংবাদ শিরোনাম থেকে গ্রেটাকে চিনতে শুরু করে। তার হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘পরিবেশের জন্য স্কুল বন্ধ’। 

কেউ পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে গ্রেটা বলত, ‘আমার কথা শুনতে হবে না, বিজ্ঞানীদের কথা শুনুন।’ এক-এক করে সে পাশে পায় তারই মতো আরও কিছু শিক্ষার্থীকে। সেই সংখ্যা এখন লাখ ছাড়িয়েছে। গোটা বিশ্বের দেড়শ’রও বেশি দেশের শিক্ষার্থীরা একযোগে স্কুলে না গিয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছে গতকাল। পথে নেমেছে বড়রাও।

সানফ্রান্সিসকো ও সিয়াটলে গুগল, আমাজন ও অন্য বেশ কিছু প্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে তাদের কর্মীরা। তাদের বক্তব্য, বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে উদাসীন মালিকপক্ষ।

একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রেটা আজ বলেন, ‘এমন কিছু হতে পারে কল্পনাও ছিল না। তাও এত তাড়াতাড়ি, মাত্র ১৫ মাসে!’ সরকারিভাবে এখনও বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি। গ্রেটার কথায়, ‘সংখ্যাটা জানতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছি।’

ম্যানহাটনের আজকের জনসমাবেশে সরকারিভাবে কোন বাধা দেওয়া হয়নি। মা-বাবারাও সম্মতি দিয়েছিল। ফলে অস্ট্রেলিয়ার মতো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি শিক্ষার্থীদের। যদিও বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী ম্যাথিয়াস করম্যান বলেছিলেন, ‘বাচ্চাদের ক্লাসেই মানায়, মিছিলে নয়।’

এ পর্যন্ত ২১ জন কিশোর-কিশোরী মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মামলা করেছে। তার মধ্যে রয়েছে গ্রেটাও। নিউইয়র্কের মিছিলে গ্রেটা আজ দাবি তোলেন, বিজ্ঞানীদের দেওয়া তথ্যপ্রমাণ শুনতে হবে সরকারকে। সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে, এতে হারিকেনের সংখ্যা বাড়বে। সম্প্রতি বাহামাকে যে ভাবে ঝঞ্ঝার মুখোমুখি হতে হয়েছে, গোটা পৃথিবীকে সেই রকম ধাক্কা সামলাতে হবে। সমুদ্রে পানির স্তর বাড়ছে। তাতে ডুবে যাচ্ছে বহু দ্বীপ। রাষ্ট্রনেতারা এসব উপেক্ষা করতে পারেন না। 

আজ ফোলি স্কোয়ার থেকে মাইলখানেক হেঁটে মিছিল ব্রডওয়ে হয়ে ব্যাটেরি পার্কে পৌঁছায়। এখানে বন্ধুদের সঙ্গে হেঁটেছে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুয়ানা ক্রেসপোইল। সে বলেছে, ‘স্কুল কামাই করতে হত না আমাকে, এটা এমনিতেই হওয়া উচিত ছিল। যদি নেতারা তাঁদের কাজটা করতেন।’ আর এক শিক্ষার্থী হুঙ্কার দিয়ে বলেছে, ‘বড়রা কিছু করছে না বলেই ছোটদের হাল ধরতে হচ্ছে!’

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি