ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

যৌন কেলেঙ্কারিতে পদত্যাগ করলেন নিউইয়র্কের গভর্ণর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৮, ১১ আগস্ট ২০২১ | আপডেট: ১১:৫৬, ১১ আগস্ট ২০২১

নিউইয়র্কের গভর্ণর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বেশ কয়েকজন নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন, তদন্তে এই রকম তথ্য বেরিয়ে আসার পর তিনি পদত্যাগ করেছেন। যদিও এর মধ্যেই তাকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এদিকে কেলেঙ্কারির জের ধরে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য হওয়া টানা তৃতীয় গভর্নর হলেন কুয়োমো।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) পদত্যাগের ঘোষণা দেন গভর্ণর অ্যান্ড্রু কুয়োমো। তবে তার এই পদত্যাগ ১৪ দিন পরে কার্যকর হবে। এরপর গভর্নরের দায়িত্ব নেবেন লেফটেন্যান্ট ক্যাথি হকুল। মিস হকুল হতে যাচ্ছেন নিউইয়র্ক রাজ্যের প্রথম নারী গভর্ণর।

তবে অভিযোগ নাকচ করে কুয়োমো বলছেন, ‘আমি যদি পদ থেকে সরে দাঁড়াই, সেটাই হবে (তদন্তে) সবচেয়ে ভালোভাবে সহায়তা করা।’  পদত্যাগ করলেও যৌন হয়রানির এসব অভিযোগ ধরে কুয়োমোর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত করা হবে।

অভিযোগ ওঠার পর থেকেই অ্যান্ড্রু কুয়োমো ডেমোক্র্যাট নেতাদের কাছ থেকে পদত্যাগের চাপের মধ্যে ছিলেন। এদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও রয়েছেন।

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস তদন্ত করে দেখতে পায় যে, ৬৩ বছরের কুয়োমো ১১ জন নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন। যাদের মধ্যে অঙ্গরাজ্যটির কর্মীরাও রয়েছেন। এই নারীরা অভিযোগ করেছেন যে, তিনি যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, আপত্তিকর স্পর্শ বা জড়িয়ে ধরেছেন এবং সম্মতি ছাড়াই চুমু খেয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের পর অনেক ডেমোক্রেটিক সদস্য কুয়োমোর বিপক্ষে চলে যান। যাদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি, সিনেট নেতা চাক শুমার এবং নিউইয়র্কের দুজন সিনেটর।

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে কুয়োমো বরাবরের মতোই যৌন হয়রানির অভিযোগগুলো নাকচ করে দেন। তবে তিনি বলেছেন, তার কর্মকাণ্ডের ফলে যেসব নারীরা আহত হয়েছেন, তাদের কাছে তিনি গভীর, গভীরভাবে ক্ষমা চান।

তিনি বলেছেন, এসব বিতর্ক সত্ত্বেও তিনি লড়াই চালিয়ে যেতে চান, কারণ তার বিশ্বাস রাজনৈতিক কারণে এসব ঘটছে। তার দাবী, তিনি পদত্যাগ করছেন এই কারণে যে অভিযোগের বিষয়গুলো মাসের পর মাস ধরে বিভ্রান্তি ছড়াবে এবং করদাতাদের লাখ লাখ ডলার খরচ হবে।

কুয়োমো বলছেন, ‘নিজের মেয়েদের ওপর এসব অভিযোগের প্রভাব পড়ছে। আমি তাদের সঙ্গে যখন সোফায় বসে দিনের পর দিন এসব অভিযোগ শুনেছি, তাদের চোখের দিকে যখন তাকিয়েছি, তাদের চেহারা দেখেছি, সেটা আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’

তিনি তাদের বলেছেন, এসব কাজ তিনি কখনোই করেননি এবং ইচ্ছাকৃতভাবে একজন নারীকে কখনোই অসম্মান করেননি।

কুয়োমোর পদত্যাগের ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মন্তব্য করেছেন ‘আমি গভর্নরের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই।’ তবে গভর্নরের দীর্ঘদিনের একজন সমালোচক নিউইয়র্কের সিটি মেয়র বিল ডে বালাসো বলেন, পদত্যাগ করার জন্য তার দেরি হয়ে গেছে। 

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন পাসকি বলেছেন, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই প্রেসিডেন্ট তার পুরনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেননি এবং পদত্যাগের বিষয়েও আগাম কোন নোটিশ দেয়া হয়নি।

এদিকে, কুয়োমোর পদত্যাগের পর তার ছোট ভাই সিএনএনের উপস্থাপক ক্রিস কুয়োমোর পদত্যাগের দাবি উঠেছে। ক্রিস কুয়োমোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।

উল্লেখ্য, এক বছর আগেও যখন নিউইয়র্কের গভর্ণর অ্যান্ড্রু কুয়োমো করোনাভাইরাস নিয়ে প্রতিদিন টেলিভিশনে বিস্তারিত তুলে ধরতেন, তখন আমেরিকার লাখ লাখ মানুষ তার প্রশংসা করতেন।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি