ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪

হংকং বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে কানাডার প্রতি চীনের আহ্বান

আউয়াল চৌধুরী

প্রকাশিত : ২২:০৩, ৫ জুলাই ২০২২ | আপডেট: ২০:০৩, ১৯ জুলাই ২০২২

চীনের কর্তৃত্বে হংকং এর স্বাধীনতা দমন করা হচ্ছে- কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানিয়া জোলির এমন দাবির পর, হংকংয়ের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার জন্য বেইজিং অটোয়াকে অনুরোধ করেছে। হংকংয়ের চীনের শাসনে ফেরার ২৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে, অটোয়াতে চীনা দূতাবাস একটি বিবৃতিতে বলেছে, বহিরাগত শক্তির ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ করা উচিত নয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হংকং সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং কোনও বহিরাগত শক্তি দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করার অবস্থানে নেই। কানাডা এবং হংকংয়ের মধ্যে ‘গভীর সম্পর্ক’ হংকংয়ের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অজুহাত নয়। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা আবারও কানাডাকে আইনের শাসন, ‘চীনের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যকে সম্মান করার হংকং এবং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায়, কানাডিয়ান পক্ষ কেবল নিজের জন্য অসম্মান বয়ে আনবে এবং চীনা পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) জোলি একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন, হংকংয়ের সঙ্গে কানাডার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, আনুমানিক ৩ লাখ কানাডিয়ান সেখানে বসবাসকারী এবং সেখানে ১০০ টিরও বেশি কানাডিয়ান কোম্পানি রয়েছে। ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হংকং-এ কানাডিয়ানরা প্রথম স্থল যুদ্ধে অংশ নেয়। আজ অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি হংকং এর বাসিন্দা কানাডাকে নিজেদের বাড়ি বলে এবং আনুমানিক ৩ লাখ কানাডিয়ান হংকং-এ বসবাস করে। হংকং কানাডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ অংশীদার, সেখানে১০০ টিরও বেশি উল্লেখযোগ্য কানাডিয়ান কোম্পানির উপস্থিতি এটাই প্রমাণ করে। এই প্রত্যক্ষ সম্পর্ক এবং আমরা যে সার্বজনীন মূল্যবোধগুলি ভাগ করি তা আমাদের সমাজকে সমৃদ্ধ করে এবং আমাদের একত্রিত করে।’

কিন্তু জোলি বলেন, ‘গত দুই বছরে হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপের মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা এবং বিকল্প মতামতের শান্তিপূর্ণ প্রকাশকে দমন করা হয়েছে।’ সে সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হংকং এবং চীনা কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে ২৫ বছর আগে স্বেচ্ছায় যে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা গ্রহণ করা হয়েছিল সে অনুযায়ী কাজ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’ মৌলিক আইনের অধীনে প্রদত্ত স্বায়ত্তশাসন এবং আইনের শাসনকে সম্মান করার এবং মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য চীনের প্রতিশ্রুতির কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। জোলি বলেন, ‘স্বাধীনতা হংকংয়ের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য অত্যাবশ্যকীয়, যেমনটি তারা ১৯৯৭ সালে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল। এতে আগামীতে এবং পরবর্তী ২৫ বছর এবং তার পরেও হংকং-এ সমৃদ্ধি বজায় থাকবে।’

১৯৮৪ সালের চীন-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণায় নির্ধারিত শর্ত অনুসারে হংকং-কে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই যুক্তরাজ্য থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন (পিআরসি) এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। যৌথ ঘোষণায় হংকংয়ে মৌলিক অধিকার, উচ্চ মাত্রার স্বায়ত্তশাসন এবং ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ প্রদান করা হয়েছিল।

এদিকে, ইন্টার-পার্লামেন্টারি অ্যালায়েন্স অন চায়না বলছে, ‘২৫ বছর পরে, হংকং আর সেই শহর নেই যা আমরা একবার স্বীকৃতি দিয়েছিলাম।’ ২০২০ সালের ৩০ জুন সেখানে কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়ন করে ভিন্নমতকে শাস্তি প্রদান, বাকস্বাধীনতা হ্রাস এবং শহরের স্বায়ত্তশাসন হ্রাস করা হয়েছে।

আইনটি গৃহীত হওয়ার পর থেকে, কমপক্ষে ১৮৩টি গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, ১১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, ৫০ টিরও বেশি সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোকে ভেঙে দিতে বাধ্য করা হয়েছে এবং একাধিক মিডিয়া আউটলেটগুলো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। (এএনআই)

এসি
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি