ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কেন এই বিরোধ?

প্রকাশিত : ০৯:২২, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ০৯:৫৬, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

কাশ্মীর নিয়ে পরমাণু অস্ত্রধারী দুই দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছেপাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে কথিত জঙ্গী আস্তানায় ভারতীয় বিমান হামলার ঘটনার পর পাকিস্তান এর জবাব দেওয়ার কথাও বলেছে

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, ভারত অপ্রয়োজনীয় আগ্রাসন চালিয়েছে। পাকিস্তান তার সুবিধাজনক সময়ে এর জবাব দেবে।

এদিকে ভারতও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ফলে কাশ্মীর নিয়ে দেশ দু`টির সংকট একটা চরম অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে বলে বিশ্লেষকরা বলছেন।

ভারত-পাকিস্তান আগে ১৯৬৫ এবং ১৯৯৯ সালে দু`বার যুদ্ধে জড়িয়েছিল কাশ্মীর নিয়ে। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন । কারণ দুই দেশের কাছেই পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।

ব্রিটেন থেকে ভারত পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে যখন স্বাধীনতা পায়, তখনই দুই দেশই কাশ্মীরকে পাওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিল। ভারত পাকিস্তান ভাগ করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাশ্মীর দুই দেশ থেকেই মুক্ত ছিল।

তবে তৎকালীন কাশ্মীরের স্থানীয় শাসক বা রাজা হরি সিং ভারতকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি একটি চুক্তির মাধ্যমে কাশ্মীরকে ভারতের সাথে অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন।

ইতিহাসবিদরা বলেন, ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাক্সেশনের মাধ্যমে কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল ঠিকই কিন্তু যে শর্তে তা হয়েছিল, সেই শর্ত থেকে ভারত অনেকটা সরে এসেছে। পাকিস্তানও অনেকটা জোর করে এই ব্যবস্থায় ঢুকেছে এবং সেই থেকে সংকট জটিল থেকে আরও জটিল হচ্ছে।

এই অংশের অনেক মানুষ ভারতের শাসনে থাকতে চায় না। তারা পাকিস্তানের সাথে ইউনিয়ন করে যুক্ত হতে অথবা নিজেরা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে থাকতে চায়।

কারণ ভারত শাসিত জম্মু কাশ্মীরে ৬০ শতাংশের বেশি মুসলিম। ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে এই একটি রাজ্য, যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এছাড়া কাশ্মীরে কর্মসংস্থানের অভাব এবং বৈষ্যমের অনেক অভিযোগ রয়েছে।

কাশ্মীরে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধেও নির্যাতন চালানো অনেক অভিযোগ রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনও দিন দিন সহিংস হয়ে উঠছে। এই সহিংসতায় গত বছরেই সাধারণ নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ৫০০ জনের মতো নিহত হয়েছে।

বছরের পর বছর রক্তক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশই যুদ্ধ বিরতি দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল ২০০৩ সালে। পাকিস্তান পরে ভারত শাসিত কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অর্থ সহায়তা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

২০১৪ সালে ভারতে নতুন সরকার এসেছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু ভারতের সেই সরকারও পাকিস্তানের সাথে শান্তি আলোচনা করার আগ্রহ দেখায়। তখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দিল্লী গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

এর এক বছর পরই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০১৬ সাল থেকে ভারত শাসিত কাশ্মীরে দেশটির সামরিক ঘাঁটিত বেশ কয়েকটি আক্রমণ হয়েছে।

কিন্তু গত ১৪ই ফেব্রূয়ারি যে আত্নঘাতি হামলা হয়েছে, তাতে হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। এই হামলায় ৪০ জনের বেশি ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। এই ঘটনা দুই দেশকে আবারও মুখোমুখি করেছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি