ঢাকা, রবিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫

এনআরসি স্থগিতের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে: সুপ্রিম কোর্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৩৪, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ দিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ওই আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতেই কেন্দ্রকে নোটিশ দিল শীর্ষ আদালত। খবর এনডিটিভির।

আগামী ২২ জানুয়ারি ওই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলার পরবর্তী শুনানি হবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। 

বুধবার ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই আইনের প্রয়োগ স্থগিত রাখার আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেন, আগামী ২২ জানুয়ারি ‘এই আইনটি স্থগিত রাখার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে’। 

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে প্রায় ৬০টি আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। বিতর্কিত এই আইনটির বিরোধিতা করে আরো অনেকের মতো দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ এবং অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপির সহযোগী দল অসম গণ পরিষদ এবং ডিএমকে। 

ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আবেদন গ্রহণ করে। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিআর গাভাই এবং সূর্য কান্ত।

বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আবেদনকারীরা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, ধর্মের ভিত্তিকে কখনোই নাগরিকত্ব প্রদান করা যায় না। 

তাঁরা আরও বলেন যে, নতুন আইনটির মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করে অবৈধ অভিবাসীদের দেশের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী। এই আইন নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার তথা সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন করে। 

কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, এই আইনটি ‘সংবিধানের মূল কাঠামোকে আঘাত করে’।

নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যে সব অমুসলিম ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

গত বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই আইনে স্বাক্ষর করার পরেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। বিশেষ করে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল, বাংলা এবং দিল্লিতে এই আইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়। আসামে সহিংসতায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে দিল্লিতে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোববার প্রতিবাদ মিছিল করার সময় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। পুলিশ ওই পদযাত্রা থামানোর চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে কেউ বা কারা পাথর ছুঁড়ে মারে, পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাস এবং দু'চাকার গাড়িও। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা অনুমতিতে পুলিশ ঢোকে, এমন অভিযোগেও উত্তাল হয় রাজধানী। শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটকেও রাখে দিল্লি পুলিশ, পরে যদিও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আছড়ে পড়ে প্রতিবাদের ঝড়।

মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং দিল্লিতে এই বিক্ষোভ ঘিরে ফের সহিংসতা ছড়ায়। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সিলামপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় শিক্ষার্থীরা একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলেও সামিল হয়।

এদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ৩ জনেই ঘোষণা দিয়েছেন তাদের রাজ্যে নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি প্রয়োগ করতে দেবেন না।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি