ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪

১৫০০ তালেবানকে মুক্তি দিলেন আফগান প্রেসিডেন্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৩, ১১ মার্চ ২০২০

তালেবানদের সাথে শান্তি আলোচনায় পৌঁছাতে সমঝোতার অংশ হিসেবে ১৫০০ তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

প্রেসিডেন্টের এই ডিক্রি অনুযায়ী এসব বন্দীকে ‘যুদ্ধের ময়দানে না ফেরার লিখিত প্রতিশ্রুতি’ দিতে হবে।

এর বিনিময়ে তালেবানরা ১০০০ সরকারি সেনাকে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছে।

তালেবানদের সাথে এর আগে সই করা চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর এই পদক্ষেপ আসলো।

প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সই করা ওই ডিক্রি অনুযায়ী, ১৫০০ বন্দীকে ১৫ দিনের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে, ‘প্রতিদিন ১০০ বন্দী আফগান জেল থেকে বের হবে।’

মুক্তির পাশাপাশি আফগান সরকারের সাথে তালেবানদের আলোচনাও চলতে থাকবে। যদি আলোচনা অগ্রসর হয় তাহলে আফগান সরকার প্রতি দুই সপ্তাহে ৫০০ করে তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেবে। সব মিলিয়ে মোট ৫০০০ হাজার তালেবান মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।

চুক্তি অনুযায়ী, তালেবানদের সহিংসতা কমিয়ে আনা অব্যাহত রাখতে হবে, এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যাতে আল-কায়েদা বা অন্য কোন চরমপন্থী সংগঠন পরিচালিত হতে না পারে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস বাড়ানোর অংশ হিসেবে বন্দী মুক্তি দেয়া হচ্ছে যাতে আফগানিস্তানের দীর্ঘ ১৮ বছরের যুদ্ধ বন্ধ করতে দুই পক্ষ সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে। মঙ্গলবার আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বন্দী মুক্তির দাবির মুখে তা পিছিয়ে যায়।

এএফপির কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তালেবান নেতাদের কাউন্সিলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, তারা যেসব বন্দীদের মুক্তি চায় তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছে গোষ্ঠীটি। কিন্তু তিনি অভিযোগ করেন যে, সরকার সেই বিশ্বাস রাখছে না। 

‘তারা এমন বন্দীদের মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করেছে যারা বয়স্ক, অনেক অসুস্থ বা যাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।’

তালেবানদের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন মঙ্গলবার এক টুইটে বলেন যে, তারা শুধু সেই বন্দীদেরই গ্রহণ করবে যাদের নাম তালিকায় আছে।

আর প্রেসিডেন্টের সই করা ডিক্রি অনুযায়ী, সরকার তালেবান বন্দীদের ‘বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং বাকি থাকা সাজার মেয়াদ’ দেখে মুক্তি দেবে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ঘানি যুক্তরাষ্ট্রের সই করা চুক্তি অনুযায়ী ৫০০০ বন্দীকে মুক্তি দিতে রাজি হননি। কিন্তু বুধবারের ডিক্রি তার সিদ্ধান্তে নমনীয় হওয়ার বার্তা দিচ্ছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদিত এই ঐতিহাসিক চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা ১৩৫ দিনের মধ্যে দেশটিতে থাকা তাদের ১২০০০ সেনা কমিয়ে ৮৬০০তে নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। তালেবানরা চুক্তিটি মেনে চলছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটোভূক্ত মিত্র দেশগুলো ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে তাদের সব সেনা সরিয়ে নেয়ার কথা রয়েছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে হেলমান্দ প্রদেশে আফগান বাহিনীর উপর তালেবানদের হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালালে চুক্তির টিতে থাকার সম্ভাবনা নাজুক হয়ে পড়ে।

এছাড়া দেশটিতে সদ্য শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও উভয় পক্ষের জন্যই শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়াকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

গত বছরের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর দুই জন আলাদা রাজনীতিবিদের শপথ অনুষ্ঠানও আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে যে মিস্টার ঘানি কম ব্যবধানে সেপ্টেম্বরের ভোটে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু আবদুল্লা অভিযোগ তুলেছেন যে ফলাফলে কারচুপি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা হুশিয়ার করেছেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধিতা শান্তি আলোচনার সময় ‘সরকারের অবস্থানকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।’

সূত্র: বিবিসি


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি