ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মামুনের শেষ স্ট্যাটাস…

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৩৪, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৩৯, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

না ফেরার দেশে একুশে টেলিভিশনের প্রধানমন্ত্রী বিটের সিনিয়র রিপোর্টার মামুনুর রশীদ। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার-স্বজন-সহকর্মীরা।

সদা হাস্যেজ্জ্বল মামুনের নিথর দেহ একটু পরেই মাটির নিচে চলে যাবে। স্পটে লাইভে দাঁড়িয়ে মামুন আর বলবেন না, মামুনুর রশীদ, ….।

মামুন মারা যাওয়ার আগে গত ১৫ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এটিই ছিল তার শেষ স্ট্যাটাস। ওই স্ট্যাটাসে ছাত্র রাজনীতি থেকে সাংবাদিকতায় আসা মামুন জাতির জনক হত্যার পরবর্তী প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। স্ট্যাটাসটি নিচে দেওয়া হলো…    

‘‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে যাযাবরের জীবন হয়ে গেছিলো শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার। সে সময় একদিন শেখ হাসিনা ছিলেন বেলজিয়ামের একটি এয়ারপোর্টে। ইমিগ্রেশন অফিসার শেখ হাসিনার পাসপোর্ট দেখে ভ্রূ কুচকে বললো, তুমি কী বাংলাদেশী।

পিতার মৃত্যু শোকে কাতর কন্যা অনেক কষ্টে হ্যা সুচক মাথা নাড়লে ওই অফিসারটি বললো , তোমরা কেমন অকৃতজ্ঞ জাতি যে, মুজিব নিজের জীবন কে তুচ্ছ করে তোমাদের স্বাধীনতা এনে দিলো সেই তাকেই কি-না তোমরা এমন নির্মমভাবে হত্যা করে ইতিহাসে এমন নজীর স্থাপন করলে। 

শেখ হাসিনা আর পারলেন না নিজেকে ধরে রাখতে, শোককে পারলেন না দমিয়ে রাখতে। চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। সেদিন তাকে সান্তনা দেওয়ার ছিল না কেউ পাশে এক অসহায়, সহায় সম্বলহীন নারীর আর্তনাদের নীরব সাক্ষী হয়ে রইলো বেলজিয়ামের সেই এয়ারপোর্ট।

যাযাবরের জীবন হয়ে গেলো বঙ্গবন্ধু কন্যার , এই দেশ থেকে সেই দেশ , এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা পালাতে পালাতে অবশেষে ঠাই হোলো কলকাতার এক টিনের কুঠিরে  যিনি দেশকে স্বাধীনতা এনে দিলেন, ভাষা দিলেন, আইন দিলেন , জাতীয়তা দিলেন সেই তিনি অযত্নে অবহেলায় শুয়ে রইলেন গোপালগঞ্জের এক নিভৃত পল্লীতে, আর তার কন্যা অনাদরে অপমানে নির্বাসিত হয়ে রইলেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এক অন্ধকার কুঠিরে !

তখনকার বাংলাদেশে ঠাই হলো গোলাম আজমের, পুনর্বাসন হলো একে একে সব রাজাকারের। কিন্তু, স্বদেশের মাটিতে অবাঞ্চিত হয়ে রইলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ! শত বাধা পেরিয়ে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে বন্ধুর পথ পেরিয়ে সেদিনের অশ্রুসিক্ত পিতৃহারা কন্যাটিই আজকের অগ্রসরমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতার কন্যার সেই যাযাবর জীবন মনে পড়ে কি তোমাদের! এখন তো অনেকে আপনজনের হত্যার বিচার পেয়ে যান নগদে। একটি দেশের স্বাধীনতার স্থপতি,জাতির পিতার কন্যাদ্বয় পুরো পরিবারের হত্যাকাণ্ডের বিচার পেয়েছিলেন ৩৫ বছর পরে।

অনেকে সামান্য কষ্ট নিয়ে এদেশ ছেড়ে চলে যান অন্যদেশে রাগ অভিমানে। আর পুরে পরিবারের বর্বরতম হত্যাকান্ডের পরও এদেশে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। এদেশের মানুষের জন্যই।

দেশে আবারও জয় বাংলার সুবাস ছড়াতে লাগলেন, শত বাঁধা মোকাবেলা করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দেশকে এখনো।’’

(একুশে টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মামুনুর রশীদের ফেসবুক থেকে নেওয়া)

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি