ঢাকা, রবিবার   ০৬ জুলাই ২০২৫

টাচেলের নতুন লক্ষ্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫৪, ৩১ মে ২০২১

Ekushey Television Ltd.

দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পেপ গার্দিওলার অধীনে নিবিড় প্রস্তুতি নেবার পরও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যানচেস্টার সিটি ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে শিরোপা জয়ের মাধ্যমে চেলসি শনিবার পোর্তোর ফাইনালে দেখিয়ে দিয়েছে মাত্র চার মাসে কি অর্জন করা যায়।

ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড এর পরিবর্তিত হিসেবে থমাস টাচেল চেলসির দায়িত্ব পালনের সময় কত দিনইবা হলো। কিন্তু জার্মান কোচ ক্লাবটির ভাগ্যই বদলে দিয়েছেন অতি দ্রুত। দলটিকে তুলে এনেছেন লিগের চতুর্থ অবস্থানে। সেই সঙ্গে চেলসিকে পৌঁছে দিয়েছেন এফ কাপেরও ফাইনালে। যেখানে লিস্টার সিটির কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি। আর এখনতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাই ঘরে তুলে নিয়েছে ব্লুজরা।

জার্মান ফরোয়ার্ড কেই হাভার্টজ এর একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে পরাজিত করে চেলসি। এই নিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে গার্দিওলার সিটিকে তৃতীয়বারের মত পরাজিত করল টাচেলের শিষ্যরা।

এখন নতুন চুক্তিতে বেশ মোটাতাজা পুরস্কার পাবার লক্ষ্য স্থির করেছেন টাচেল। যদিও স্টামফোর্ড ব্রিজকে বেস্টন করে থাকা চক্রটি পশ্চিম লন্ডনের এই ক্লাবে শিকড় গাড়ার সুযোগ তাকে দিবে কিনা সেটিও এখন দেখার বিষয়।

মৌসুমের মধ্যভাগে কোচ বরখাস্ত করার বিষয়টি চেলসির জন্য বেশ ভাল কাজ করছে। ২০১২ সালেও এমন এক সিদ্ধান্তে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা লাভ করেছিল চেলসি। ওই সময় আন্দ্রে ভিলাস বোয়াসকে বরখাস্ত করে রবার্তো ডি মাত্তেওকে নিয়োগ দিয়েছিল ক্লাবটি। এবার তো টাচেলকে নিয়ে স্বর্নালী সময় পার করছে চেলসি।

তবে ৪৭ বছর বয়সি এই কোচ ক্লাবটিতে যোগ দেয়ার আগে মোটা অংকের অর্থ ব্যায়ে চেলসির দলটি গঠন করা না হলে হয়তো তার এই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হতো না। কারণ পুর্বসুরি ল্যাম্পার্ডের অধীনে বেশ কিছু মেধাবী তরুণকে দলভুক্ত করেছে ক্লাবটি।

আরো উন্নতির সুযোগ আছে-
মৌসুমের শুরুতেই এস্তাদিও ডি ড্রাগাও যে সব খেলোয়াড়কে চুক্তিবদ্ধ করিয়েছিল তাদের ৫ জনই এখন নিয়মিত একাদশের হয়ে খেলছেন। এদের মধ্যে ম্যাচ জয়ের নায়ক হাভার্টজও আছেন। বায়ার লেভারকুজেন থেকে ৭১ মিলিয়ন ইউরোতে তাকে চুক্তিবদ্ধ করিয়েছিল চেলসি। যুব একাডেমি থেকে চুক্তিবদ্ধ করা রিস জেমস ও ম্যাসন মাউন্টও রয়েেেছ এই তালিকায়। যারা ইংল্যান্ডের ২০২০ ইউরো স্কোয়াডেও সুযোগ পেয়েছেন। এই দলটি এখনই ইউরোপীয় শিরোপা জয় করলেও তারা একত্রে সবে মাত্র শুরু করেছে নিজেদের অভিযান।

টাচেল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শক্তি বন্ধন গড়ে উঠেছে। একটি শক্তিশালী গ্রুপ, যাদের উপর সত্যিই আস্থা রাখা যায়। এটিই হচ্ছে বড় হওয়ার, বিকশিত হওয়ার এবং এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে উন্নত হবার সময়।

চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ১৯ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে মৌসুম শেষ করা দলটির প্রিমিয়ার লিগে উন্নতি করার প্রচুর জায়গা এখনো রয়ে গেছে এবং এখনই ঘরোয়া চ্যালেঞ্জ নেয়ার আসল সময় বলে মনে করেন জার্মান এই কোচ।

অধিনায়ক সিজার আজপিলিকুয়েটা বলেন, ‘যখন আপনি চেলসির মত ক্লাবে খেলবেন তখন আপনি অবশ্যই ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাববেন।’

টাচেল অবশ্য জানেন আগেও সক্ষিপ্ত পরিচর্জা থেকে সফলতা পেয়েছে এই ক্লাবটি। ২০১২ সালের শিরোপা জয়ের সময়ও ছয় মাসের মত সময় নিয়েছিলেন ডি মাত্তেও। এদিকে গত ডিসেম্বরে টাচেলও বরখাস্তের শিকার হয়েছেন প্যারিস সেন্ট জার্মেই থেকে (পিএসজি)। অথচ দলটিকে গত মৌসুমে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি।

টাচেল বলেন, ‘আমরা যখন ডর্টমুন্ডে কাপ জিতলাম তখন আমি ক্ষুধা, কম ইচ্ছা বা উচ্চাকাংখা নিয়ে পরবর্তী প্রশিক্ষণে পৌঁছিনি। এখন অবশ্যই কয়েকটি দিন এই উদযাপন করতে হবে। উপভোগ করতে হবে। এক বা দুই সপ্তাহের জন্য হয়তো এটিতে ডুবে থাকতে হবে। তবে বিষ্ময়কর ভাবে এটি আপনার কাছে যথেষ্ট নয়। আমি মনে করি এটি ভাল। কারণ কেউ বিশ্রাম নিতে চায় না। তবে আমি চাই পরের শিরোপাটিও। এরও অংশ হতে চাই আমি। এটিই আমার পরবর্তী লক্ষ্য।’

প্রাথমিকভাবে চেলসির সঙ্গে ১৮ মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন টাচেল। কিন্তু স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনিযা অর্জন করেছেন তাতে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর অধিকার লাভ করেছেন তিনি। টাচেল বলেন, ‘আমি এখনো শতভাগ নিশ্চিত নই। মনে হচ্ছে এই জয়ের মাধ্যমে আমি চুক্তি নবায়ন পাবার অধিকার অর্জন করেছি। আমার ম্যানেজার সেই রকমই কিছু একটা বলতে চেয়েছেন। তবে আমি পুরোপুরি জানিনা। দেখা যাক কি হয়। আমার লক্ষ্য আরো জয় পাওয়া। একজন কোচ হিসেবে নিজেকে আরো প্রসারিত করা। আর দলটিকেই পরের মৌসুমের জন্য প্রথম দিন থেকেই অনুপ্রানীত করে তোলা।’

আগামী ১৪ আগস্ট থেকে শুরু হবে প্রিমিয়ার লিগের পরবর্তী মৌসুম। তবে তিন দিন আগেই ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামতে হবে চেলসির। যাতে উয়েফা সুপার কাপের ট্রফিটিও যুক্ত করা যায় চেলসির সংগ্রহশালায়।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি