ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫

ফিরবেন কি আশরাফুল!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:১৭, ৩ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১২:২৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

কেউ বলতেন আশার ফুল, কেউবা ওয়ান্ডারফুল। সব মিলিয়ে তিনি মোহাম্মদ আশরাফুল। এদেশের ক্রিকেট পাগল বেশিরভাগ মানুষেরেই প্রথম ভালোবাসার নাম আশরাফুল। এদেশের মানুষকে ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট করতে আশরাফুলের রয়েছে বড় অবদান। বাংলাদেশের ক্রিকেটে আশার ফুল হয়ে ফুটেছিলেন তিনি। তিনি এমনই এক ফুল, যা কিনা ঝরে গেলো পুরোপুরি না ফুটেই।

ক্রিকেটে বিস্ময়কর আবির্ভাব হয়েছিল লিটল মাস্টার খ্যাত মোহাম্মদ আশরাফুলের। টেস্টে অভিষেকেই সেঞ্চুরি হাকিয়ে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হয়েছিলেন এই ডানহাতি। অমিত প্রতিভার ব্যাটিং দিয়ে বাংলাদেশের অনেক স্মরণীয় জয়ের নায়ক হয়েছেন। চিরস্থায়ী আসন পেয়েছেন ভক্তদের মনেও।

২০০১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। এদিনই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামেন অ্যাশ। শ্রীলঙ্কার সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অভিষেকেই সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হয়ে সারা বিশ্বে তার আগমণী বার্তা জানান দেন। মুরালিধরন-চামিন্দা ভাসদের শাসন করে ১৭ বছর বয়সেই তুলে নেন শতক। সে টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারলেও মুরালিধরনের সাথে ম্যাচসেরা হন আশরাফুল।

বাংলাদেশ ক্রিকেটর অনেক ‘প্রথম’-এর সাথে জড়িয়ে আছে আশরাফুলের নাম। সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারালেও বাংলাদেশ প্রথম অস্ট্রলিয়াকে বধ করেছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের হাত ধরেই। ২০০৫ সালে কার্ডিফে আশরাফুলের এক অসাধারণ সেঞ্চুরিতে ওয়ানডেতে ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নদের হারায় বাংলাদেশ। সেদিন রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, গ্ল্যান ম্যাগরাদের হতাশায় ডুবিয়েছিল আশরাফুলের ব্যাট।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম জয়ের নায়কও আশরাফুল। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে সুপার এইটের ম্যাচে তার ৮৭ রানের কল্যাণে প্রোটিয়াদের হারিয়েছিল টাইগাররা। ৯৬-এর চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে প্রথম জয়টি আসে ২০০৬ সালে। সে ম্যাচেও সর্বোচ্চ ৫১ রান এসেছিল আশরাফুলের ব্যাট থেকে। টাইগাররা নিউজিল্যান্ডকে প্রথম হারায় ২০০৮ সালে। সে ম্যাচেও আশরাফুল অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে। টি-টোয়েন্টিতে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ক্যারিবীয়দের করা ১৬৪ রানের জবাবে আশরাফুলের ২৭ বলে ৬১ রানের ইনিংসের কল্যাণে ২ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা।

এছাড়া টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে ১৫৮, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৯০, ইংল্যান্ডের সাথে ওয়ানডেতে ৫২ বলে ৯৪ রানের মতো আরো বিষ্ফোরক ইনিংস আছে লিটল মাস্টার আশরাফুলের যা বলে শেষ করা যাবেনা।

টেস্টে ৬টি সেঞ্চুরির মালিক অ্যাশ। ওয়ানডেতেও রয়েছে ৩ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) তিন অংক ছুঁয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক এ অধিনায়ক।

আগামীকাল (৪ নভেম্বর) থেকে আবারো শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের ঘরোয়া লীগের সবচেয়ে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রাসহ ক্রিকেট বিশ্বের বাঘাবাঘা অনেক খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করবেন এ টুর্নামেন্টে। কিন্তু বেচারা আশরাফুল থাকবেন দর্শক হয়ে। যতটা সাড়া জাগিয়ে ক্রিকেটে এসেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, সেই শুরুর সঙ্গে শেষের অনেক মিল। শেষের দিকে সমালোচিত হয়েছিলেন নেতিবাচক কারণে। বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান। ২০১৩ বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ম্যাচ পাতানোয় জড়িত থাকায় আশরাফুলকে তিন বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ আট বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করেন বিসিবির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। আপিলের পর যেটি কমে নেমে আসে পাঁচ বছরে, যার দুই বছর ছিল স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। বর্তমানে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও বিপিএল ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনো ফেরা হয়নি অ্যাশের। আশরাফুলের ভক্তদের অপেক্ষার প্রহর তাই শেষ হচ্ছেনা। আগামী বিপিএলে অ্যাশ ফিরবেন কিনা সে বিষয়েও রয়েছে সন্দেহ। বয়স তো আর থেমে নেই। ইতোমধ্যে ৩৩ বছর হয়ে গেছে বাংলাদেশের লিটল মাস্টারের। তবে আশরাফুল ভক্তদের বিশ্বাস যে, আবারো মূলধারার ক্রিকেটে ফিরবে আশরাফুল।

 

সূত্র : ক্রিকইনফো

এমআর/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি