ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪

‘ম্যাজিক্যাল চাকমা’ কিশোরী মনিকা

প্রকাশিত : ১৪:৪৯, ২২ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৩৩, ২২ মে ২০১৯

বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি। সে জেলার লক্ষ্মীছড়িতে জন্ম এক তুখোড় কিশোরী নারী ফুটবলারের। শুধু তুখোড় নয়, সে এক  ‘ম্যাজিক্যাল চাকমা’।

গল্পটা তাহলে বলাই যাক-

বিশ্বের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফা প্রতি সপ্তাহে ফুটবলভক্তদের পছন্দে সপ্তাহের সেরা কোনো এক ফুটবল মুহূর্তের ছবি, ভিডিও কনটেন্ট বা ফুটবলসংক্রান্ত কোনো এক অনন্য মুহূর্ত চেয়ে থাকে। বিশ্বের ফুটবলভক্তরা হ্যাশট্যাগ, # WeLiveFootball -এর মাধ্যমে ফিফার কাছে পৌঁছে দেয় তাদের পছন্দের কনটেন্টটি। তার মধ্যে যেকোনো পাঁচটি সেরা মুহূর্ত বাছাই করে প্রকাশ করে ফিফা। এই পছন্দের তালিকায় বাংলাদেশ কোনোকালেই জায়গা করে নিতে পারেনি। তবে এ বছর প্রথমবারের মতো ফিফার এই ‘ফ্যানস ফেভারিট’ কনটেন্টে স্থান পায় বাংলাদেশ। আর তা সম্ভব হয়েছে খাগড়াছড়ির কিশোরী, বাংলাদেশি নারী ফুটবলার মনিকা চাকমার বদৌলতে।

মনিকা বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছে। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে তিন গোলে জেতা এই ম্যাচে অসাধারণ একটি গোল করে চমক দেখায় মনিকা চাকমা। আর এই গোলের কল্যাণেই সে জায়গা করে নেয় ফিফার ‘ফেভারিট ফাইভ’-এ।

‘ফ্যানস ফেভারিট’ তালিকায় প্রকাশিত মনিকার গোলটিকে ফিফা নাম দেয়, ‘ম্যাজিক্যাল চাকমা’ নামে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোলে বেড়ে ওঠা ছোট্ট মনিকার বাবা বিন্দু কুমার চাকমা পেশায় কৃষক। তার মা রানী বালা চাকমা একজন গৃহিণী। এই কৃষক পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য মনিকা। পাঁচ বোনের মধ্যে মনিকার আরেক বোন অনিকা চাকমা। সেও ফুটবল বেশ পছন্দ করতো। কিন্তু অনিকা বেশিদূর না খেললেও খেলা ছাড়েনি মনিকা। মাঠ আর বলের সঙ্গে বন্ধুত্ব তার। শৈশবে কাকাতো ভাই কিরণ চাকমা ও সৃজন চাকমার সঙ্গে মাঠে ফুটবল খেলতে নামত। সেই থেকেই ফুটবল খেলায় হাতেখড়ি। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে খেলেছে, পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে খেলেছে, খেলেছে স্কুলেও। কখনো ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে খেলেছে, কখনো খেলা হয়েছে ছেলে-মেয়ে আলাদা দলে।

স্কুলের মাঠে মনিকার খেলার চমক টের পান ফুটবল কোচ বীর সেন স্যার। তিনি বুঝতে পারেন এই কিশোরীর মধ্যে কিছু একটা ব্যাপার আছে। মনিকার বাবা মেয়ের ফুটবল নিয়ে মেতে থাকা পছন্দ করতেন না। কিন্তু পাশে ছিলেন স্যার বীর সেন। তিনিই মনিকাকে প্রস্তুত করলেন বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য। প্রথম বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় টুর্নামেন্টে ফুটবল খেলেছে খাগড়াছড়ির মরাচেংগী স্কুলের হয়ে। পরে খেলেছে রাঙামাটি ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জার্সি গায়ে।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের কথা মনিকার মনে থাকবে সব সময়। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের ৩-০ গোলে ভারতকে হারায় লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

খুদে এই ফুটবলারের ইচ্ছা দেশের জন্য আরো বড় জয় ছিনিয়ে আনার। বাংলাদেশের নারী ফুটবলকে কী করে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবে, সে চিন্তাই এখন তার।

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি