ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চার বছরে কোথায় বদলেছে ওয়ানডে ক্রিকেট?

প্রকাশিত : ১৫:৩৯, ২৮ মে ২০১৯

রাণীর দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০১৯ বিশ্বকাপ হবে উপভোগ্য এক আসর। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বাদশ আসরে অংশ নিচ্ছে দশটি দল। কোন দলের কতদূর যাওয়ার সম্ভাবনা, সেই আলোচনাও চলছে।

যাইহোক, বিশ্বকাপের গত আসরের পর থেকে ক্রিকেট অনেক বদলে গেছে! এ সময় ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন যেটি এসেছে, সেটি খুবই দুর্দান্ত। খেলাটিতে এখন ৩০০ রান মোটেও নিরাপদ কিছু নয়। অথচ একটা সময় ছিল, যখন কোনও দল আগে ব্যাটিং করে সংগ্রহটা ৩০০ বা তার ওপারে নিয়ে যেতে পারলেই জয়ের ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যেত।

চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, গত চার বছরে একদিনের ক্রিকেটে দলগুলোর পারফর্মেন্স কেমন ছিল-

গত চার বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটের যে বদল, তাতে মাশরাফিদের কিন্তু যথেষ্ট ভূমিকা আছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে ১৫ রানে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। আর সে হারটাই যে আমূল বদলে দিয়েছে ওয়ানডের ইংল্যান্ডকে। ফলে প্রথাগত ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে তারা বেছে নেয় আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের পথ। ইংল্যান্ডের সেই পরিবর্তনেই বড় বদলটা এসেছে ওয়ানডেতে। ইংল্যান্ডের খেলা মানেই এখন সাড়ে ৩০০। এটিকে এমনই অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে যে কোনও লক্ষ্যকেই তাড়া করা অসম্ভব বলে ভাবে না তারা।

বিশ্বকাপে গত আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের যে জয়যাত্রার শুরু হয়েছিল, সেটির ধারাবাহিকতায় মাশরাফি–সাকিবরা এখন অনেক বড় কিছুরই স্বপ্ন দেখে। এরপর ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠাটা বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটা বড় ঘটনা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফের সেই ম্যাচটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের বদলে যাওয়ার বড় উদাহরণ। বিশ্বকাপের গত আসরের পর তিনটি ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা সে বিশ্বাস থেকেই।

তবে কুমার সাঙ্গাকারা এবং মাহেলা জয়াবর্ধন ক্রিকেটকে বিদায় জানাতেই শ্রীলঙ্কা যেন পথ হারিয়ে ফেলল। দলে একজন ক্রিকেটারও খুঁজে পাওয়া গেল না, যারা সাঙ্গাকারা ও জয়াবর্ধনের মানের না হলেও মোটামুটি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। ফলে গত বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া শ্রীলঙ্কা এরপর ক্রিকেটের সাফল্যের বলয় থেকে মোটামুটি হারিয়েই গেছে। একসময়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলটি এখন র‌্যাংঙ্কিংয়ের নিচের দিকে ধুঁকছে।

যাইহোক, ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ১৪ মে পর্যন্ত ইংল্যান্ড ৮৬ ম্যাচ খেলে ৫৬টি জিতেছে, হেরেছে ২৩টিতে৷ এই সময়ে খেলা ১৯টি সিরিজ/টুর্নামেন্টের ১৪টি জিতেছে ইংল্যান্ড৷ শুধু তাই নয়, গত চার বছরে ওয়ানডেতে ৪০০-র বেশি রান হয়েছে পাঁচবার৷ এর মধ্যে চারটিই ইংলিশদের৷ এই সময় একদিনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দুটি রানের সংগ্রহও (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৮১, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪৪৪ রান) করেছে ইংল্যান্ড৷

২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৪৯৬টি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, এগুলোর মধ্যে আগে ব্যাটিং করা দল ৩০০ রান তুলেছে ১৩৩ ম্যাচে। এই ১৩৩ ম্যাচের মধ্যে ১০২ ম্যাচে আগে ব্যাটিং করা দল ৩০০ রান তুলে জিতেছে।

আর গত বিশ্বকাপের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫৮টি ওয়ানডে হয়েছে ইংল্যান্ডের মাঠে। এর মধ্যে ১০ ম্যাচে পরে ব্যাটিং করা দল ৩০০ কিংবা তার বেশি রান তাড়া করে জিতেছে। এসব পরিসংখ্যানই বলে দেয়, গত চার বছরে ক্রিকেট কতটা বদলে গেছে।

২০১৫ বিশ্বকাপের পর আরও একটি জায়গায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে, গুরুত্ব বেড়েছে লেগ স্পিনারদের। প্রায় প্রতিটি দলই তাদের একাদশে অন্তত একজন লেগ স্পিনারকে রাখতে চাচ্ছে।           


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি