বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে কেন হতাশা?

আকাশে ছিল ঝলমলে রোদ। কিন্তু ঘাসে ভরা উইকেট আর বাতাসে মুভমেন্ট থাকায় শুরুতে পেসারদের জন্যই সুবিধা ছিল বেশি। টস জিতে প্রত্যাশিত ফিল্ডিংও পেল বাংলাদেশ।

শুরুর পাঁচ ওভার হলো দারুণ। এরপরই ছুটে গেল বাঁধন। আলগা হয়ে গেল সব। আরেকজন পেসার না থাকা প্রকট হলো ক্ষণে ক্ষণে।

প্রথম আধঘণ্টা ঝাপটা সামলে ভয়ংকর হয়ে উঠল ইংলিশ ব্যাটিং। তা থেকে নিজেদের বাঁচানোর মতো বারুদ দেখা গেল না বাংলাদেশের।

ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন টাইগার বোলাররা। মাশরাফি, মোস্তাফিজ-সাকিব-মিরাজের মতো অভিজ্ঞ বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করে ৩৮৬ রানের পাহাড় গড়ে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে রানের রেকর্ড গড়ে ইংলিশ ক্রিকেটাররা।

বিশ্বকাপের স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শনিবার কার্ডিফে বাংলাদেশের কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসেনি। তাদের বিপক্ষে রানের পাহাড় ঠেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরির (১২১) পরও ১০৬ রানে হেরে যায় টাইগাররা।

এ পরাজয়ের কারণ হিসেবে অনেকেই উল্লেখ করছেন বাজে বোলিং। এদিন কোনো বোলারই সুবিধা করতে পারেনি। আগের দুই ম্যাচে মিরাজ-মোসাদ্দেকরা ভালো বোলিং করলেও এই ম্যাচে ছিল তারা অকার্যকর।

এ ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাইফউদ্দিন দুইটি করে উইকেট নিলেও আর কোনো বোলার সুবিধা করতে পারেনি।

খেলা শেষে বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি করা সাকিব বোলিংয়ের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ম্যাচের রেজাল্ট নিয়ে আমরা হতাশ, যেভাবে বল করেছি সেটা নিয়েও আমি হতাশ। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বল হাতে আমরা ভালো করেছিলাম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও ভালো করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু হয়নি।

দলের পরাজয় নিয়ে সাকিব আরও বলেন, পরাজয়ে কিছু নেতিবাচক দিকও আমাদের ছিল। আসলে কারণ দেখানো যেতেই পারে। চেষ্টা করতে হবে পরের ম্যাচে মাঠের যে অবস্থাই থাক যে কন্ডিশনই থাক আমরা যেন মানিয়ে নিতে পারি।

ইংল্যান্ডের বিধ্বংসী ব্যাটিং নিয়ে সাকিব বলেন, বিশ্বকাপের আগ থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে ইংল্যান্ড। আমরা জানতাম ওদের সঙ্গে আমাদের জন্য ম্যাচটি কঠিন হবে। আমাদের দ্রুত উইকেট তুলে নিতে হত। পারিনি, এ কারণেই ম্যাচ হেরেছি।

টস জয়ের পর ফিল্ডিং করা নিয়ে কঠোর সমালোচনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাকিব বলেন, এটা আসলে কারো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়। দলীয় সিদ্ধান্ত। দলের ভালো জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে কখনো এটি কাজে আসে, কখনো আসে না।

এবারের বিশ্বকাপে প্রতিটি দল সেমিফাইনালের আগে নয়টি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। সেই হিসেবে ইতিমধ্যে তিন ম্যাচ খেলে দুটিতে হেরেছে টাইগাররা, সামনে আছে ছয়টি ম্যাচ। পরবর্তী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা।

এ ব্যাপারে সাকিব বলেন, সেমিফাইনালে যেতে হলে আমাদের ৫ থেকে ৬টা ম্যাচ জিততে হবে। প্রত্যেক প্রতিপক্ষই অনেক শক্তিশালী। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জিততে চাইলে সেরা ক্রিকেটই খেলতে হবে।