ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

আমেরিকায় তিন মাসে চাকরি যেতে পারে অনেক ভারতীয়ের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১২:০১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আগামী তিন মাসের মধ্যেই আমেরিকায় চাকরির অধিকার হারাতে পারেন এইচ১বি ভিসাধারীদের স্বামী বা স্ত্রীরা। একটি মার্কিন আদালতে গতকাল শনিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এইচ৪ ভিসা যাদের রয়েছে, তাদের ‘ওয়ার্ক পারমিট’ বা আমেরিকায় চাকরি করা বন্ধ করতে মাস তিনেকের মধ্যেই আইন তৈরি হবে। তা জমা পড়বে হোয়াইট হাউসের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অব বাজেট (ওএমবি)-এ।

এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বড়সড় বিপাকে পড়বেন আমেরিকায় কর্মরত ভারতীয়রা। কারণ পরিসংখ্যান বলছে, এইচ১বি ভিসাধারীদের ৯০ শতাংশই ভারতীয় এবং এদের একটা বড় অংশই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী, যারা কর্মসূত্রে সপরিবার আমেরিকায় গিয়েছেন। এইচ১বি ভিসাধারীদের জীবনসঙ্গী এবং ২১ বছরের কমবয়সি সন্তানদের এইচ৪ ভিসা দেয় আমেরিকা। এই এইচ৪ ভিসাধারীদেরও ওয়ার্ক পারমিট দিয়েছিল বারাক ওবামা প্রশাসন। এর ফলে মার্কিন শহরে বাড়ি নেওয়ার চড়া খরচের ধাক্কা সামলাতে স্বামী-স্ত্রীর দু’জনের রোজগার কিছুটা সুরাহা দিয়েছিল অনেককেই। কিন্তু ট্রাম্প গোড়া থেকেই বলে এসেছেন, মার্কিনদের চাকরিকেই অগ্রাধিকার দেবেন তিনি। তাই এইচ১বি এবং এইচ৪ ভিসা নীতি আগাগোড়া পর্যালোচনা করবে তার সরকার।

‘সেভ জবস ইউএসএ’ নামে মার্কিন কর্মীদের একটি সংস্থাও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল মার্কিনদের চাকরি সুরক্ষিত রাখার দাবিতে। আদালতে গিয়েছিল তারা। কলম্বিয়ার ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে গতকাল নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মার্কিন সরকারের হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি বিভাগ বলেছে, মামলাটি এবার স্থগিত রাখা হোক। সরকারের কথায়, ‘এইচ১বি অভিবাসীদের স্বামী বা স্ত্রী, যারা এইচ৪ ভিসা নিয়ে রয়েছেন, তাদের কাজের অধিকার নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে আমরা দৃঢ়ভাবে ও দ্রুত এগোচ্ছি।’

ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রের বক্তব্য, বিষয়টি নতুন কিছু নয়। বহু দিন ধরেই আমেরিকা এইচ৪ ভিসাধারীদের চাকরি বন্ধের হুমকি দিচ্ছিল। আর ভারত সরকারও তা রুখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ভবিষ্যতেও সেই চেষ্টা চলবে। এক কর্মকর্তার কথায়, ‘যে ভারতীয়দের নিয়ে অসন্তোষ, মার্কিন অর্থনীতিতে তাদেরই একটা বড় অংশের যথেষ্ট অবদান আছে। ভারত-মার্কিন কৌশলগত সহযোগিতাও রয়েছে নানা ক্ষেত্রে। ফলে মার্কিন সরকার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে বলেই আশা রাখছি। ইতিমধ্যে দিল্লিও মার্কিন কংগ্রেস থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সমস্ত শিবিরের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে।’

ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে আসা সিংহভাগ আইটি প্রকল্পই আমেরিকার। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমের পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা নিরুপম চৌধুরী বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে আমরা লাগাতার আলোচনা চালাচ্ছি। সমস্যাটা রয়েছে। এইচ১বি ভিসাধারীদের স্বামী বা স্ত্রীরা যথেষ্ট শিক্ষিত। নিজেদের যোগ্যতাতেই তারা চাকরি পেতে পারেন। অর্থনীতিতেও তাদের ভূমিকা রয়েছে।’ তবে তথ্যপ্রযুক্তি মহলের মতে, আলোচনা যতই হোক, গভীরতর হচ্ছে সমস্যা। তাই ক্রমশ এইচ১বি নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু দক্ষ মার্কিন কর্মী পাওয়াটাও সমস্যার। যে কারণে কোনও কোনও ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে স্থানীয় কর্মী তৈরি করতে আমেরিকায় স্কুল-কলেজের মতো প্রকল্পে নামতে হয়েছে। টিসিএস, কগনিজেন্টের মতো সংস্থাগুলি অবশ্য এ দিন মুখ খুলতে চায়নি।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি