ঢাকা, রবিবার   ১৩ জুলাই ২০২৫

চিনিকল চালু হতে না হতেই বন্ধ: আখ নিয়ে বিপাকে কৃষক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২২:২২, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ২২:২৫, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই কার্যক্রম চালু না হতেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিনিকলের মাড়াই কার্যক্রম। যদিও এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে কেটে ফেলা আখ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সেতাবগঞ্জ, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের আখ চাষীরা। কেটে ফেলা আখ রোদে ফেলে রাখায় শুকিয়ে ওজন কমে যাচ্ছে। এর ফলে চাষীরা লোকসানের আশংকা করছেন।

ঠাকুরগাঁও চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানান, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও সেতাবগঞ্জ চিনিকল এলাকার ৫০ হাজার টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত শুক্রবার চলতি আখ মাড়াই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরদিন ভোর থেকে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এরপর থেকে দু-এক ঘণ্টা করে চিনিকল চললেও বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকছিল। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বর্তমানে মিলটি আর চলছেই না। ফলে মিলে আখ মাড়াই কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রয়েছে। 

মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও চিনিকল ঘুরে দেখা যায়, মাড়াইয়ের জন্য নিয়ে আসা আখ নিয়ে গাড়িগুলো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মাড়াইয়ের জন্য আখ নিচ্ছে না চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ফলে বসে বসে লোকসানের প্রহর গুনছেন অনেক আখচাষীগণ। আবার অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে চিনিকল সংলগ্নমাঠে আগের গাড়ি থেকে আখ ফেলে দিয়ে বাড়ি চলে গেছে। ফলে আখগুলো শুকিয়ে ওজন কমে যাচ্ছে।

জেলার নারগুন এলাকার আখচাষী জলিল উদ্দিন বলেন, আমি এবার ৮ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। এ বছর আখ দেওয়ার অনুমতিও আছে আমার কাছে। চিনিকলে দুই গাড়ি আখ নিয়ে এসেছিলাম মাড়াইয়ের জন্য। এসে দেখি আখ নিচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বলছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আখ মাড়াই বন্ধ আছে।

এ চাষীর অভিযোগ, যান্ত্রিক ত্রুটি হতে পারে। যদি আগে থেকে মিল কর্তৃপক্ষ মাইকিং করতো তাহলে আমাদের আখ নিয়ে এত কান্নাকাটি করতে হতো না। আমরা ক্ষেত থেকে আখ কেটে ফেলতাম না।

আরেক আখচাষী সামসুল বলেন, আমি ২০ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। এত পরিমাণ আখ চাষ করে আমি এখন বিপাকে পড়েছি। এভাবে লোকসানের প্রহর গুনতে গুনতে একদিন দেখা যাবে কোনো কৃষকেই আর আখ চাষ করছে না। 

এ দিকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আজ অবধি চিনিকলটির তেমন যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন হয়নি। মিল কর্তৃপক্ষ চাষিদের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করার কথা বললেও যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের দিকে তেমন কোন জোরালো ভূমিকা নেই। ফলে কৃষকরা এর কুফল ভোগ করছে। মাড়াই করতে না পারায় আখ শুকিয়ে যাচ্ছে। লোকসানের মুখে চাষীরা। এমন চলতে থাকলে এ মিলটিও একেবারে বন্ধ হবে।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চিনিকলে যে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। দ্রুত এর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সমস্যাটি কৃষকদের জানাতে মাইকিং করা হচ্ছে।
কেআই//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি