জনশক্তি রপ্তানি খাত আজ মহাসংকটে : শ্রমবাজার রক্ষা আন্দোলন
প্রকাশিত : ২০:৫৯, ৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাত জনশক্তি রপ্তানি খাত বর্তমানে মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খাতটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এখনই ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ না নিলে আগামী দিনে দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ খাতের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে।
“শ্রমবাজার রক্ষা আন্দোলন”-এর নেতৃবৃন্দ সোমবার (৩ নভেম্বর) এক মতবিনিময় সভায় জানান, গত এক বছরে বিশেষ করে ১৪ জুলাই ২০২৫ সালের প্রজ্ঞাপনসহ ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩’-এর একাধিক ধারা ও বিধিতে এমন কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রমের পথে একের পর এক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
তাঁরা অভিযোগ করেন, এসব পরিবর্তনের পেছনে কিছু অসাধু এনজিও ও স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র রয়েছে, যারা কিছু প্রভাবশালী প্রশাসনিক কর্মকর্তার সহায়তায় জনশক্তি রপ্তানি খাতকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান বাস্তবতা
১️. লাইসেন্স নবায়নে অযৌক্তিক জটিলতা
২️. বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যুতে অপ্রয়োজনীয় বাধা
৩️. অভিযোগ বাণিজ্যের নামে হয়রানি
৪️. রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা
আন্দোলনের যৌক্তিক দাবিসমূহ
১️. রিক্রুটিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়ায় অভিযোগ নিষ্পত্তি বা কর্মী প্রেরণের শর্ত বাতিল করতে হবে।
২️. সৌদি আরবগামী কর্মীদের জন্য ১–২৪ পর্যন্ত একক বহির্গমন ছাড়পত্র পূর্বের নিয়মে প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে।
৩️. লাইসেন্স জামানতের লভ্যাংশ পূর্বের নিয়মে বহাল রাখতে হবে এবং পে-অর্ডার জামানত ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।
৪️. অভিযোগ প্রক্রিয়া শুধুমাত্র কর্মীর নিকটাত্মীয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি কেবল ঢাকায় করতে হবে।
৫️. সব দূতাবাসে সকল রিক্রুটিং এজেন্সিকে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৬️. কোনও দেশেই একক এজেন্সি (যেমন BOESL)-এর মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ বাধ্যতামূলক করা যাবে না।
৭️. সাম্প্রতিক বাতিলকৃত ৪৫টি রিক্রুটিং লাইসেন্স বিনা শর্তে বহাল করতে হবে।
৮️. মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের সকল শ্রমবাজার বায়রা’র সকল সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
সম্মিলিত আহ্বান জানিয়ে সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমাদের দাবি কোনো প্রতিবাদ নয়, এটি টিকে থাকার আর্তনাদ। এই খাতই দেশের অর্থনীতির প্রাণ—এখান থেকেই আসে বৈদেশিক মুদ্রার সিংহভাগ। তাই এখন সময় মতের পার্থক্য ভুলে এক মঞ্চে দাঁড়ানোর।”
তাঁরা আরও বলেন, “কে কী করলো তা নয়—এখন ভাবার সময়, আমরা সবাই মিলে দেশের জন্য কী করবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো ইনশাআল্লাহ্।”
বয়রা সদস্যদের বর্তমান সংকট ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আতিকুর রহমান আতিক, যুগ্ম আহ্বায়ক সিদ্দিকী জাফর আহমেদ এবং সদস্য সচিব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন
উল্লেখ্য শ্রমবাজার রক্ষা আন্দোলন হলো বায়রা সদস্যদের ন্যায্য দাবি আদায়ের সম্মিলিত মোর্চা। প্রচারে: বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা)-এর সদস্যবৃন্দ।
আরও পড়ুন










