ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জেন-জি বিক্ষোভের মুখে মাদাগাস্কারে সরকার পতন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০৫, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বিদ্যুৎ ও পানি সংকট নিয়ে টানা বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা তার সরকার ভেঙে দিয়েছেন। 

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এ সময় মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট বলেন, সরকারের ব্যর্থতার দায় আমি স্বীকার করছি। যদি আমার মন্ত্রিসভার কেউ দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আমি সেই দায় নিচ্ছি। আমি দুঃখিত।

তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন এবং তরুণদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান।

এর আগে, বিদ্যুৎ ও পানির সংকটের কারণে গত ২৫ সেপ্টেম্বর মাদাগাস্কারে বিক্ষোভ শুরু হয়। মূলত তরুণরাই ‘জেন-জি’ ব্যানারে রাজধানী আন্তানানারিভোতে এই আন্দোলন শুরু করে। পরে তা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে রূপ নেয়। বিক্ষোভে নিহত অন্তত ২২ জন ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, সহিংসতায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ।

গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এ আন্দোলন সোমবারও চলতে থাকে। রাজধানী আন্তানানারিভোর তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা জীবনযাত্রার ক্রমাবনতি, ঘন ঘন লোডশেডিং ও পানির সংকটের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে।

স্থানীয় টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে শহরের কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ তখন তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল-সন্ধ্যা কারফিউ জারি রয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন সুপারমার্কেট, ইলেকট্রনিকসের দোকান ও ব্যাংকে লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজন রাজনীতিবিদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, হতাহতের মধ্যে শুধু বিক্ষোভকারীই নন, সাধারণ মানুষও রয়েছেন; কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে, আবার কেউ লুটপাট ও গ্যাং সহিংসতায় নিহত হয়েছেন। তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব তথ্যকে ‘গুজব ও ভ্রান্তি’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২০২৩ সালে পুনর্নির্বাচনের পর এটি প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। প্রায় তিন কোটি মানুষের দেশ মাদাগাস্কার আফ্রিকার দরিদ্রতম রাষ্ট্রগুলোর একটি; বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২ সালে দেশটির প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করছিলেন।

এই বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তারা কেনিয়া, নেপাল ও মরক্কোর সাম্প্রতিক তরুণদের আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত। আন্তানানারিভোর বিক্ষোভে নেপালের পতাকাও দেখা গেছে, যা চলতি মাসেই দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে ভূমিকা রাখা আন্দোলনে ব্যবহৃত হয়েছিল।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি