ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ঢাকা থেকে পায়ে হেঁটে ৩৬ ঘন্টায় বাগাতিপাড়ায়!

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৮:৩১, ২০ এপ্রিল ২০২০

বেনজামিন ও ম্যাপ

বেনজামিন ও ম্যাপ

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শংকায় চারিদিকে চলছে লকডাউন। সড়কে চলছেনা যাত্রিবাহী যানবাহন। তাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় কর্মরত অনেকেই কর্মস্থল থেকে ফিরতে পারছেননা নিজ এলাকায়। ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই পণ্যবাহী যানে করে অথবা ফিডার সড়কে চলাচলকারী যানবহনে করে ফিরছেন। বাড়ি ফিরলেও বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে তাদের। তবে এবার ঢাকা থেকে পায়ে হেঁটে ৩৬ ঘন্টায় বাড়ি পৌঁছলেন এক যুবক।

জানা যায়, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বিহারকোল এলাকার বাসিন্দা পৌর কাউন্সিলর আইজ উদ্দিনের ছেলে বেনজামিন (২৫) কর্মরত ছিলেন ঢাকার আশুলিয়া এলাকার একটি গার্মেন্টস কারখানায়। চাকরীর টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে সময়মত বাড়ি ফিরতে পারেননি। যখন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন তখন সড়কে যানবাহনের সংখ্যা যেমন কম ছিল, তেমনি পুলিশের তল্লাশীও ছিলে পথে পথে। তাই গত ১৪ এপ্রিল পায়ে হেঁটেই তিনি রওনা হন বাগাতিপাড়ার উদ্দেশ্যে। প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার পথ একটানা পায়ে হেঁটে ৩৬ ঘন্টায় গত শুক্রবার ভোর রাতে নিজ গ্রামে এসে পৌঁছান তিনি। পথে শুধু নৌকায় চেপে যমুনা নদী পার হতে হয়েছে।  

বেনজামিনের বাড়ি আসার এ খবর পৌঁছে যায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করার প্রস্তুতি নেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী জনপ্রতিনিধি বাবা আইজ উদ্দিনের সেবা করার উদ্দেশ্য ছিল বেনজামিনের। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের চাপে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়। রোববার বিকেলে বেনজামিনকে রাখা হয় বাগাতিপাড়া পাইলট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এদিন এখানে আরো একজনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এখানে মোট ৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

বেনজামিনের পরিবার জানায়, সে গত ১৪ এপ্রিল ভোরে সাভার আশুলিয়া থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে ৩৬ ঘন্টায় সে বাড়ি এসে পৌঁছায়। পরে করোনা প্রতিরোধ কমিটি- সিপিসি'র সহযোগিতায় গত শনিবার বাগাতিপাড়া পৌরসভার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে নেয়া হয় তাকে। 

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাগাতিপাড়ায় নিজ আলয়ে ফিরতে শুরু করে মানুষ। ফলে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি বেড়ে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানো হয়। এসব ফেরত আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করা হয়। 

উপজেলায় ইতিমধ্যে ৭টি প্রাতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সর্বশেষ বেনজামিনসহ ২৯ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, নিজেরা সচেতন হলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার প্রয়োজন হতো না। উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৯ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে ২ থেকে ৩ জন ব্যাতিত প্রায় সকলকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া কোয়ারেন্টাইনে থাকা কয়েকজনের পরিবারকেও খাদ্য সহায়তা দিতে হচ্ছে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি