প্রথম আলো থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শরিফুল হাসান
প্রকাশিত : ১৯:৩৩, ২৯ জুন ২০১৭
ছবি: শরিফুল হাসান
দীর্ঘ দেড় দশকের সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে ইস্তফা দিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক প্রথম আলো জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদন শরিফুল হাসান। গত বুধবার পত্রিকাটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে নিজের ফেসবুকে জানিয়েছেন তিনি।
প্রথম আলো ছেড়ে নতুন কর্মস্থল হিসেবে তিনি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। আর্থিক টানাপোড়েন থেকেই সাংবাদিকতা থেকে হস্তফা দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শরিফুল তার ফেসবুকে লিখেছেন, “আপনারা অনেকেই জানেন আমি এ জীবনে সাংবাদিক ছাড়া আর কিছু হতে চাইনি। না বিসিএস ক্যাডার না বিশ্ববিদ্যায়লের শিক্ষক না অন্য কিছু। গত ১৫ টা বছর আমি শুধু সাংবাদিকতাই করেছি। এর মধ্যে ১২ টা বছরই ছিলাম প্রথম আলোতে।”
তিনি আরও লিখেন, “সাংবাদিকতা ছিল আমার ধ্যান জ্ঞান। সাংবাদিকতা করতে গিয়ে আমার জীবনে আর কোন চাওয়া পাওয়া তৈরি হয়নি। তবে আমি সারাজীবন আর্থিকভাবে সৎ এবং মোটামুটি একটা জীবন যাপন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু গত তিনটা বছর বিশেষ করে গত ছয়টা মাস জীবন যাপন করতে গিয়ে আমাকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। ৬০ লাখ টাকার ঘুষের অফার আমি গালি দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি কিন্তু পকেটে ৬০ টাকাও ছিল না। আরেকটু ভালোভাবে বাঁচাটা জরুরী হয়ে উঠেছিল।”
বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সুযোগ প্রথম আলোর চেয়ে অন্য কোথাও বেশি নেই উল্লেখ করে তিনি আরও লিখেন, “আমি আমার ১২ টা বছর এখানে খুব আনন্দ নিয়ে ক্জ করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বেতন হয় ওয়েজবোর্ডে। প্রথম আলো সেই ওয়েজবোর্ড পুরোপুরি দেয়। কিন্তু সেই বেতনে আমার চলছিলো না। আর সততা ছাড়া আমি জীবনযাপনের আর কোন উপায় জানি না। বাধ্য হয়ে আমি দুটো জায়গায় চাকুরির জন্য আবদেন করেছিলাম। একটা ইউরোপের একটি দেশের দূতাবাস, আরেকটা উন্নয়ন সংস্থা।”
শরিফুল হাসান তার ফেসবুকে আরও লিখেন, “আপনারা অনেকেই জানেন আমি প্রবাসী শ্রমিক আর তরুণদের চাকুরি বাকুরি নিয়ে কাজ করতাম। দুটো কাজই ডেডিকেটলি করার চেষ্টা করেছি। তবে জানি না কতোট পেরেছি। আমি ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছি। আমার ভালোলাগার জায়গা অভিবাসন বিষয়ে, প্রবাসীদের অধিকার নিয়ে আরেকটু কাজ করতে পারবো। সপ্তায় দুদিন ছুটি।” ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিবাসন নিয়ে কিছু করারও ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের তরুণ চাকরি প্রত্যাশীদের উদ্দেশে লিখেন, “ যারা চাকুরি প্রার্থী তাদের জন্য আমি কীভাবে কাজ করবো জানি না। শুধু বলতে পারি আমি চেষ্টা করবো কোন না কোনভাবে আপনাদের পাশে থাকার। সাংবাদিকতা বা লেখালেখিতে আমি কোন না কোনভাবে যুক্ত থাকতে চাই। কারণ, আমি প্রথম আলো থেকে ইস্তফা দিয়েছি, সাংবাদিকতা থেকে পুরোপুরি নয়। তবে জানি না কোন গণমাধ্যম কীভাবে আমাকে সেই সুযোগটা দেবে।”
আরও পড়ুন