বর্মী সেনার মুখপাত্র হওয়া দরকার ছিল না সু চির : মানবাধিকার প্রধান
প্রকাশিত : ১২:৫২, ৩০ আগস্ট ২০১৮
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়েরি বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের ঘটনায় মিয়ানমারের নেত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির পদত্যাগ করা উচিত। ওই সময় তিনি চুপও থাকতে পারতেন। তা না করে বর্মী সেনার মুখপাত্র হওয়া তাঁর জন্য দরকার ছিল না। এমন মন্তব্য জাতিসংঘের বিদায়ী মানবাধিকার হাই কমিশনার জাইদ রা’দ আল হুসেইনের।
তিনি বলেছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাবেক এই নেত্রী যেভাবে ঘটনাটিকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছেন তা ‘গভীরভাবে দুর্ভাগ্যজনক’।
বিবিসির ইমোজেন ফৌলকেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হুসেইন বলেন, সু চি যে অবস্থানে আছেন, সেখান থেকে কিছু করতে পারতেন। তিনি চুপ করে থাকতে পারতেন- অথবা আরও ভালো হতো, তিনি যদি পদত্যাগ করতেন। বর্মী সেনার মুখপাত্র হওয়ার তার কোনো দরকার ছিল না। তিনি বলতে পারতেন, দেখ আমি, দেশের ন্যূনতম নেতা হওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, কিন্তু এসব অবস্থা সহ্য করে নয়।
সম্ভাব্য গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ করে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিবিসির কাছে তিনি এই মন্তব্য করলেন।
তবে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার বলেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তাদের শূন্য সহনশীলতা রয়েছে।
গত বছর মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশের চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ভয়াবহ হামলার পর দমন অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর দমপ পীড়নে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এবং অগাস্ট মাস থেকে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে নাফ নদী পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পৃথিবীর সব দেশ যেখানে উদ্ধাস্তু ও শরনার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্ব সম্প্রদায়ও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের দাবি তুলেছে। মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করলেও গড়িমসি করে বছর পার করে দিয়েছে। শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চি এসব নিপীড়নের প্রতিবাদ করেন নি।
এদিকে বুধবার নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জানায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চি নিন্দিত হলেও নোবেল পুরস্কার খোয়াচ্ছেন না তিনি। বলা হয়, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য তার লড়াইয়ের জন্য ১৯৯১ সালে এই পুরস্কারের যোগ্যতা অর্জন করেছেন তিনি। সেইজন্য ওই বছরই তাকে পুরস্কৃত করা হয়। তাছাড়া নিয়ম অনুযায়ী এই পুরস্কার পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়ার কোনো বিধান নেই।
সূত্র: বিবিসি।
/ এআর /
আরও পড়ুন