ঢাকা, রবিবার   ০৫ মে ২০২৪

বাজেটে এডিপি হবে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার

প্রকাশিত : ১৭:২৯, ১৪ এপ্রিল ২০১৯

আগামী অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বিভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার প্রাথমিকভাবে এক লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রস্তাব করেছে। এটি জিডিপির ৬.৮ শতাংশ। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী অর্থবছরের এডিপি দুই লাখ কোটি টাকার ওপর রাখার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাজস্ব আয়ের শ্লথ গতির কারণে তা কমিয়ে আনা হয়েছে। এর পরও মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে শেষ সময়ে এডিপির আকার কিছুটা বাড়তে পারে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের বাজেট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিকীর শেষ বাজেট। আগামী অর্থবছরের এডিপিতে অবকাঠামো খাত বিশেষ গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে অবকাঠামো খাতে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আর মানবসম্পদ খাতেও থাকবে বিশেষ নজর।’

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছিল দুই লাখ পাঁচ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। এটি আগামী অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিডিপির ৭ শতাংশ। কিন্তু রাজস্ব আয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে এডিপির আকার প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে এক লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৬.৮ শতাংশ। প্রস্তাবিত এডিপির আকার চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় প্রায় ২৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বাড়ছে। এর পরিমাণ আরও খানিকটা বাড়তে পারে। বিশেষত চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৩ শতাংশ প্রাক্কলিত হওয়ায় এবার মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর চাহিদা ও চাপ বাড়ছে। নতুন এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রস্তাবের আর্থিক ব্যয় প্রায় দুই লাখ ৮৩ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা। এ চাহিদা ও চাপের কারণে অর্থ বিভাগ নতুন এডিপির পরিমাণ কিছুটা বাড়ানোর পক্ষে। চলতি মাসের শেষ দিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উত্থাপনের সময় এডিপির আকার কিছুটা বাড়ানো হতে পারে।

চলতি অর্থবছরে বিদেশি সহায়তার ব্যবহারে ঘাটতি ছিল। এরপরও আগামী অর্থবছরে বিদেশি সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ধরা হচ্ছে। আসছে বাজেটে এডিপিতে বিদেশি সহায়তার অংশ ধরা হচ্ছে প্রায় ৬৬ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বেশি।

নতুন এডিপিতে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ব্যয়সীমা নির্ধারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে বছরভিত্তিক ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ, মধ্যম প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে ৮ থেকে ৯ শতাংশ এবং সাধারণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ শতাংশ ব্যয় প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। নতুন এডিপিতে দারিদ্র্য কমানো, কর্মসংস্থান সৃজন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা, আয়বৈষম্য কমানো, কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত ছয় অর্থবছরে মূল এডিপির আকার বেড়েছে প্রায় ২১৪ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, সেগুলোর মোট ব্যয় ১৫ লাখ কোটি টাকার বেশি। সেই হিসাবে বছরে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা এডিপি বরাদ্দ প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাবে প্রতিবছর মূল বাজেটের এডিপি কাটছাঁট করে সংশোধিত এডিপি প্রণয়ন করা হয়। সংশোধিত এডিপিও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয় না।

পরিকল্পনা কমিশনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই ২০১৮-জানুয়ারি ২০১৯) এডিপি খাতে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এটি মূল বরাদ্দের মাত্র ৩৬ শতাংশ। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ব্যয় বেড়েছে।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি