ঢাকা, সোমবার   ১২ মে ২০২৫

বাণিজ্য মেলায় চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৪৪, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:৪৫, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

আর মাত্র দেড় সপ্তাহ পরেই শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। অনুষ্ঠিতব্য মাসব্যাপী এ মেলাকে ঘিরে চলছে জোর প্রস্তুতি। প্রতিবারের মতো এবারও তাই রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের খোলা মাঠে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। মেলার চারদিকে শোনা যাচ্ছে খটখট আর টুংটাং শব্দ। হাতুড়-বাটালের এ শব্দের সঙ্গে শোনা যাচ্ছে ট্রাকসহ বিভিন্ন যন্ত্রের দমদম আর ঘ্যা ঘ্যা শব্দ। নির্মাণজনিত এ ত্রিমুখী শব্দে জোরেসরে চলছে মেলার শেষ সময়ের প্রস্তুতি। মঙ্গলবার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

মেলাপ্রাঙ্গণে দেখা যায়, সামনের রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। আশেপাশের রাস্তাগুলোর ভঙ্গরতা দূর করার চেষ্টা চলছে। মেলায় গাড়ি রাখার স্থান, মেলা পরিচালনা অফিস, বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রের গেট থেকে মেলার মূল গেটে যাওয়ার রাস্তাসহ অন্যান্য জায়গার কাজও শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে টিকিট কাউন্টার ও মূল ফটক নির্মাণকাজ। মেলায় বড় প্যাভিলিয়ন থেকে শুরু করে ছোট স্টল, ফোয়ারা, রাস্তাসহ মেলার সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণেও বেশ অগ্রগতি হয়েছে। কিছু কিছু প্যাভিলিয়ন ও স্টলে রঙের কাজও শেষ হয়েছে। মেলার এ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে শ্রমিকদের মধ্যে যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। আর তাদের খাবার ও নাস্তা-পানির যোগান দিতে মেলা প্রাঙ্গণে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ছোট খাবার দোকান। কিছু সময় কাটানোর জন্য কয়েকটি চায়ের দোকানও গড়ে উঠেছে।

মেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) উপপরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, মেলার সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছি। একই সঙ্গে অংশ নেওয়া স্টল কিংবা প্যাভিলিয়ন নির্মাণ, তার সৌন্দর্য বৃদ্ধিও এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই মেলার আয়োজন শতভাগ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। প্রতি বছর ৩১ দশমিক ৫৩ একর জমিজুড়ে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারও তাই করা হয়েছে। মেলা ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, আকতার ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। সেখানে কর্মরত শ্রমিক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের বলা হয়েছে এক সপ্তাহ সময় হাতে রেখে যেন আমরা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করি। তাই আমাদের কাজ আর মাত্র তিন-চার দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এরপর চলবে রং, লাইটিংসহ অন্যান্য সাজসজ্জার কাজ। আশা করছি ৩০ ডিসেম্বরের আগে আমাদের পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে।

মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক রফিক বলেন, আমরা অনেক আগে থেকে কাজ শুরু করেছি। তাই আমাদের কাজ দ্রুত এগিয়ে গেছে। আমরা চাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করতে। আমাদের নির্দেশ আছে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার।

মেলার আয়োজন কমিটিতে থাকা ইপিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ২০১৮ সালের বাণিজ্য মেলায় জায়গা পেতে এবার  এক হাজার ৩০০ আবেদন জমা হয়েছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দফতরে। তবে জমা হওয়া এ আবেদনের বিপরীতে লটারি ও টেন্ডারের মাধ্যমে মাত্র ৫১৪টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দিতে যাচ্ছে আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র জানায়, এবারের ২৩তম মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এবারের মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ২৬টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা হয়েছে প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ১৮টি, মিনি প্যাভিলিয়ন আটটি এবং প্যাভিলিয়ন ২৭টি।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, মেলার এবারের আসর নতুন আঙ্গিকে সাজানোর পরিকল্পনা অনুযায়ী মেলার নকশায় ভিন্নতার পাশাপাশি নান্দনিক গেট, ডিজিটাল লে-আউট প্ল্যান ও ডিজিটাল ব্লোআপ রোড করা হবে।

মেলায় এবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় নতুন বিষয় হচ্ছে মেলার প্রধান ফটক। গত কয়েক বছর ধরে কার্জন হলের আদলে তৈরি হয়েছিল মেলার প্রধান ফটক। এবার এই ফটকের পরিবর্তন করে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের চিত্র তুলে ধরা হবে। সেক্ষেত্রে এবারের ফটক ঢাকা গেটের আদলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হবে। এই আয়োজনের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে নানা প্রস্তাব এসেছে। ইপিবি ইতিমধ্যে নির্মাণশৈলীর নকশা জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া মেলার মধ্যে ডিজিটাল `টাচ স্কিন` থাকবে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন চেনা যাবে।

এবারের মেলার ব্যতিক্রমী আয়োজন বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নকে আরও তথ্যবহুল করা হবে। এ জন্য প্যাভিলিয়নের আয়তন বাড়ানো হবে। প্যাভিলিয়ন আরও সমৃদ্ধ করা হবে। মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পাখির পরিচিতির জন্য আলাদা আয়োজন থাকবে। ফিশ অ্যাকুরিয়াম ও বার্ড অ্যাকুরিয়ামে তা প্রদর্শন করা হবে। মেলায় গত বছর সুন্দরবনের আদলে কোনো পার্ক ছিল না। এবার সুন্দরবন পার্ক করা হবে। মেলায় এবার মঞ্চ থাকবে। যেখানে প্রতিসপ্তাহে দুই দিন লোকজ ঐতিহ্য ধারণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।

 

এসএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি