ঢাকা, সোমবার   ১২ মে ২০২৫

গবেষণা প্রতিবেদন

ব্যাংককিং লেনদেনে পিছিয়ে বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৯:৩৫, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেনে ব্যাংক সম্পৃক্ততায় পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। গবেষণায় দেখা গেছে, শ্রীলঙ্কার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষের ব্যাংক হিসাব রয়েছে, ভারতে আছে ৫৩ শতাংশের। সেখানে বাংলাদেশে এই হার ৩৩ শতাংশের আশপাশে। যা মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের একটু বেশি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক  ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রোববার ঢাকার মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের এসডিজি অর্জন: ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী।এতে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজর এস কে সুর চৌধুরী ব্যাংকের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে গত কয়েক বছরে কৃষকদের ১০ টাকার হিসাব খোলা এবং স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, স্কুল ব্যাংকিং, কৃষকের ১০ টাকার হিসাব এবং এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে। এ সম্পৃক্ততা এসডিজি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, বেনামী ঋণও এসডিজি অর্জনে একটি বাধা। একই সঙ্গে ব্যাংক অর্থায়নের লিঙ্গ বৈষম্য প্রকট। এটি দূর করে ব্যাংক খাতের ৩০ শতাংশ নারী কর্মী হতে পারে।

ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, অর্থনীতিতে দুর্নীতির কারণে জিডিপির ২ শতাংশ ক্ষতি হয়। আর যানজটের কারণে ক্ষতি আরও ২ শতাংশ। এ দুটি বন্ধ হলে জিডিপি ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ১১ শতাংশের বেশি। এদিক বিবেচনায় এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে দুর্নীতি এবং যানজট দুটোকে কমিয়ে আনতে হবে।

আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, প্রকৃত কৃষকরা যাতে ঋণ পায় সেদিকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সর্বোচ্চ নজরদারি করছে। কৃষকদের হাতে ঋণ দিতে পারলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, টেকসই উন্নয়নে শাখা ব্যাংকিংয়ের চেয়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওপর জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রতি ৫ কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে ব্যাংকের শাখা খোলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তা লাভজনক না হওয়ায় বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এজন্য ব্যাংক গুলোকে  প্রয়োজন হলে এজেন্ট ব্যাংকিং ভর্তুকি দিয়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি করতে হবে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ব্যাংক খাতের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততায় এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ। চাকরিজীবিদের ব্যাংকে বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে ব্যাংকে বেতন হয় দুই শতাংশের কম মানুষের। এই হার শ্রীলঙ্কায় ৭ শতাংশের বেশি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার সরকারি-বেসরকারি ৩১ শতাংশ চাকুরের বেতন হয় ব্যাংকের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংকের কার্যক্রম শহরাঞ্চলকেন্দ্রিক হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এর আওতার বাইরে থেকে যান। বিআইবিএমের গবেষকরা এসডিজি অর্জনে ব্যাংক খাতের সঙ্গে আরও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন সিদ্দিকী। গবেষক দলে আরও ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য আব্দুল কাইয়ুম এবং বিআইবিএমের তিন সহকারী অধ্যাপক তানবীর মেহেদী, তাহমিনা রহমান ও অন্তরা জেরিন।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি