ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

‘মুনাফা ৮০ শতাংশ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৯, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ওরাকল এবং এন্টারপ্রাইজ স্ট্র্যাটেজি গ্রুপের যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে, যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিক ও অন্যান্য কার্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও অন্যান্য সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তাদের বার্ষিক মুনাফা ৮০ শতাংশ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বিশ্বজুড়ে ১৩ টি দেশের প্রায় ৭০০ টি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের উপর ‘ইমারজিং টেকনোলোজিসঃ দ্যা কমপিটিটিভ এডজ ফর ফাইনান্স অ্যান্ড অপারেশন্স’ শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণার ফলাফল বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), ব্লকচেইন, ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ইত্যাদির মত সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলো ব্যবহারের ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করছে এবং প্রতিযোগিতামূলক নানা সুবিধা পাচ্ছে। 

গবেষনা অনুযায়ী, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় যথার্থতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করছে এআই ও ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট।  আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভুলের হার গড়ে ৩৭ শতাংশ কমেছে। প্রায় ৭২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে আরো ভালোভাবে ব্যবসায়িক অবস্থান ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে পারছে। ৮৩ শতাংশ কর্মকর্তারা মনে করেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে স্বয়ংক্রিয় আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ৩৬ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাছাড়া অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের গতি ৩৮ শতাংশ বেগবান করে এই প্রযুক্তি। 

ওরাকল এসএএএস (সাস) প্রডাক্ট মার্কেটিং এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জারযেন লিন্ডনাার বলেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লকচেইন এবং ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্টের মত প্রযুক্তিগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দ্রুততার সাথে বিভিন্ন জিনিস উন্মোচনের সুযোগ করে দিচ্ছে এবং সাথে সাথে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে প্রতিযোগীদের থেকে বিস্তর সুযোগ সৃষ্টি করছে যা তাদেরকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করছে। এছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিযোগীদের থেকে আরো পাকাপোক্তভাবে এই প্রযুক্তিগুলো গ্রহন করেছে তারা বাবসায়িক ক্ষেত্রে অধিক মুনাফা অর্জন করছে।”

তিনি আরো বলেন, “গবেষণাটিতে উঠে এসেছে এই সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলো এখন মূলধারায় চলে এসেছে এবং যেসব প্রতিষ্ঠান এখনও এগুলো গ্রহণ করেনি তারা মূলত তাদের ব্যবসাকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের গ্রাহকদের সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা সর্বদাই বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ায় এইসব প্রযুক্তির সম্মিলন ঘটিয়ে যাচ্ছি, যেন তারা পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে এবং তাদের ব্যবসায় এইসব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে পারে।”

এআই, আইওটি এবং ব্লকচেইন আরো সক্রিয় সাপ্লাই চেইন ও অপারেশন ব্যবস্থাপনায় দ্রুততা, নির্ভুলতা এনে দেয়। সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠাগুলো অর্ডার সমাপ্ত করতে গড়ে দিনের সংখ্যা ৬.৭ কমিয়ে আনতে পেরেছে। সাপ্লাই চেইন প্রক্রিয়ায় আইওটির ব্যবহার ভুলের হার গড়ে ২৬ শতাংশ কমিয়ে এনেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ফুলফিলমেন্ট এররে ২৫%, স্টক-আউটে ৩০% ও মানুফ্যাকচারিং ডাউনটাইমে ২৬% কমিয়ে আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করছে। সাপ্লাই চেইনে ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্টের ব্যবহার কর্মীদের কর্মক্ষমতা ২৮ শতাংশ ও বিশ্লেষণের গতি ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। ব্লককচেইন ব্যবহারকারী ৮৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের আরওআই অর্জন করেছে বা ছাড়িয়ে গেছে। অপরদিকে ৮২ শতাংশ কোম্পানি পরবর্তী বছরের মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনের ব্যাপারে আশাবাদী। ৭৮ শতাংশ কর্মকর্তা মনে করেন সাপ্লাই চেইনে ব্লকচেইনের ব্যবহার দুষ্কৃতির হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনে। ৬৮ শতাংশ প্রতিক্রিয়াকারী জানান, সাপ্লাই চেইন অপারেশনগুলোতে সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহার ব্যবসায়িক সফলতা বৃদ্ধি করে।  

এন্টারপ্রাইজ স্ট্র্যাটেজি গ্রুপের রিসার্চ অ্যান্ড এনালিস্ট সার্ভিসের ইভিপি জন ম্যাকনাইট বলেন, “গবেষণাটি স্পষ্টতই বলে দিচ্ছে যে প্রযুক্তিগুলো পরীক্ষামূলক অধ্যায় পেরিয়ে এখন বিস্তৃত আকারে ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত ব্যবসায়িক খাতে আর্থিক ও অপারেশনাল কাজে প্রযুক্তিগুলো দ্রত পরিপূর্ণতা অর্জন করছে এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আশাতীত ফলাফল নিয়ে আসছে। এছাড়াও গবেষণাটি দেখিয়ে দিয়েছে যে এই প্রযুক্তিগুলো একে অপরের পরিপূরক এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এইগুলো সম্মিলিতভাবে ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করছে।”  

গবেষণা আরো বলছে, সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলো প্রতিযোগিতায় সমতা এনে দিচ্ছে। সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি গ্রহণকারী অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে রয়েছে। সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলো এখন মূলধারায় চলে এসেছে এবং ৮৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদনে এগুলোর যেকোনো একটা অবশ্যই ব্যবহার করছে। মাত্র ৪৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রায় ৮২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান যারা তিনটি বা তার অধিক সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তারা তাদের প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে রয়েছে। বহুবিধ সম্ভাবনাময় প্রযুক্তির ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৯.৫ গুন বেশি সফল। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরদের প্রযুক্তির চেয়ে আগে থেকেই তৈরি স্বয়ংক্রিয় সল্যুশনগুলো কেনার ব্যাপারে দুই বা ততোধিকবার বেশি আগ্রহী। প্রায় সকল অংশগ্রহণকারী (৯১%) জানায়, সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলোর চাবিকাঠি হল সাস এপ্লিকেশন্স।  

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি