ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৬ জুন ২০২৫

১৩ বছর আগের ভিডিও ভাইরাল, থানা ছেড়ে পালালেন ওসি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:২২, ২৬ জুন ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সময়ের ঘূর্ণিতে হারিয়ে যাওয়া এক ভয়াবহ ঘটনার চিত্র আবারও নড়ে চড়ে উঠলো, তাও ১৩ বছর পর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ২০১২ সালে জামায়াতে ইসলামীর মিছিলে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ। এর নেতৃত্বে যিনি ছিলেন, তিনিই আজকের ওসি হাশমত আলী। ঘটনাচক্রে, এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই তিনি হঠাৎ জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানা ছেড়ে চলে যান আর ফিরে আসেননি।

ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় বুধবার (২৫ জুন) সকাল থেকে ওসি হাশমত আলীকে থানায় অফিস করতে দেখা যায়নি। 

তবে জনসাধারণ বলছে, তিনি থানা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আর পুলিশ সুপার মু. আব্দুল ওহায়াব বলছেন, তাকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর জয়পুরহাট শহরে উত্তপ্ত, দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জেলা জামায়াতের বিশাল মিছিল। কিন্তু আন্দোলনের সময় রাস্তায় হঠাৎ নেমে আসে পুলিশের চরম দমননীতি। লাঠিচার্জের সেই ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, পুলিশের একদল সদস্য মিছিলকারীদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তাদের সামনের সারিতে ছিলেন তৎকালীন এসআই হাশমত আলী। 

অভিযোগ আছে, তার লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন জামায়াতের শীর্ষ স্থানীয় নেতা অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ অনেকেই। শুধু তাই নয়, তার গুলিতে শহীদ হন শিবিরকর্মী বদিউজ্জামান। জামায়াতের ভাষ্য অনুযায়ী, জয়পুরহাটের এটাই ছিল প্রথম শহীদ।

চলতি বছরের ১৩ জুন দীর্ঘ পুলিশি জীবনের নানা বাঁক পেরিয়ে হাশমত আলী যোগ দেন  জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে। তবে থানার চেয়ারে বসতেই যেন পুরনো স্মৃতি ফিরে আসে। ১৩ বছর আগের সেই ভিডিও হঠাৎ করে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক, ইউটিউবসহ নানা প্ল্যাটফর্মে। 

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে হাশমত আলীর ‘অমানবিকতা ও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট’ আচরণের বিরুদ্ধে। 

ক্ষেতলাল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শামীম হোসেন মন্ডল বলেন, ওইদিন তিনিই আমাদের জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে রক্তাক্ত করেন এবং বদিউজ্জামানকে গুলি করে শহীদ করেন। তারপর যতবার জয়পুরহাটে দায়িত্বে ছিলেন, দমন-নিপীড়ন আরও বাড়িয়েছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য,  বুধবার সকালে ওসি হাশমত আলী সরকারি ফোন জমা দিয়ে থানার দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেছেন। অনেকের দাবি, থানা ছেড়ে তিনি পালিয়েছেন। 

যদিও বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এস এম কামাল। তার ভাষ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি নিজে থেকে ফোন বুঝিয়ে দিতে এসপি অফিসে যান। সেখান থেকে হয়তো ছুটি নিয়ে তিনি বাড়ি চলে গেছেন।

পুলিশ সুপার মু. আব্দুল ওহায়াব বলেন, ওসি হাসমত আলী পালিয়ে যাননি, তাঁকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি