ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ জুলাই ২০২৫

৪০ বছর পর চালু হচ্ছে গ্র্যান্ড সোফার হোটেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩০, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

লেবাননের বিলাসবহুল গ্র্যান্ড সোফার হোটেলটি একসময় বিশ্বখ্যাত সেলেব্রিটি কিংবা রাজনীতিকদের পদচারনায় মুখরিত ছিল। কিন্তু লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় হোটেলটি বন্ধ হয়েছিলো। সত্তর ও আশির দশকের ওই যুদ্ধ দেশটিতে এমন বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হয়তো ধ্বংস হয় কিংবা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। তবে এখন আশার দিক হচ্ছে প্রায় চল্লিশ বছর বন্ধ থাকার পর নতুন করে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে লেবাননের এই  বিলাসবহুল হোটেলটি।

চার দশক আগে যারা হোটেলটি দেখেছিলেন তাদের অনেকেই এখন আবার পরিদর্শন করছেন তাদের মধুর স্মৃতিবিজড়িত হোটেলটিতে।

দ্যা গ্র্যান্ড লেবানিজ হোটেল অফ সোফার- যাকে বলা হচ্ছে এখন পরিত্যক্ত বিলাসিতা। অর্থাৎ একসময়ের বিলাসবহুল এই হোটেলটি এখন একটি পরিত্যক্ত ভবন। কদিন আগ পর্যন্ত হোটেলটি ছিলো রীতিমত ধ্বংসস্তূপ।

সম্প্রতি একটি প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে এমন অনেকেই হোটেলটিতে ছুটে আসছেন যাদের এই হোটেলকে কেন্দ্র করে আছে নানা স্মৃতি।

একজন অ্যালবাম থেকে নিজের বিয়ের ছবি নিয়ে হোটেলে এসে বলছেন এখন তিনি যেখানে দাড়িয়ে আছেন সেখানেই এ ছবিটি তোলা হয়েছিলো চল্লিশ বছর আগে হোটেলটি যখন চালু ছিলো তখন।

আরেকজন বলছিলেন তিনি একটি সাদা স্লিভলেস পোশাক পড়ে এসেছিলেন যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিলো।

আর একজন বলছিলেন যে তিনি এসে হোটেলের দেওয়াল জুড়ে তার নিজের আঁকা ছবি দেখতে পেয়ে রীতিমত মুগ্ধ হয়েছেন।

এই হোটেলটি তখন ছিলো আভিজাত্যের প্রতীক। সেলেব্রিটি ও রাজনীতিকরা গুরুত্বপূর্ণ সভা বা অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। পাশাপাশি বিয়ে শাদীর ভেন্যু হিসেবেও এটি ছিলো আকর্ষণীয়। নিজের বিয়ের ঘটনার কথা বলছিলেন এক নারী।

‘আমার নাম সামিরা সায়েগ্। আমার বয়স এখন আশি। গ্র্যান্ড হোটেলে আমার বিয়ে হয়েছিলো ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫। দু:খজনকভাবে এটি বন্ধ হয়ে যায় ৭৫ সালে’।

হোটেলটি কেনো এতো নামী ছিলো সে উঠে এসেছে ইংল্যান্ডের শিল্পী টম ইয়াংয়ের কথায়।

‘এই ভবনটি পুরো দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এটা শুধু মাত্র মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং এটা ছিলো বিখ্যাত হোটেলগুলোর একটি যেখানে রাজা বাদশাহ, রাজপুত্ররা কিংবা জেনারেল বা বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীরা নাচতেন বা গাইতেন অথবা ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতেন।

গৃহযুদ্ধের ভয়াবহতার আগ পর্যন্ত প্রায় একশ বছর ধরে এটা ছিলো বিখ্যাত জায়গা।

বিখ্যাত এই ভবনটির মালিকানা এখন সারসক ফ্যামিলির হাতে। জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য তারা এখন এটির সংস্কার করছেন।

সম্প্রতি একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে যারা সূচনাও হয়ে গেছে। আর এই সংস্কারের মানে দাড়ায় যে ৫৩ বছর পর নিজের বিয়ের স্মৃতিময় স্থানটি দেখতে যেতে পারবেন সামিরা। নিজের সেদিনের অনুভূতির কথা বলছিলেন তিনি।

‘নিজেকে তখন রাজকুমারী মনে হচ্ছিলো। কারণ আমি দাড়িয়ে ছিলাম আর নীচে সবাই আমাকে ঘিরে অবস্থান করছিলো। দারুণ প্রিয় মুখ ছিলো সবাই আর সবাই ছিলো হাস্যোজ্জল। গৃহযুদ্ধ গ্র্যান্ড হোটেল অফ সোফারের মতো অনেক অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গাগুলোতে আঘাত হেনেছ।’

সূত্র : বিবিসি

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি