ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

৯ জুন থেকে কৃষি শুমারি

প্রকাশিত : ২৩:০৪, ১৯ মে ২০১৯

আগামী ৯ জুন থেকে মাঠ পর্যায়ে শুরু হচ্ছে কৃষি শুমারির তথ্য সংগ্রহ। শুমারিতে সারাদেশের শহর ও পল্লী এলাকায় শস্য, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। চলবে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত। এ লক্ষে বিভাগীয় ও জেলা সমন্বয়কারিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

রোববার (১৯ মে) সকালে তিনদিনের এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম, এ, মান্নান। রাজধানীর আগারগাঁও-এ পরিসংখ্যান অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল এবং কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বক্তব্য রাখেন জাতীয় কৃষি শুমারি -২০১৯ এর সমন্বয়ক বিবিএস এর মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. জাফর আহমেদ।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যান বিষয়ে আধুনিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে। এজন্য সুন্দর একটি জায়গা খুঁজে বের করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) জমা দেন। তাহলে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যেতে পারবো। আমরা চাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি সেন্টার অব এক্সিলেন্সি হিসেবে গড়ে উঠুক। প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই চান বেশি বেশি গবেষণা হোক।

মন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় বা অন্যকোনো সংস্থার তথ্যের গ্যাপ কমিয়ে আনতে হবে। যেমন ধানের উৎপাদন ও বাস্তবতার হিসেবের মধ্যে ফারাক থাকে। সেটি কমিয়ে আনতে হবে। কৃষি শুমারি সঠিকভাবে করতে হলে টিম ওয়ার্ক করতে হবে। আপনারা প্রশিক্ষণ নেবেন। তারপর কাজ করবেন নিজেদের জন্য, দেশের জন্য। কাজকে নিজের ভাবতে হবে। তদারকি ঠিকমতো করতে হবে।

গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা ক্রটি তুলে ধরুন। ক্রটি কোনো ফৌজদারি অপরাধ নয়। এটা ভুল হলে বা অবহেলা হলে তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় অধিক কাজ করতে হবে। সমাজে অন্যায় আছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। অনেক সময় আইন দিয়ে অন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। সেগুলো ধীরে ধীরে দুর করতে হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ধারাবাহিকভাবে কৃষি শুমারির কার্যক্রম চলবে। প্রথম প্রথম জোনাল অপারেশন শুরু হয়েছে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় জোনাল অপারেশন গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। শুমারির প্রস্তুতি শুরু হয় গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শুমারির প্রশিক্ষণ ১৯ মে থেকে শুরু হয়ে ১ জুন পর্যন্ত চলবে। আর মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে ৯ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, শুমারিতে তথ্যের গরমিল দুর করা প্রয়োজন। খেয়াল রাখতে হবে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিবিএসের তথ্য যেন গরমিল না হয়। নিরাপদ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের চেষ্টা চলছে। তবে, সেটি সহজ কাজ নয়। ধীরে ধীরে সম্ভব হবে। তাছাড়া, বর্তমানে ধানের দাম যে কম এটি একটি মধুর বিড়ম্বনা। কেননা উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল বলেন, কৃষিতে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদের ব্যাপক অবদান থাকলেও সেটির সঠিক হিসাব অর্থনীতিতে আসে না। আশা করছি কৃষি শুমারিতে এসব তথ্য যথাযথভাবে আসবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি রূপকল্প (Vision) ও একটি অভিলক্ষ্য (Mission) আছে। “সকলের জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণ” হলো রূপকল্প আর “মৎস্য ও প্রাণিজ পণ্যের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ” হলো অভিলক্ষ্য। আমাদের মন্ত্রণালয় এ রূপকল্প ও অভিলক্ষ্য পূরণে বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কৃষি শুমারি ২০১৯ এর উপাত্ত ব্যবহার করে যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সহজতর হবে। তিনি কৃষি শুমারির মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক গবাদি পশুর খামারের তালিকা তৈরির পরামর্শ দেন। এ ধরনের তালিকা তৈরি হলে যে সকল এলাকায় দুধ উৎপাদন বেশি হয় তা জানা যাবে। ফলে কম উৎপাদনপ্রবণ এলাকাসমূহে দুধের সরবরাহ বাড়িয়ে সাধারণ জনগণের দুধের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ও অনুষ্ঠানের সভাপতি সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপদান করার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” হিসেবে বিশ্বের দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, সরকারের অঙ্গীকার “রূপকল্প-২০২১” বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীন বিবিএস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি শুমারি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ ও কৌশল প্রণয়নে সহায়ক হবে এবং জনসাধারণের মাঝে এই শুমারির ফলাফল সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উদ্যোগে পরিচালিত কৃষি শুমারি ২০১৯ সফলভাবে যথাসময়ে সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি