ঢাকা, শনিবার   ১৯ জুলাই ২০২৫

‘মমতাজের পাশেই’ শায়িত হবেন ‘শাহজাহান’!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৯, ১১ নভেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার স্মৃতি চিহ্ন রাখতে গিয়ে ৩৫২ বছর আগে সম্প্রাট শাহজানা তাজমহল নির্মান করেছিলেন। রেখে গিয়েছিলেন হাজারো স্মৃতি। কিন্তু আজকে আপনাদের সামনে এমন একজন ‘শাহজাহানের’ পরিচয় করিয়ে দেব যিনি স্ত্রীর জন্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন মিনি তাজমহল।

তিনি হচ্ছেন ভারতের বুলন্দশহরের শাহজাহান। নাম তার ফইজুল হাসান কাদরি।তার কোনও সাম্রাজ্য ছিল না। দিন কেটেছে পোস্টমাস্টারের চাকরি করে।

স্ত্রীর মৃত্যুর পরে দেবাই তহসিলের কাসের কালান গ্রামে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন এক মিনি তাজমহল। আকার বা জৌলুসে সম্রাট শাহজাহানের তাজমহলের সঙ্গে তুলনা করা অর্থহীন।

তবে স্ত্রীর প্রতি তার অতুলনীয় ভালবাসাই কাদরিকে এ কালের শাহজাহান করে তুলেছিল এলাকায়। তবে কাজ পুরো শেষ করতে পারেননি। শেষ সম্বল দু’লক্ষ টাকা দিয়ে জয়পুর থেকে মার্বেল আনাবেন বলে মনস্থ করেছিলেন। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হল না। ৮৩ বছর বয়স। লাঠি ঠুকঠুক করতে কাজেকর্মে এখানে-ওখানে চলে যেতেন।

গত বৃহস্পতিবার তেমনই বেরিয়েছিলেন। পথে একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচাতে পারেননি তাকে। শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।

আত্মীয়রা জানিয়েছেন, বছর দুই আগেও এক বার সাইকেল থেকে পড়ে চোট পেয়েছিলেন। কিন্তু এ যাত্রায় আর বাঁচতে পারেননি তিনি।তবে কাদরির শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, তার তাজমহলে স্ত্রী তাজমুল্লি বেগমের পাশেই সমাহিত করা হবে তাকে। মিনি তাজমহলের বাকি কাজও তার আত্মীয়রা সম্পূর্ণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

২০১১ সালে গলার ক্যানসার হয়ে তাজমুল্লি বেগম মারা যান । ৫৮ বছরের বিবাহিত জীবনে ছেদ পড়ে। পরের বছর তার সমাধির উপরে মিনি তাজমহল গড়ার কাজে হাত দেন কাদরি। সাধ থাকলেও সাধ্যের তো সীমা থাকে! নিজের সব সম্বল নিয়ে নেমেছিলেন মাঠে। কিনেছিলেন মার্বেল আর ইমারতি সরঞ্জাম।

কিন্তু বেশ খানিকটা গাঁথুনি ওঠার পরে আটকে যায় কাজ। তত দিনে ছড়িয়ে পড়েছে তার প্রেমকথা। অখিলেশ যাদব তখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। সব শুনে লখনউয়ে ডেকে পাঠান কাদরিকে। বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। টাকা দিতে চান মিনি তাজমহলের বাকি কাজ শেষ করার জন্য। বিনীত ভাবে কাদরি জানান, এটা তিনি নিজেই গড়তে চান।

তবে মুখ্যমন্ত্রী চাইলে গ্রামে একটি ইন্টার-কলেজ করে দিলে ভাল হয়। অখিলেশ তার ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে সেই জমিতেই গড়ে দেন কলেজ। গাঁয়ের মেয়েরা এখন সেখানেই পড়ে। সেই কলেজের কিছুটা জমি কাদরিরই দেওয়া।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি