ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৭ জুলাই ২০২৫

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে ১২ লাখ আয় সহজের রেজাউলের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪৬, ২৮ এপ্রিল ২০২২

Ekushey Television Ltd.

দীর্ঘ ৬ বছর ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকিটিংয়ের সঙ্গে জড়িত সহজ লিমিটেডের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম। এজন্য অনলাইন টিকিটের সার্ভারে প্রবেশেও তার কোনো বাধা ছিল না। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতি ঈদ মৌসুমে ২-৩ হাজার টিকিট অবৈধভাবে সরিয়ে নিতেন তিনি। আর এসব টিকিট কালোবাজারে ১০-১২ লাখ টাকায় বিক্রি করতেন সহজ লিমিটেডের এই কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। টিকেট কালাবাজির অভিযোগে রেজাউল (৩৮) ও তার সহযোগী এমরানুল আলম সম্রাটকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১।

রেজাউলকে জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে, বিগত ৬ বছর ধরে রেলওয়ে টিকেটিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছেন রেজাউল। সহজ.কমের আগে সিএনএস.বিডিতে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ট্রেনের টিকিটের দায়িত্ব সহজ'র কাছে গেলে অভিজ্ঞ কর্মী হিসাবে তাকে চাকরিতে পুনঃবহাল করা হয়। রেজাউল প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে ২-৩ হাজার টিকিট অবৈধ উপায়ে সরিয়ে নিতেন। এভাবে প্রতি ঈদে তিনি ১০-১২ লাখ টাকা অবৈধ উপায়ে আয় করতেন। এছাড়া তার নিয়োগ করা কিছু সেলসম্যান আছে, যারা বিভিন্ন রেলস্টেশনে কালোবাজারির টিকিট বিক্রি করে।

সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ‘পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বেশি সংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বেশিরভাগ যাত্রী ট্রেনের টিকিট অনলাইনে সংগ্রহ করছে। ঈদ উপলক্ষে টিকিট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া রাতভর স্টেশনে অপেক্ষা করে সকালে টিকেট বিক্রির শুরুতেই টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ উঠছে। এসব বিষয় নজরদারি করছিল র‌্যাব-১।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে কমলাপুর স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় সার্ভার রুম থেকে সহজ'র সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিমকে র‌্যাব-১ এর উত্তরা কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রেজাউল টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। এরপর বুধবার রাতে রেজাউলকে এবং তার দেয়া তথ্যমতে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তার কালোবাজারি টিকিট বিক্রির সহযোগী এমরানুল আলম সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি পঞ্চগড়ে। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ ট্রেনের ই-টিকেট জব্দ করা হয়।’

রেজাউল জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ‘তিনি ব্যক্তিগত পরিচিতদের কাছে টিকিট প্রতি প্রায় ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নিয়ে বিক্রি করেন। অন্যদিকে কালোবাজারি টিকিট বিক্রির মাধ্যমে বিক্রির ক্ষেত্রে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। রেজাউলের দাবি, রেলওয়েতে বিভিন্ন 'ভিআইপিদের টিকিটের 'আবদার মেটানো'র কারণে নির্বিঘ্নে কালোবাজারি করে আসছিলেন।’

র‌্যাব আরও জানিয়েছে, রেজাউল তার নিজস্ব পরিচিত লোকজনের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে টিকিট প্রত্যাশীদের একটি বড় ক্রেতা শ্রেণী গড়ে তুলেছেন। তার নিজস্ব বেশ কিছু কালোবাজারি টিকিট বিক্রেতা আছে। রেলওয়ে ই-টিকেটিং সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুবিধা নিয়ে তিনি ই-টিকেটিং সার্ভার থেকে অবৈধ উপায়ে টিকিট বুক ও ক্রয় করতেন।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি