ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগাতে পরিকল্পনা জরুরী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:২৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো ও মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, শিল্প-শিক্ষার সমন্বয়সহ এখাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন ডিসিসিআই আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী বক্তারা। 

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’  শীর্ষক ওয়েবিনার ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরাগ। 

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়নসহ সর্বোপরি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং আমাদের শিল্পখাতে এ বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ এখাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান খুবই জরুরী। 

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি খুব স্বল্পসময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তবে এখাতের প্রয়োজনীয় অগ্রগতির জন্য আমাদের প্রস্তুতি এখনও কাঙ্খিত মাত্রায় নয়। এ লক্ষ্যে তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রস্তাবিত শিল্পনীতিতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা থাকা খুবই আবশ্যক বলে মত প্রকাশ করেন। 

শামস মাহমুদ বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নতুন নতুন ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচনার দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে, তবে এ সুবিধা গ্রহণ করতে বাংলাদেশকে সমন্বিত নীতিমালা গ্রহণ এবং তার যাথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত জরুরী। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগোযোগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের অর্থনীতি কৃষির উপর অধিক হারে নির্ভর থাকলেও আজকে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখছি। তিনি বলেন, বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রথম চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রথম চিন্তা-ভাবনা আসলেও, যেটি বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। 

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী করতে হলে, জনগণের নিকট তথ্য-প্রযুক্তির সেবা দ্রুত পৌঁছাতে হবে। তিনি জানান, বাংলাদেশের জনগণের তথ্য-প্রযুক্তি গ্রহণের সক্ষমতা অত্যন্ত বেশি, যেটি কোভিড-১৯ মহামারীর সময় সেটি প্রমানিত হয়েছে এবং বর্তমানে মহামারীর সময়ে দেশের টেলিকম খাত মানুষকে সর্বাত্মক সেবার চেষ্টা করেছে। তিনি জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ৮ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে, যেখনে ৮ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হতো, তবে বর্তমানে দেশে ২১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করছে এবং এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা বাড়াতে হতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কিভাবে কাজ করবে এবং কিভাবে দেশের মানুষের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়, তার উপর নির্ভর করে এ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের শহরাঞ্চলগুলোতে ৫জি সুবিধা প্রদান করা যাবে এবং দেশের উদ্যোক্তাদের সহায়তার লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে ৫জি সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়াও তিনি দেশের শিক্ষাকার্যক্রমে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার আরো বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন।       

অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরাগ বলেন, আমাদের এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন নতুন পণ্য তৈরি করছে। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে নতুন পণ্য উৎপাদনের যেমন সুযোগ তৈরি করবে, সেই সাথে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে এবং সে সুযোগ গ্রহণে আমাদেরকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বস্তাবায়ন করতে হবে। তিনি জানান, প্রস্তাবিত শিল্পনীতি ২০২০-২১-এ বিদ্যমান শিল্পখাতসমূহের সকল দিককে অন্তর্ভূক্ত করার মাধ্যমে একটি সমন্বিত শিল্পনীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে।

আরকে//
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি