ঢাকা, শনিবার   ১২ জুলাই ২০২৫

কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বে আসছেন কে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০৮, ২৪ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১৬:১১, ২৪ আগস্ট ২০২০

Ekushey Television Ltd.

দলের হাল কে ধরবেন?‌ সেই প্রশ্নে অনেকটাই টালমাটাল ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস। নেতৃত্বের অভাব এবং দলের একাধিক সাংগঠনিক সমস্যা তুলে ধরে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিয়েছেন ২৩ জন শীর্ষ স্থানীয় কংগ্রেস নেতা। আজ সোমবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। এই চিঠিই বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় বলে জানা যায়। এর মধ্যেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, নেতৃত্বে তিনি গান্ধী পরিবারের সদস্যকেই দেখতে চান। তবে সোনিয়া গান্ধী চান পরিবারের বাইরের কাউকে। 
 
গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ অমরিন্দর সিং’র মতে, ভোটে পরাজয় ‘‌নেতৃত্ব বদলের মাপকাঠি’‌ হতে পারে না। তিনি আরও মনে করিয়ে দিলেন, গান্ধী পরিবারের আত্মত্যাগ, দায়বদ্ধতা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। আর সঙ্গত কারণেই আজও কংগ্রেস ‘‌বিজেপি’র পথে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ধর্ম ও জাতির ভিত্তিতে তাদের দেশভাগের লক্ষ্য আটকেছে।’‌

অমরিন্দর এ কথাও বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি কোনভাবেই গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে যাবেন না। তাঁর মতে, দেশের এ রকম পরিস্থিতিতে দলের পুনর্গঠন চেয়ে নেতাদের চিঠি দেশ এবং দলের স্বার্থের বিরোধী। দেশে এখন ‘‌ঐক্যবদ্ধ বিরোধী দল’‌ প্রয়োজন। আর কংগ্রেসে দরকার এমন নেতা, যাকে গোটা দল মেনে নেবেন। যাকে গোটা দেশ মেনে নেবে। আর এ জন্য গান্ধী পরিবারের সদস্যই আদর্শ হতে পারে। 

অমরিন্দর এও মনে করেন, সোনিয়ারই সভানেত্রী পদে থাকা উচিত। রাহুল যখন মনে করবেন, তিনি যোগ্য, তখন তার দলের হাল ধরা উচিত। কংগ্রেসে এখন আর কেউ নেই যিনি শক্ত হাতে হাল ধরতে পারেন।

অমরিন্দরের মতোই গান্ধী পরিবারের পাশে রয়েছেন ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল এবং কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।

অন্যদিকে, মায়ের মতো রাহুল গান্ধীও চান বাইরে থেকে নেতৃত্বে কেউ আসুক। দলের সভাপতি পদে নিজেও ফিরতে চান না রাহুল। 

তাহলে কে ধরবেন কংগ্রেসের হাল? কার নেতৃত্বে পথ চলবে ভারতের উপনিবেশ ইতিহাসের সাক্ষী, মহাত্মা-নেহেরুর ১৩৫ বছরের পুরনো এ রাজনৈতিক স্তম্ভ? দলের এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে মনমোহন সিংহ এবং একে অ্যান্টনির মতো অভিজ্ঞ নেতাদের হাতে দলের গুরুভার তুলে দেয়া নিয়েও চলছে জল্পনা। 

গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল। তারপর দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন সোনিয়া। কথা ছিল নতুন সভাপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। সেই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ও শেষ হওয়ায় চূড়ান্তভাবে সভাপতি পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। 

নতুন সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে ভারতের প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির মধ্যে। এমনকি একাধিক নেতারা প্রকাশ্যে মন্তব্যও করেন। এর পরপরই কপিল সিব্বল, শশী তারুর, গুলাম নবি আজাদ, পৃথ্বীরাজ চৌহান, বিবেক তানখা, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি, রাজ বব্বর, অরবিন্দ্র সিংহ লাভলী, সন্দীপ দীক্ষিতসহ দলের শীর্ষস্থানীয় ২৩ জন কংগ্রেস নেতার কাছে চিঠি লেখেন সোনিয়া। 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সবার সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করবেন করার মানসিকতা নিয়ে যিনি বিপদ-আপদে কর্মীদের পাশে থাকবেন এবং ২৪ ঘণ্টা দলের হয়ে কাজ করবেন এমন এমন কাউকে পূর্ণমেয়াদি সভাপতিত্বের জন্য নির্বাচিত করা হবে। যুব সম্প্রদায় দলের ওপর থেকে বিশ্বাস হারাচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। 

কংগ্রেসের এই টালমাটাল অবস্থায় মানুষের মনে দলটি নিয়ে বিরূপ মনোভাব তৈরী হয়েছে। এর ফলেই বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির জয় হয়েছে। 

কংগ্রেসের সভাপতির পদে যদি রাহুল গান্ধী না ফেরেন তাহলে কি সোনিয়াই দলের দায়িত্বে থাকবেন- এমন প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। দলের একটি অংশও চায় যে সোনিয়া গান্ধীই থাকুক দলটির শীর্ষ পদে। তবে এই দায়িত্বের ভার সোনিয়া সামলাতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। 

এমএস/এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি