১৪ ঠিকাদারকে কালো তালিকাভূক্ত করতে স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি
প্রকাশিত : ২২:৫৪, ১৪ জুন ২০২০
কেনাকাটায় নয়-ছয় করার অভিযোগে ১৪ ঠিকাদারকে কালো তালিকাভূক্ত করার কথা বলে স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় দুর্নীতি-অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন’র (দুদক) সুপারিশে গত ৯ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ-সচিব হাসান মাহমুদের স্বাক্ষরে এক চিঠিতে তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে তারা হলেন- রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্বত্ত্বাধিকারী রুবিনা খানম, মেসার্স অনিক ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের মুন্সী ফররুখ হোসাইন, মেসার্স ম্যানিলা মেডিসিন অ্যান্ড মেসার্স এস কে ট্রেডার্সের মনজুর আহমেদ, এমএইচ ফার্মার মোসাদ্দেক হোসেন, মেসার্স অভি ড্রাগসের মো. জয়নাল আবেদীন, মেসার্স আলবিরা ফার্মেসির মো. আলমগীর হোসেন, এস এম ট্রেডার্সের মো. মিন্টু, মেসার্স মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মো. আব্দুস সাত্তার সরকার ও মো. আহসান হাবিব, বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোম্পানির মো. জাহের উদ্দিন সরকার, ইউনির্ভাসেল ট্রেড কর্পোরেশনের মো. আসাদুর রহমান, এ এস এলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ এবং ব্লেয়ার এভিয়েশনের মো. মোকছেদুল ইসলামকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্বত্ত্বাধিকারী রুবিনা খানম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক মো. আবজাল হোসেনের স্ত্রী। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা পাচার এবং ৩৪ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছর এই দম্পতির বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করেছিল দুদক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির দায়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করতে দুদক আমাদের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। আমরা সেটা অনুসন্ধান করে দেখব। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা এখনই বলতে পারব না।’
জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে একটি চিঠি দেয় দুদক। দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতের স্বাক্ষরে ঐ চিঠির অনুলিপি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকেও দেওয়া হয়।
ঐ চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে কতিপয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও প্রচলিত বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে এমএসআর, ভারী যন্ত্রপাতি, সেবা ইত্যাদি ক্রয় করে। অসাধু ঠিকাদারগণ সিন্ডিকেট গঠন করে এ ধরনের টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে। সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিযোগিতামূলক দর না পাওয়ায় প্রচলিত বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে বর্ণিত সামগ্রী ক্রয় করতে হয়। এর ফলে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ ক্ষতিসাধনসহ আত্মসাতের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে মালামাল সরবরাহ না করেও বিল পরিশোধের ঘটনা ঘটেছে বলে চিঠিতে বলা হয়। গত কয়েক বছরে এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে ওইসব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরাসহ কেনাকাটায় স্বচ্ছতা আনা এবং দুর্নীতি, প্রতারণা ও চক্রান্তমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করতে ওইসব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানসহ স্বত্ত্বাধিকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করতে সুপারিশ করা হয়।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন