ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

দিনের হাসি ম্লান হল শেষ বিকেলে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৩২, ২৮ নভেম্বর ২০২১

তৃতীয় দিন শেষে মাঠ ছাড়ছেন দুই অপরাজিত ব্যাটার মুশফিক ও ইয়াসির

তৃতীয় দিন শেষে মাঠ ছাড়ছেন দুই অপরাজিত ব্যাটার মুশফিক ও ইয়াসির

বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিং নৈপুণ্যে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের বিপক্ষে লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের করা ৩৩০ রানের জবাবে তাইজুলের ৭ উইকেট শিকারে পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। ৪৪ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।

কিন্তু তাইজুলের সাফল্যের দিনটি হতাশায় শেষ করলো বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটাররা। ২৫ রানের মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন চার ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ওই ৪ উইকেটে ৩৯ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। যাতে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে টাইগারদের লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ রানে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ৩৩০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর দিন শেষে বিনা উইকেটে ১৪৫ রান করে পাকিস্তান। দুই ওপেনার আবিদ আলি ৯৩ ও আব্দুল্লাহ শফিক ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

তৃতীয় দিনের প্রথম ওভারেই পাকিস্তান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন স্পিনার তাইজুল। আব্দুল্লাহ শফিককে ৫২ রানেই লেগ বিফোর আউট করেন টাইগার স্পিনার। শফিকের আউটের পর ক্রিজে এসে প্রথম বলেই তাইজুলের লেগ বিফোরের শিকার হন আজহার আলী। ফলে খালি হাতেই ফিরতে হয় তাকে।

দিনের শুরুতেই দুই ব্যাটারকে হারানোর ধাক্কার মাঝেও টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পূরণ করেন আবিদ। সেঞ্চুরির পর অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে বড় জুটির পরিকল্পনায় ছিলেন আবিদ। তবে উইকেটে জমে যাবার আগেই দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ১০ রান করা বাবরকে বোল্ড করেন আরেক স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।

অন্যপ্রান্তে উইকেট শিকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন তাইজুল ইসলাম। যার ফলে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আরও একবার উইকেট শিকারের আনন্দে মাতে টাইগার শিবির। উইকেটরক্ষক লিটনের সহায়তায় ফাওয়াদ আলমকে ৮ রানেই থামিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার। ফলে ৪ উইকেটে ২০৩ রান তুলে প্রথম সেশন শেষ করে পাকিস্তান। 

বিরতির পর তৃতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে পঞ্চম উইকেট শিকারের আনন্দে মাতান পেসার এবাদত হোসেন। সফরকারী উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ৫ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন দীর্ঘদেহী এই পেসার।

সতীর্থরা যাওয়া আসার মধ্যে থাকলেও, অন্যপ্রান্তে উইকেট আকড়ে ছিলেন আবিদ। আবিদের উইকেটের অপেক্ষায় ছিলো বাংলাদেশও। টাইগারদের সেই আশা পূরণ করেন তাইজুল। তারকা এ স্পিনারের চতুর্থ শিকার হওয়ার আগে  ২৮২ বলে ১২টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৩৩ রান করেন পাকিস্তানি ওপেনার।

দলীয় ২১৭ রানে আবিদকে তুলে নিয়ে লিডের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। স্বীকৃত ছয় ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশের বোলাররা। তাই এ অবস্থায় দ্রুত পাকিস্তানের টেল-এন্ডারদের ছেটে ফেলার কাজটা শুরু করেন তাইজুল-মিরাজ-এবাদতরা।

দলীয় ২২৯ রানে হাসান আলিকে শিকার করে ৩৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৯ম বারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করেন তাইজুল। ৮ বলে ১২ রান করেন হাসান। এরপর পাকিস্তানের দুই লোয়ার-অর্ডার ব্যাটার সাজিদকে এবাদত ও নোমানকে বিদায় দেন তাইজুল। সাজিদ ৫ ও নোমান ৮ রানে আউট হন। 

ফলে ২৫৭ রানে পাাকিস্তানের নবম উইকেটের পতন ঘটে। এমন অবস্থায় ভালো একটি লিডের পথেই ছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ উইকেটে বাংলাদেশের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ফাহিম আশরাফ ও শাহিন আফ্রিদি। ২৯ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি ভাঙ্গেন সেই তাইজুলই। ৩৮ রান করা ফাহিমকে তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে গুটিয়ে দেন বাঁহাতি এই স্পিনার।

ইনিংসে ৪৪ দশমিক ৪ ওভার বল করে ১১৬ রানে ৭ উইকেট নেন তাইজুল। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। তাইজুল ছাড়াও এবাদত ২টি ও মিরাজ ১টি উইকেট নেন। 

যাতে প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানের লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নেমে পাকিস্তানের পেসার আফ্রিদির বোলিং তোপের মুখে পড়ে স্বাগতিকরা। ২৫ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফেরেন চার ব্যাটার। সাদমান ইসলাম ১, নাজমুল হোসাইন শান্ত শূন্য ও সাইফ হাসান ১৮ রানে আফ্রিদির শিকার হন। 

অবশ্য এর আগেই পাকিস্তানের পেসার হাসানের শিকার হন অধিনায়ক মোমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে ৬ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন তিনি। 

এরপর অবশ্য দিনের শেষ দিকে আর কোন বিপদ ঘটতে দেননি মুশফিকু রহিম ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ইয়াসির আলি। দিন শেষে মুশফিকুর ১২ ও ইয়াসির ৮ রানে অপরাজিত আছেন। আফ্রিদি ৬ রানে ৩ উইকেট নেন।

এখন দেখার বিষয়, বাকি ৬ উইকেটে ৮৩ রানের লিডটাকে আর কতদূর নিয়ে যেতে পারেন এই জুটি বা মুশফিক-ইয়াসির-লিটনরা।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি