ঢাকা, শনিবার   ১০ মে ২০২৫

লঙ্কানদের গেছে যে দিন, তা কি একেবারেই গেছে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

লঙ্কান ক্রিকেট মানেই মুরালির গুগলি, সাঙ্গাকারার ক্লাসিক্যাল শর্ট, জয়সুরিা-জয়বর্ধনে-দিলশানের মারকুটে ব্যাটিং। লঙ্কান ক্রিকেট মানেই চামিন্দা বাসের আগুনের গোলা। কিন্তু লঙ্কান ক্রিকেটে সবই আজ নিকটবর্তী অতীত। ব্যাট-প্যাড ছেড়ে রাজনীতিতে নেমেছেন জয়সুরিয়া। দিলশান ঘর সামলেছেন। সাঙ্গাকারা প্রিমিয়ার লিগ খেলে বেড়াচ্ছেন। তাইতো তাদের বিদায়ের পর লঙ্কান ক্রিকেটে আর বাতি জ্বলেনি। এবারতো শঙ্কা-ই দেখা গেছে, ‘লঙ্কানদের গেছে যে সোনালি দিন, তা কি একেবারেই গেছে?’

এশিয়া কাপের ১৪তম আসরে শ্রীলঙ্কার নির্লজ্জ আত্মসমর্পণে দেশের ক্রিক্রেটাঙ্গনতো বটেই, বহির্বিশ্বেও গেল গেল রব উঠে গেল। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে শিরোনাম করেছে, ‘শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট টিমের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, আফগানিস্তানও তাদের ৯১ রানে হারিয়ে দিয়েছে।’ শুধু ভারতের গণমাধ্যম-ই নয়, বরং শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমেও ম্যাথিউসদের তুলোধুনো করা হচ্ছে।

গতকাল সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৯১ রানে হারে টিম শ্রীলঙ্কা। এর আগে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারে হাথুরে সিংয়ের শিষ্যরা। শুধু এবারের এশিয়া কাপ-ই নয়, গত বিশ্বকাপের পর থেকেই চলছে লঙকান ক্রিকেটের দুর্দিন। একইসঙ্গে তিন ক্রিকেটার কুমারা সাঙ্গাকারা, দিলশান ও মাহেলা জয়বর্ধানের বিদায়ের পর দলটি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।


পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪০টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে শ্রীলঙ্কা। এর ৩০টিতেই পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে জয়সূরিয়ার উত্তরসূরিদের। শুধু ২০১৭ সালেই প্রতিবেশি দেশ ভারত ও পাকিস্তানের কাছে ৫-০তে হোয়াইট ওয়াশ হয় ম্যাথিউসরা। একই বছর জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারে দলটি। এদিকে চলতি বছর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজ হারে লঙ্কানরা। আর সর্বশেষ দুই ম্যাচে তো নাকানি চুবানি খেয়ে এশিয়া কাপ থেকেই বিদায় নিয়েছে।

২০১৬ সালেও শ্রীলঙ্কার কপালে শনির দশা ভর করেছিল। ওই বছরে একমাত্র সাফল্য বলতে জিম্বাবুয়ের আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজ। ওই সিরিজে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। ওই সিরিজ ছাড়া দলটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০তে হোয়াটহোয়াইশের পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-১ ব্যবধানে হারে।

উপরের চিত্র দিলশান-সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধানে উত্তর যুগের। এবার চোখ বুলানো যাক এই ত্রয়ীর যুগে। কেবল ২০১৩ ও ২০১৪- এ দুই বছরে দলটি খেলে ১১টি সিরিজ। এর ছয়টি সিরিজেই জয় লাভ করে দিলশানের নেতৃত্বাধীন লঙ্কানরা। আর হার রয়েছে চার সিরিজে। ওই সময় দলটি ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়াসহ বড় দলগুলোর বিপক্ষে ছিল সরব। আর এখন দলটির অবস্থা
একেবারেই নাজুক।

সাঙ্গাকারার মতো ক্রিকেটাররা এখনো ঘরোয়া ক্রিকেটে কিংবা প্রিমিয়ার লিগে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, অথচ জাতীয় দল থেকে
আগেভাগেই নিয়েছেন অবসর। শুধু সাঙ্গাকারা-ই নয়, মাহেলা জয়বর্ধানে, দিলশানও আগেভাগেই অবসর নিয়েছেন। এই ত্রয়ীর বিদায়ের ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি লঙ্কানরা।

দলটির অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা একসঙ্গে বিদায় নেওয়ার পর নবীনরা এসে হাল ধরার চেষ্টা করেছেন। তবে ধীরে ধীরে অভিজ্ঞ হয়ে উঠা উপল থারাঙ্গাও নেই ফর্মে। অন্যদিকে অধিনায়ক ম্যাথিউসের ফর্মও পড়তির দিকে। পেসার লাসিথ মালিঙ্গাও যায় যায়। গতিদানব নুয়ান কুলাসেকারাও দলের সঙ্গে নেই। সব মিলিয়ে লঙ্কান ক্রিকেটারদের অবস্থা হ-য-ব-র-ল।

এমন পরিস্থিতিতে লঙ্কান ক্রিকেটের সুদিনের আশা করছে দেশটির ক্রিকেট ভক্তরা। এরই মধ্যে দাবি উঠেছে, লঙ্কান ক্রিকেটকে ঢেলে সাজাতে হবে। এদিকে বেতন ভাতা নিয়ে প্রায়ই দেশটির ক্রিকেটাঙ্গনে অসন্তোষ দেখা গেছে। এই বিষয়টিও যে লঙ্কান ক্রিকেটকে পেছনে নিয়ে যাচ্ছে, সেটাও তুলে ধরেছে দেশটির কয়েকটি পত্রিকা।

এমজে/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি