অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা থাকলে উন্নয়ন চোখে পড়ে না
প্রকাশিত : ২০:৫২, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২৩:০৯, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

তথাকথিত সুশীল সমাজের কঠোর সমালোচনা করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়ন না দেখাটা এক ধরনের অসুস্থতা, কারণ তাদের দৃষ্টি রয়ে গেছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের দিকে। তিনি বলেন, দেশ উন্নয়নের গতিধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। সারা বিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বীকৃতি দিচ্ছে। কিন্তু দেশের কিছু মানুষ উন্নয়নটা চোখে দেখে না। তাদের আচরণ দেখলে গাধার কথা মনে পড়ে।
বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সর্বজনিন উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অবস্থান শীর্ষে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবে আগের বছরের চেয়ে দু’ধাপ এগিয়ে ৩৪তম স্থান দখল করেছে। এছাড়া প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারস বলছে, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ২৯তম এবং ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের গতিধারায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং সমগ্র বিশ্বও তার স্বীকৃতি দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য যে, দেশের কিছু মানুষ এই উন্নয়ন অগ্রগতি চোখে দেখে না। এরা চোখ থাকতেও অন্ধ এবং কান থাকতেও বধির। এসময় প্রধানমন্ত্রী একটি পুরনো দিনের গান-‘হায়রে কপাল মন্দ, চোখ থাকিতেও অন্ধ’র উদ্ধৃতি দিয়ে এই শ্রেণির মানুষের তীব্র সমালোচনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা চোখ থাকিতেও অন্ধ তাদের তো হাজার চেষ্টা করে দেখানোও যাবে না, আর বোঝানোও যাবে না। আমার একটাই চিন্তা বাংলাদেশের মানুষ কি পেল, তারা ভালো আছে কি না, তারা খুশী কি না-তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো আমরা পূরণ করতে পারছি কি না, সেটাই বিবেচ্য বিষয়।
দেশের তথাকথিত সুশীলদের কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী এদিন সুশীলের সংজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানতে চান-কিভাবে কোন তত্ত্বের ভিত্তিতে এই শ্রেণির লোকজন সুশীল হয়েছে। তিনি বলেন, একটা শ্রেণি আছে বাংলাদেশে যেটা আমি সবসময় বলে থাকি, তাদের খুব আকাঙ্ক্ষা ক্ষমতায় যাবার এবং পতাকা পাবার। কিন্তু তারা জনগণের কাছে যেতে পারেন না। ভোটের রাজনীতিতে তারা অচল।
তিনি বলেন, ‘ভোটের রাজনীতি করতে গেলে জনগণের ভোট পেতে হয়। জনগণের কাছে দাঁড়াতে হয়, ভোট ভিক্ষা চাইতে হয়, ভোট পেয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েই এই সংসদে বসতে হয় এবং সরকার গঠন করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থার প্রতি তাঁর সরকারের আনুগত্যের উল্লেখ করে বলেন, দেশের এই শ্রেণিটা ভোটের জন্য জনগণের কাছে না গিয়ে বাঁকা পথে ক্ষমতায় যেতে চায়।
সংসদ নেতা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে যে হত্যা ক্যু ও ষড়যন্ত্র এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয় তার সুযোগ নিয়ে এ ধরনের মানুষ ক্ষমতায় যাবার একটা পথ পায়। আর অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা সবসময়ই তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য এ ধরনের লোককে খুঁজে নেয়।
আর/টিকে
আরও পড়ুন