ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

আগামী প্রজন্মের সহায়তায় রোটারি উদ্যোগ বিআরপিসিপি কমফোর্ট সেন্টার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৫, ১৯ অক্টোবর ২০২১

অর্থনৈতিক অগ্রগতি আর অবকাঠামো উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সারাদেশে শিক্ষা বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। একেবারে প্রান্তিক মানুষরাও এখন বুঝতে পেরেছেন যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে আর আগানো যাবে না। তাই সারাদেশে গড়ে উঠছে স্কুল-কলেজ। 

বিশেষ করে বেসরকারি এমপিও ভুক্ত ও এমপিও বিহীন স্কুলগুলো আমাদের সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থায় একটি বড় শক্তি। 

সারাদেশে ১ লাখ ৮ হাজারের বেশি প্রাইমারি ও হাইস্কুল রয়েছে যার বড় অংশই বেসরকারি স্কুল। রয়েছে অগণিত মাদ্রাসা আর এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া বেসরকারি কলেজ।

এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠলেও পর্যাপ্ত অবকাঠামো তৈরি হয় নি। আর্থিকভাবে সক্ষম না থাকায় অধিকাংশ স্কুলেই সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন শৌচাগার নেই। একাধিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, বছরে ৪৪ লাখ শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পরিচ্ছন্ন ও ব্যবহার উপযোগী শৌচাগার অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের মেয়েদের। বয়সন্ধিকালীন শারীরিক পরিবর্তনের সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহার উপযোগী শৌচাগার না থাকায় তারা চরম বিপদে পড়েন। স্কুলে মেয়েদের উপস্থিতি কমে যায়। যারা উপস্থিত থাকে তাদেরকেও সীমাহীন শারীরিক অস্বস্থির মাঝে ক্লাস করতে হয় বলে লেখাপড়ায় মনোযোগ দেয়ার সুযোগ থাকে না।

দেশব্যাপী এই সমস্যার সমাধান করতে রোটারি ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১ এর গভর্ণর ইলেক্ট ডিজিই ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী প্রচলন করছেন, ‘বাংলাদেশ রোটারি প্রায়োরিটি কমিউনিটি প্রজেক্ট’ সংক্ষেপে বিআরপিসিপি।

বিআরপিসিপি কী :
‘বাংলাদেশ রোটারি প্রায়োরিটি কমিউনিটি প্রজেক্ট’ সংক্ষেপে বিআরপিসিপি হচ্ছে ডিজি (২১-২২) ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীর ব্রেইন চাইল্ড।

সারাদেশের যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টয়লেট নেই বা থাকলেও জীর্ণ এবং ব্যবহার উপযোগী নয়, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় গড়ে দেয়া হবে মানসম্পন্ন আধুনিক কমফোর্ট সেন্টার। স্কুলের শিক্ষিকা এবং ছাত্রীদেরকে Menstrual Hygiene Management  ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রশিক্ষন দেয়া হবে, যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে গড়ে উঠবে একটি স্বাস্থ্যসম্পন্ন নারী জনগোষ্ঠী।

কমফোর্ট সেন্টারের প্রকার
প্রয়োজনীতার নিরিখে দুই ধরনের কমফোর্ট সেন্টার নির্মিত হবে।

১. একলিঙ্গ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (নারী স্কুল/ পুরুষ স্কুল) : ৩টি টয়লেট, ১টি পোশাক পরিবর্তন কক্ষ ও প্রক্ষালন বেসিন সহ স্বয়ং সম্পূর্ণ ইউনিট।
২. সহশিক্ষা নির্ভর প্রতিষ্ঠান : স্বতন্ত্র প্রবেশমুখ সহ  ৬টি টয়লেট, ১টি পোশাক পরিবর্তন কক্ষ ও প্রক্ষালন বেসিন সহ স্বয়ংসম্পূর্ণ দুই ইউনিট।

বাজেট : প্রাক্কলিত নির্মান ব্যয়
১. একক ইউনিট : ৫.৫ লক্ষ টাকা
২. ডাবল ইউনিট ( সহশিক্ষা) : ৮.৫ লক্ষ টাকা

ডিস্ট্রিক্টের ভুমিকা
ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮১ এর পক্ষ থেকে এই প্রজেক্টকে প্রাধিকার ভিত্তিতে সহায়তা করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের স্থপতিরা স্বেচ্ছাসেবায় এর ডিজাইন ও নির্মাণ কাজ তদারক করবেন। স্বাস্থ্যপেশার রোটারিয়ানদের একটি চৌকস দল নারী শিক্ষার্থীদেরকে ঋতুচক্র ও অন্যান্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষন দেবেন।

আর্থিক সংস্থান
প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্লাবগুলো নিজস্ব অর্থায়নে নিজেদের মতো করেই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করবে। এছাড়াও ডিডিএফ বরাদ্দে ডিপিসিপি প্রাধিকার পাবে।

সম্ভ্যাব্য সংস্থান
১. ডিডিএফ বা ডিস্ট্রিক্ট ফান্ড ( মোট ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৩০% পর্যন্ত )
২. বাস্তবায়নকারী ক্লাব : নূন্যতম ৩০%
৩. অন্যান্য স্পনসর/ স্কুল কমিটি/ ব্যক্তিগত দান/ এলুমনি এসোসিয়েশন ইত্যাদি : প্রয়োজনমতো।

কর্পোরেট পার্টনারশিপ
কর্পোটের পার্টনাররা একেকটি প্রজেক্টে নূন্যতম ৬০% ব্যয় নির্বাহের শর্তে নিম্নোক্ত সুবিধা পাবেন।
ক. কমফোর্ট সেন্টারে রোটারি লোগোর পাশাপাশি কর্পোরেট ব্র্যান্ড লোগো প্রদর্শন, যা বছরের পর বছর স্থায়ী হবে এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মনে গেঁথে থাকবে।
খ. রোটারি ডিস্ট্রিক্টের অনুষ্ঠানসমুহে  প্রদর্শিত ছবি, আন্তর্জাতিক রোটারি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ছবি এবং ভিডিও ডকুমেন্টারিতে কর্পোরেট স্পনসরশিপে নির্মিত কমফোর্ট সেন্টারগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদর্শিত হবে।

কীভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবেন
১. ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রথমে কমফোর্ট সেন্টার প্রয়োজন এরকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হবে। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহজে প্রবেশগম্য এবং রোটারি ব্র্যান্ড তার গাম্ভীর্য ও গুরুত্বসহ প্রদর্শিত হবে এরকম স্থান নির্ধারন করা হবে।
২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটির কাছ থেকে ‘কমফোর্ট সেন্টার স্থাপনের আবেদন’ নির্দিষ্ট ছকে সংগ্রহ করতে হবে।
৩. ক্লাব ও অন্যান্য স্পনসরদের অংশের টাকা সংগ্রহ ও জমা করে তারপর ডিস্ট্রিক্ট গ্রান্ট সাবকমিটির মাধ্যমে ডিস্ট্রিক্ট অনুদানের জন্য আবেদন করতে হবে।
৪. গভর্ণর ও তার নিযুক্ত কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাইয়ের পরে পুরো তহবিল বরাদ্দ করা হবে। তহবিল বরাদ্দের ৩ মাসের মাঝে নির্মাণকাজ শেষ করে ডিস্ট্রিক্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
৫. কমফোর্ট সেন্টার নির্মাণের পরে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রশিক্ষনের জন্য ডিস্ট্রিক্টের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি