ইরানে সরকার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প
প্রকাশিত : ০৯:৫৭, ২৩ জুন ২০২৫

ইরানের যুক্তরাষ্ট্রের হামলার একদিন পর ইরানে সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইরানের বর্তমান সরকার যদি দেশটিকে আবার মহান করতে অক্ষম হয়, তাহলে সেখানে সরকার পরিবর্তন হবে না কেন? খবর বিবিসি’র।
স্থানীয় সময় রোববার বিকাল ৫টার দিকে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ইরানের সরকার পরিবর্তন বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পোস্টে তিনি বলেছেন "সরকার পরিবর্তন টার্মটার ব্যবহার রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়। কিন্তু যদি ইরানের বর্তমান সরকার ইরানকে আবার মহান করতে অক্ষম হয়, তাহলে কেন সেখানে সরকার পরিবর্তন হবে না?"
এর আগে সকালেই তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটে হেগসেথ বলেছিলেন "যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানটি সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে ছিল না। আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির শেষ দেখতে চেয়েছি"।
ইরানের সরকার পরিবর্তনের বিষয়টি ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের মধ্যেই একটি বিতর্কের বিষয়।
এর আগে সবশেষ রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইরাকে মানব বিধ্বংসী মারণাস্ত্র আছে, এমন অভিযোগ করে সরকার পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়েছিলেন। পরে ওই অভিযোগ অসত্য প্রমাণিত হয়েছিল।
সরকার পরিবর্তন ও মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকানদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া নিয়ে রিপাবলিকানদের বড় অংশের মধ্যেই আপত্তি আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বুশ যুগের যুদ্ধবিরোধী মনোভাবকে কাজে লাগিয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা শুধুমাত্র দেশটির পররাষ্ট্রনীতির বিষয় নয় বরং এর মাধ্যমে ট্রাম্পকে তার অভ্যন্তরীণ হিসেব নিকেশের ভারসাম্য করতে হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করতে ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য চীনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্র দফতর বিশ্বজুড়ে মার্কিন নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।
জাতিসংঘে কুটনীতিকরা যা বলেছেন
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়া নিয়ে জাতিসংঘ কূটনীতিকদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে গত কয়েক ঘণ্টায়। রোববার রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান মধ্যপ্রাচ্যে অবিলম্বে নি:শর্ত যুদ্ধবিরতির আহবান জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণের জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে অনুরোধ করেছে।
বিতর্কে অংশ নিয়ে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, ইরানে হামলার জন্য পুরো বিশ্বের উচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দেয়া। তিনি অভিযোগ করেন, ইরানের সাথে আলোচনা একটি নাটকে পরিণত হয়েছিল।
ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইয়েদ ইরাভানি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ভূয়া অজুহাত তৈরি করে ওয়াশিংটন ওই হামলা চালিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেছেন, বেইজিং ইরানে আমেরিকার হামলার তীব্র নিন্দা করছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি 'প্যান্ডোরার বাক্স' খুলে দিয়েছে এবং 'ওয়াশিংটন মোটেই কূটনীতিতে আগ্রহী নয়'।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আরেকটি ধ্বংস চক্রের অবসানের আহবান জানিয়েছে।
তেলের দাম বাড়ছে
ইরান- ইসরায়েলে সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ব বাজারে তেলে দাম বেড়ে গেছে। অপরিশোধিত তেলের দাম কমপক্ষে তিন শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৯ মার্কিন ডলার হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত শুরুর পরপরই তেলের দাম বাড়ার আশংকা করা হচ্ছিলো। কারণ অনেকেই মনে করছেন তেল সরবরাহ চেইনে সংকট হতে পারে।
এএইচ
আরও পড়ুন