ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

এবার ক্যামেরুনে ধরাশায়ী ব্রাজিল, শেষ ষোলোয় সুইসরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৩৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

কাতার বিশ্বকাপে অঘটনের ধারা অব্যাহত। এবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে হেরে গেল ব্রাজিল। আর্জেন্টিনা, স্পেন, পর্তুগালের মতো গ্রুপে একটি ম্যাচ হেরেই শেষ ষোলোয় যেতে হচ্ছে তাদের। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে শেষ ২৭ ম্যাচে অপরাজিত ছিল সেলেকাওরা।

শুক্রবার রাতে ভেঙে গেল সেই নজির। অতিরিক্ত সময়ে ভিনসেন্ট আবুবাকারের একমাত্র গোলে হার স্বীকার করতে হলো তিতের শিষ্যদের। সেইসঙ্গে এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপে কোনো দলই নিজেদের সব ম্যাচে জিততে পারল না।

গোটা ম্যাচে প্রচুর সুযোগ পেয়েছিল নেইমারহীন ব্রাজিল। কিন্তু একটাও কাজে লাগাতে পারেননি তিতের শিষ্যরা। গোলের সামনে থেকে অনেক শট বাইরে মেরেছেন। নেইমার না থাকলেও ব্রাজিল দলে গোল করার অনেকে রয়েছেন। সুযোগও তৈরি হয়েছে প্রচুর। কিন্তু জালে বল জড়াতে পারবেন এমন ফুটবলারকে অন্তত শুক্রবার রাতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

রিজার্ভ দল নামিয়ে এর আগে হেরেছে স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স। শুক্রবার সেই তালিকায় যোগ হলো ব্রাজিলের নামও। এদিন হাত মেলানোর দূরত্ব থেকেও গোল নষ্ট হয়েছে। একাই অন্তত দু’টি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন ব্রুনো গিমারায়েস। 

প্রশংসার দাবীদার ক্যামেরুনের গোলকিপার ডেভিস এপাসি। অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের মুহুর্মুহু আক্রমণ সামলাতে হয়েছে তাকে। তবু এক মুহূর্তেও জন্যেও দলকে চিন্তার মধ্যে পড়তে দেননি।

প্রত্যাশা মতোই ক্যামেরুন ম্যাচে ব্রাজিলের প্রথম একাদশ আমূল বদলে ফেলেছিলেন তিতে। নয়টি পরিবর্তন করেছিলেন। আগের ম্যাচের থেকে শুধু এদের মিলিতাও এবং কাসেমিরোকে রেখেছিলেন। শুরু করেছিলেন আর্সেনালের দুই স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ছিলেন ম্যান ইউয়ের অ্যান্টনি। ব্রাজিলের হয়ে এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবার নামেন দানি আলভেস। ব্রাজিলের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে খেললেন এবং নেতৃত্ব দিলেন সাবেক এই বার্সা তারকা।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিল ব্রাজিল। দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ পায় তারা। অ্যান্টনি পাস দেন রদ্রিগোকে। তিনি পাস দেন ফ্রেডকে। কিন্তু ফ্রেড পৌঁছতে একটু দেরি করে ফেলায় বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি। ব্রাজিলের আক্রমণ সামলাতে শারীরিক ফুটবল খেলার পথ ধরে ক্যামেরুন। সাত মিনিটেই প্রথম হলুদ কার্ড দেখে তারা। 

তবুও ব্রাজিলের আক্রমণ থামানো যায়নি। ১৪ মিনিটের মাথায় ফ্রেডের ক্রস থেকে দারুণ হেড করেছিলেন মার্তিনেল্লি। কিন্তু ক্যামেরুন গোলকিপার এপাসি তা বাঁচিয়ে দেন। প্রথম ১৫ মিনিটে ব্রাজিলের বল পজেশন ছিল প্রায় ৭১ শতাংশ।

২০ মিনিটে প্রথম আক্রমণ দেখা যায় ক্যামেরুনের। টোলোর ক্রস এসেছিল ব্রাজিলের বক্সে। কিন্তু আবুবাকার পৌঁছনোর আগেই বল সেভ করে দেন এদেরসন। পাঁচ মিনিট পরে সুযোগ পায় ব্রাজিল। মার্তিনেল্লির পাস থেকে থেকে জেসুসের শট আটকে যায় ডিফেন্ডার এবসের পায়ে লেগে। দুই উইং দিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছিল ব্রাজিল। মাঝমাঠেও ছিল তাদের শাসন। ক্যামেরুন যা আক্রমণ করছিল, তা ছিল মূলত প্রতি আক্রমণ নির্ভর।

৩৮ মিনিটে আবার অ্যান্টনির একটি শট বাঁচান এপাসি। বিরতির সামান্য আগে অল্পের জন্য এগোতে পারেনি ব্রাজিল। তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মার্তিনেল্লির শট অল্পের জন্য বাঁচিয়ে দেন এপাসি। তার পরেই গোল খেতে খেতে বেঁচে যায় ব্রাজিল। এমবিউমোর হেড বাঁচিয়ে দেন এদেরসন।

দ্বিতীয়ার্ধে পর পর দু’বার অল্পের জন্য গোল পায়নি ব্রাজিল। ৫৭ মিনিটে এদের মিলিতাও-এর বাঁ পায়ের শট এপাসি ধরতে পারেননি। তবে তা পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটেই দ্রুত ফ্রি-কিক থেকে নেওয়া অ্যান্টনির শট দুর্দান্তভাবে বাঁচিয়ে দেন এপাসি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খেলা হতে থাকে ক্যামেরুনের বক্সে।

ক্যামেরুনের পাল্টা আক্রমণ দেখা গেল এক বারই। তাতেই গোল! ম্যাচ তখন গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। ডান দিকের উইং থেকে দৌড়ে ভেতরে ঢুকে আসেন এনগোম এমবেকেলি। ব্রাজিলের বক্সে তার ভাসানো ক্রসে আবুবাকারের মাপা হেড গোলের কোণ দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। 

দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না গোলকিপার এদেরসনের। উত্তেজনায় জার্সি খুলে ফেলে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখলেন আবুবাকার। 

শেষ পাঁচ মিনিট দশ জনে খেলতে হয় ক্যামেরুনকে। ব্রাজিল গোল শোধ দিয়ে দিতেই পারত। কিন্তু দিনটা ছিল ক্যামেরুনেরই। দিনটা আসলে ছিল অঘটনের।

অন্য ম্যাচে সার্বিয়াকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে সমান ৬ পয়েন্ট নিয়ে নকআউটে ব্রাজিলের সঙ্গী হলো সুইজারল্যান্ড।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি