ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন সহজ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৫৭, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের (আইসিসি) ওপর আরোপিত কড়াকড়ি শর্ত প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডে বিদেশ থেকে কোনো ধরনের পণ্য ও সেবা কিনতে গ্রাহকদের নির্দিষ্ট ফরম পূরণের বাধ্যবাধকতা আর রইল না। সহজ হলো ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন।

এর আগে অর্থপাচার রোধ, অনলাইনে জুয়াখেলাসহ বিভিন্ন অবৈধ খাতে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করা হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ গ্রাহকরা। ফলে বিভিন্ন মহলের চাপে ১০ দিনের মাথায় সেই শর্ত প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মধ্যে রোববার এক সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নিয়ম বাদ দিয়েছে। 

তবে নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, অবৈধ লেনদেন বন্ধে ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে অনলাইনে জুয়া খেলা, ফরেপ ট্রেডিং, বিদেশি শেয়ারবাজারে লেনদেন, ক্রিপ্টো কারেন্সি লেনদেন, বিদেশি লটারি কেনা ও বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে না কেনার মতো ঘটনা না ঘটে।

গত ১৪ নভেম্বর সার্কুলার জারির পর ফ্রিল্যান্সার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহারকারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। গত শনিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ জানান, শিগগির এ কড়াকড়ি শিথিল করা হবে। ফ্রিল্যান্সারদের কল্যাণে এবং আইটি সেক্টর প্রসারে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ কড়াকড়ি শিথিল করা হবে।

ক্রেডিট ও ডেবিট উভয় ধরনের কার্ডই আন্তর্জাতিক লেনদেনে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। তবে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারই বেশি। আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহক একটি লেনদেনে কোনো পণ্য বা সেবামূল্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, অনলাইনে পণ্য কেনাকাটার নামে এ সুযোগের অপব্যবহার করছেন অনেকেই। অনেকেই দেশের বাজারে পণ্য কিনে বা সেবা নিয়ে আন্তর্জাতিক কার্ড থেকে তার মূল্য পরিশোধ করছেন, যা আইনত ঠিক নয়। এ ধরনের লেনদেন যেসব প্রতিষ্ঠান করছে, তারা সরাসরি টাকা পাচার করছে। এ ছাড়া অনেকে অনলাইনে ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা ও জুয়া-লটারিতে অংশ নিচ্ছেন। 

বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়ে অনলাইনে লেনদেনের আগে অনলাইন ট্রানজেকশন অথরাইজেশন ফর্ম (ওটিএএফ) পূরণ করে মোবাইল অ্যাপ বা ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বা হার্ড কপি ব্যাংকে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেয়, ব্যাংক অনুমোদন দিলেই লেনদেন নিষ্পত্তির শর্ত বেধে দেওয়া হয়। তবে এ নিয়ম 'বাস্তবসম্মত নয়' বলে দাবি করে আইটি ফার্মগুলো। এ পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ন কবীর, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, সহসভাপতি শোয়েব আহমেদ মাসুদ, মুশফিকুর রহমান এবং ১১টি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে নতুন সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বেসিস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির সাংবাদিকদের বলেন, গ্রাহকদের ভোগান্তিতে না ফেলে কীভাবে অনলাইনে অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধ করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেক গ্রাহককে এখন আর ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে না। যে পাঁচটি গেটওয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয় ওই গেটওয়েগুলোতে অনলাইন ক্যাসিনো, জুয়াসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ওয়েবসাইটের কোড ব্লক করা থাকবে। কেউ চাইলেই ব্লক থাকা সাইটে অর্থ পাঠাতে পারবে না।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি