ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

চীনা ঋণের বিষয়ে সতর্ক করলেন অর্থমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৪০, ১০ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১৫:৪৪, ১০ আগস্ট ২০২২

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ঋণের বিষয়ে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। 

বিআরই ঋণ নেওয়ার আগে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অন্তত দুইবার ভেবে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। 

কারণ হিসেবে তিনি জানান, বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধির ধীরগতি ঋণগ্রস্ত উদীয়মান বাজারগুলোতে চাপ বাড়িয়ে তোলে। 

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন।  

ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে দুর্বল সিদ্ধান্ত বিভিন্ন দেশকে সঙ্কটে ফেলে দিচ্ছে বলে বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্বেগের মধ্যেই মুস্তফা কামাল বলেন, ঋণের মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে চীনের আরো কঠোর হওয়া উচিত।     

এ ক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ হিসেবে শ্রীলঙ্কার বর্তমান সঙ্কটের প্রসঙ্গ টানেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে চীনা সহায়তায়র অবকাঠামোগুলো থেকে কোনো সুফল আসেনি এবং তা দ্বীপরাষ্ট্রটিকে মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। 

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বজুড়ে যে পরিস্থিতি, তাতে এই প্রকল্পটি (বিআরআই) সম্পর্কে সবারই অন্তত দুইবার চিন্তা করতে হবে। সবাই চীনকে দোষারোপ করছে; চীন এটা অস্বীকারও করতে পারবে না। এখানে তাদের দায় আছে।”  

শ্রীলঙ্কায় কোন কোন প্রকল্পে সহায়তা দিতে হবে, সে ব্যাপারে চীন কঠোর ছিল না। এজন্য কোনো প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার আগে তাদের পরিপূর্ণ জরিপ করা দরকার ছিল বলে মনে করেন তিনি।

“শ্রীলঙ্কার পর…আমাদের কাছে মনে হচ্ছে চীনা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খুব একটা যত্নশীল ছিল না, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ পড়ায় বাংলাদেশেও পূণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত মাসে আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। 

গত মাসে, রাশিয়ার ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসনের ফলে তার বৈদেশিক রিজার্ভের উপর চাপের পর পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে অর্থায়নের জন্য সর্বশেষ এশীয় দেশ হয়ে উঠেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলা এবং বাজেট ঘাটতি পূরণে সব মিলিয়ে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চায় সরকার। তবে অর্থের ওই পরিমাণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি, সেজন্য আলোচনা চলছে।

এর বাইরে বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ আরো ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে চায় এবং সরকার এ বিষয়ে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

জ্বালানি ঘাটতির কারণে দৈনিক বহু-ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের বৈদেশিক রিজার্ভও এক বছর আগের ৪৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন যে দেশের শক্তিশালী রপ্তানি খাত, বিশেষ করে এর পোশাক বাণিজ্য, সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছে এবং এর রিজার্ভ এখনও প্রায় পাঁচ মাসের মূল্যের আমদানির জন্য যথেষ্ট। তবে কামাল একটি বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন, '' বাংলাদেশ চাপের মধ্যে থাকলেও শ্রীলঙ্কার মতো খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে নেই।”

এএইচএস
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি