ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

দেশের ১৪ বার সর্বোচ্চ করদাতা কে এই কাউছ মিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৫, ২৬ আগস্ট ২০১৯

রাষ্ট্রের টানা ১৪ বারের সর্বোচ্চ করদাতা তিনি। প্রচারের বাইরেই থাকেন এ সফল ব্যবসায়ী। যিনি তরুণদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা। আজ তার ৮৯ তম জন্মদিন। হাকীমপুরী জর্দা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক হাজী মো. কাউছ মিয়া। তিনি ১৯৫০ সালে মাত্র আড়াই হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করে নিরলস পরিশ্রম করে তৈরি করেছে তার আজকের এই অবস্থান।

সফল ব্যবসায়ী হিসেবে অর্জন করেছেন সিআইপি মর্যাদার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বাধিক অ্যাওয়ার্ড। অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সমগ্র বাংলাদেশে ৭ বার প্রথম স্থানসহ সর্বোচ্চ আয়করদাতা হিসেবে টানা ১৪ বার রাষ্ট্রী পুরুষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি শীর্ষ করদাতার তালিকায় নাম লেখিয়েছেন।

চাঁদপুর জেলার রাজরাজেস্বর গ্রামে (ব্রিটিশ আমলের ত্রিপুরা) ১৯৩১ সালের ২৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এর আগে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকারও তাকে শীর্ষ করদাতা হিসেবে পুরস্কার দিয়েছিল। ১৯৫৮ সাল থেকেই তিনি তৎকালীন সরকারকে কর দিয়ে আসছেন। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছর, ২০১৪-১৫ অর্থবছর এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশের শীর্ষ করদাতা কাউছ মিয়া। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তিনি ১৮ লাখ করদাতার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর দিয়েছেন। এরই স্বীকৃতি হিসেবে গতবারের মতো এ বছরও তাকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে।  এর আগেও তিনি ৮ বার শীর্ষ ১০ করদাতার তালিকায় ছিলেন।
 
তিনি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখন তার বিভিন্ন ব্যবসা আর জমি মিলিয়ে মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা। তিনি ব্যবসা শুরু করেছিলেন চাঁদপুরে, সেখানে ছিল তার স্টেশনারী দোকান। এর পরের ২০ বছরে ধীরে ধীরে তার ব্যবসা বাড়তে থাকলে তিনি চলে আসেন নারায়ণগঞ্জে । শুরু করেন তামাকের ব্যবসা। তিনি বলেন, ‘তখন তামাক বাংলাদেশে চাষ হতো না। পাকিস্তানের মারদান থেকে আসতো।’

তামাকের ব্যবসা থেকেই তার মাথায় আসে জর্দা উৎপাদনের কথা। হাকিমপুরী জর্দার উৎপাদনকারী কাউছ মিয়া কয়েক দশক থেকেই তামাক ব্যবসার সাথে জড়িত। প্রথমে একটা ছোট কারখানা দিয়ে বাজারে ছাড়লেন ‘শান্তিপুরী জর্দা’, পরে সেটা নকল হতে থাকায় ১৯৯৬ সালে ‘হাকিমপুরী জর্দা’ নামে নতুন করে শুরু করেন তিনি। ‘শান্তিপুর’ বা ‘হাকিমপুর’ এসব নামকরণের পেছনে বিশেষ কোন কারণ নেই এবং তবে হাকিমপুর নামটা মানুষের মুখে সহজে আসে বলে এমন নামই তিনি বেছে নিয়েছিলেন বলে জানান কাউছ। 

ছেষট্টি বছর ধরে ব্যব্সা করছেন কাউছ মিয়া। তার মধ্যে তামাক ও জর্দার ব্যবসা থেকেই তিনি লাভ করেছেন চার-পাঁচশ কোটি টাকা। তিনি বলেন, ‘সৎভাবে ব্যবসা করেও ভালো ব্যবসা করা যায়। মানুষের আন্তরটাই আসল। আন্তর পরিষ্কার থাকলে ভালো চিন্তা আসবেই।’ 

‘করদাতা হিসেবে তিনি পাকিস্তান আমল থেকেই পুরস্কৃত হয়ে এসেছি। এতবার সর্বোচ্চ করদাতা হতে পেরে আমি খুশি।’ এমনটি বিবিসিকে বলেন কাউছ। অন্য ব্যবসায়ীরা কেন তার মতো এত বার সর্বোচ্চ করদাতা হতে পারেননি তার কারন হিসেবে তিনি জানান, অন্য ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন। কিন্তু তিনি জীবনে ব্যাংকের টাকা নেননি। ব্যবসায় জীবনে তিনি ব্যাংক থেকে কখনো টাকা নেননি এবং কোন খাদ্যপণ্য মজুদ করে ব্যবসা করেননি। বরং ব্যাংকই তার টাকা কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করেছে বলে জানান তিনি।  ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়া ও তার পরিবারকে ‘কর বাহাদুর পরিবার’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। 

 

এমএস/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি