ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ জুন ২০২৫

বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২, ২৭ জুন ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

তিনটি আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থার অর্থ পাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের এই অংক গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৩ সালের জুনে রিজার্ভ ছিল ৩০ বিলিয়ন ডলার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ঋণ সহায়তার অর্থ যুক্ত হওয়ায় রিজার্ভ বেড়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আইএমএফের দুই কিস্তি ১৩০ কোটি ডলার, এডিবির ৯০ কোটি ডলারসহ জাইকার ঋণ সহায়তার অর্থ রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিন শেষে মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৫  বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হ‌লো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ক‌রে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসেবে দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছে। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসীরা বৈধ পথে আরও বেশি অর্থ পাঠাতে শুরু করেছেন। এতে দেশে প্রবাসী আয় বেড়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফিরেছে। ফলে রিজার্ভের ওপর চাপ কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১০ মাস ধরে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না। একই সময়ে ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কার, বাজেট সহায়তা ও ঋণ হিসেবে ৫০০ কোটির বেশি ডলার এসেছে দেশে। এসব কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন বাড়তির দিকে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে এই রিজার্ভ বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নজিরবিহীন অর্থপাচার ও বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতিও বেড়েছিল বাংলাদেশের। ডলারের বিপরীতে টাকা দর অবনমন হতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে। সংকটে মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে। ফলে আস্তে আস্তে তলানিতে নামে রিজার্ভ। ওই সময় রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়ে ২০২২ সালের জুলাইতে আবেদন করে বাংলাদেশ।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি