বড় জয়ে সব সমালোচনার জবাব দিল টাইগাররা
প্রকাশিত : ২০:০৯, ৮ মে ২০১৯

মাশরাফি,সাকিব কিংবা পুরো বাংলাদেশ টিমকে নিয়ে যেন সমালোচনা আর বিতর্ক থামছিলোই না। একে তো দলের অধিনায়ক মাশরাফির সাথে ডাক্তারের ঘটনা রীতিমত ভাইরাল। সেখানে মাশরাফির প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনায়ও মেতেছিলো অনেকে। অন্যদিকে, আগে থেকেই সাকিবকে নিয়ে তো সমালোচনারই শেষ নেই। সর্বশেষ, আইপিএল খেলে দেশে ফিরলেও বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে ছিলেন না তিনি। যেটি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এই তো গেলো,দুজন খেলোয়ারদের নিয়ে মাথা ব্যাথা সবার। অন্যদিকে যখন, আয়ারল্যান্ডের ‘এ’দলের সাথে প্রস্তুতি ম্যাচে হেরে যায় বাংলাদেশ,তখন তো সব সমালোচনা এক হয়ে পুরো বাংলাদেশের খেলোয়ারদের তুলোধুনো করেছেন অনেকেই।
কিন্তু মঙ্গলবার সেই সব সমালোচনার জবাব দিল বাংলাদেশ।ত্রিদেশীয় সিরিজে বড় ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিয়ে তারা নিজেদের সেরা প্রমাণ করেছেন। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও বুঝিয়েছেন দিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের সাথে তারা ভালো করলেও বাংলাদেশের সাথে তা সম্ভব নয়।
সাথে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পূর্ব প্রস্তুতিও জানান দিলেন বিশ্ব ক্রিকেটকে। পুরো দলের জয়ের সাথেও মাশরাফি ও সাকিবের পারফমেন্স ছিলো চোখে পড়ার মত।যা দিয়ে তারাও সমালোচকদের জবাব দিয়েছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন,বড় একটি স্কোর করা তাদের অসম্ভব ছিলো না। কিন্তু তা হতে দেননি মাশরাফি। ৪১ ও ৪৩ এই দুই ওভারের ৫ বলের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের চাকা আটকে দিয়েছেন ভালোভাবেই। যার কারনে ৫০ ওভারে ক্যারিবীয়দের স্কোর ৯ উইকেটে ২৬১ রানেই আটকে যায়। অন্যদিকে বল হাতে নিয়ন্ত্রিত, ব্যাট হাতে উজ্জ্বল, ফিল্ডিংয়ে তো বাজপাখির মতো এক ক্যাচ নিলেন সাকিব। সবমিলিয়ে ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত এক সাকিবকেই দেখা গেল সেদিন। নিজের সব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছেন ভালো পারফমেন্স দিয়ে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তিনশো পেরিয়ে যাবে মনে হলেও মাঝের ওভারগুলোতে ভীষণ টাইট বোলিং করেন দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান আর মেহেদী হাসান মিরাজ। যার ফলশ্রুতিতে পরে চাপে পড়ে যায় ক্যারিবীয়রা।এই তো গেল বোলিংয়ের কথা অন্যদিকে ব্যাটিংও নৈপূণ্য দেখিয়েছে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৬১ রানের সংগ্রহটা খুব ছোট স্কোর ছিলোনা। এই রান তাড়া করতে নেমে ঘটতে পারত অনেক কিছুই। কিন্তু তামিম ইকবালের সঙ্গে সৌম্যর ওপেনিং জুটি সব সংশয়, শঙ্কাকে ধুয়ে মুছে দেয়। এই দুইয়ের ১৪৪ রানের জুটিই যে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ের ভিত। দারুণ এই জুটিতে ছিল সৌম্য আর তামিমের পারস্পরিক বোঝাপড়ার চিত্র। ম্যাচ শেষে সেটিই বলেছেন সৌম্য, ‘পরিকল্পনা ছিল যে জুটি গড়তে হবে, তাহলে খেলা আমাদের হাতে আসবে। সেটিই হয়েছে।’ ক্লনটার্ফের উইকেটে রান করাটা খুব সহজ ছিল না বলেই জানিয়েছেন সৌম্য। তবে এই সময় তামিমের প্রেরণা তাঁকে যথেষ্টই আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে, ‘উইকেট খুব সহজ ছিল না ব্যাটিংয়ের জন্য। শট অতটা খেলা যাচ্ছিল না। পেছনের বলগুলো খেলা যাচ্ছিল, সামনের বলগুলি অতটা নয়। তামিম ভাই বলেছিলেন, তুই তোর স্বাভাবিক খেলাটা খেল। একটা সময় ম্যাচ আমাদের হাতে চলে আসবে।’এই ভাবেই বর্ননা দিচ্ছেলেন সৌর্ম সরকার। তাদের ব্যাটে ভর করেই জয়ের লক্ষে সহজেই পৌঁছে যায় টাইগার বাহিনী। খেলা শেষে ম্যাচ সেরার পুরস্কার হোপের হাতে গেলেও,নিরাশ হয়নি বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা পেয়েছেন হোপের সমান প্রাইজ সম্মলিত `ফাউন্ডেশন অব দ্য ম্যাচ` পুরস্কার। অন্যদিকে বিশ্বকাপের আর বাকী ২১ দিন। এর পূর্বে এত বড় জয়ে আত্মবিশ্বাসী করেছে টাইগারদের। কারন বোলিং ও ব্যাটিংয়ে দুরন্ত ছিলো সবাই। ব্যাটিংয়েও তো পাত্তাই দেয়নি ক্যারিবীয় বোলারদের বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা। যার ফলে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যাবধানের বড় জয় তুলে নেয় তারা। টাইগাররা এমন ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেই ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে অনেক ভালো কিছু হবে বলে প্রত্যাশা সবার।
##