ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মানব পাচার : সেই থাই জেনারেল দোষী সাব্যস্ত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১০, ১৯ জুলাই ২০১৭

মানব পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে অবশেষে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন থাইল্যান্ড সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মানাস কংপেন। তার বিরুদ্ধে মানব পাচার সংক্রান্ত আরও কয়েকটি অভিযোগের পাশাপাশি ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

দুই বছর আগে মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছে জঙ্গলে পাচারকারীদের পরিত্যক্ত শিবিরে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর বিষয়টি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১০৩ জন আসামির বিরুদ্ধে বুধবার রায় ঘোষণা করছে থাইল্যান্ডের একটি আদালত। রায়ে দেশটির ৪৮জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে জেনারেল মানাস কংপেনসহ ৪৬ জন রয়েছেন। এ তালিকায় দু’জন রাজনীতিবিদ এবং পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন।  

রায়ের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশে আরও কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, দোষীদের কারও কারও বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্তঃদেশীয় অপরাধ, জোর করে আটকে রেখে মৃত্যু সংঘটন ও কাউকে কাউকে ধর্ষণের দায়ে দণ্ডিত করা হয়েছে।

ব্যাংকক পোস্ট জানিয়েছে, মানব পাচারে বিচারের মুখোমুখি হওয়া সর্বোচ্চ পদধারী কর্মকর্তা মানাস থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ওই এলাকায় ছিল মানব পাচারকারীদের ব্যাপক তৎপরতা, পাচারকারীদের এই নেটওয়ার্ক মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।

জেনারেল মানাস পাচারকারীদের থেকে তিন কোটি ৫৬ লাখের (১৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন বাথ) বেশি টাকা নিয়েছিলেন বলে আদালতে উঠে আসে। বিনিময়ে তিনি পাচারকারীদের নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকি এড়িয়ে সাগরের পাড় ধরে জঙ্গলের মধ্যে ওই সব শিবিরে যাওয়ার পথ বাতলে দিতেন।

থাইল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালে মানাসকে পদোন্নতি দিয়ে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কমান্ডের নেতৃত্বে আনা হয়েছিল।

২০১৫ সালের মে মাসে দক্ষিণাঞ্চলীয় সংখলা প্রদেশে পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্যে পরিত্যক্ত শিবিরে ৩৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের পর মানবপাচারের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালায় থাই সরকার। সে সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই আসামিদের।

মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ওই শিবিরে আটকে তাদের আত্মীয়দের কাছে মুক্তিপণ আদায় করা হত বলে তদন্তে উঠে আসে।

ব্যাংককপোস্টের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, দোষীদের মধ্যে পাজুবান অংকাচোতেপান, আধুনিককালের এই দাস ব্যবসার অন্যতম হোতা। ‘বিগ ব্রাদার টং’ নামে পরিচিত দক্ষিণাঞ্চলীয় সাতুন প্রদেশের এই রাজনীতিক এক সময় প্রাদেশিক সরকারের কর্মকর্তা ছিলেন। ব্যবসায়ী হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে।

দণ্ডিত আরেক রাজনীতিক বান্নাকং পংফল সংখল প্রদশের পেদাং বেসারের সাবেক মেয়র।

 

থাইল্যান্ড মানব পাচার চক্রের আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মানুষ ক্রয়-বিক্রয়, মানব পাচার ও দাস ব্যবসা বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থাইল্যান্ড সরকারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি