ঢাকা, শনিবার   ০৫ জুলাই ২০২৫

পরিবারের ঘটনা ফাঁস হওয়ায় ক্ষিপ্ত স্টোকস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

সংবাদের শিরোনামে অনেক সময় অনেক ভাবেই এসেছেন ইংলিশ তারকা ক্রিকেটার বেন স্টোকস। বিশ্বকাপ জয়ের পেছনে তার অসাধারণ দক্ষতার কারণে শিরোনামে এসেছেন। তারপরে অ্যাশেজে ভাল পারফরম্যান্স দিয়েছেন। এছাড়া রগচটা স্বভাবের কারণে শিরোনামে এসেছেন অনেক বারই। কিন্তু এবার সংবাদের শিরোনামে এসেছেন ভিন্ন কারণে। আর তাতেই চটেছেন স্টোকস।

মঙ্গলবার স্টোকসের পরিবার নিয়ে এক বিস্ফোরক কাহিনী প্রকাশ করে সাড়া ফেলে দিয়েছে ইংল্যান্ডের ট্যাবলয়েড ‘দ্য সান’। সে কাহিনী প্রথম পাতায় প্রকাশিত হওয়ায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে স্টোকস টুইটারে আক্রমণ করেছেন ওই ট্যাবলয়েডকে। 

তিনি বলেছেন, আমার পরিবারের ৩১ বছর আগের এক যন্ত্রণাদায়ক এবং অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয় প্রকাশ করেছে দ্য সান। সাংবাদিকদের এ রকম ঘৃণ্য এবং নিম্নরুচির প্রতিবেদন সম্পর্কে কী বলব, বুঝে উঠতে পারছি না।

তাহলে কী ঘটেছিল ৩১ বছর আগে? বিস্ফোরক এবং যন্ত্রণাদায়ক ওই কাহিনী স্টোকসের মা ডেবকে ঘিরে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চে স্টোকসের সৎ ভাই এবং বোনকে গুলি করে মেরেছিলেন ডেবের প্রাক্তন স্বামী রিচার্ড ডান। যদিও স্টোকস জন্মানোর তিন বছর আগে ওই ঘটনাটি ঘটেছিল। 

পারিবারিক সূত্র উল্লেখ করে প্রতিবেদনে লেখা হয়, ‘ডান এবং ডেবের দুই সন্তান ছিল ট্রেসি এবং অ্যান্ড্রু। ১৯৮৮ সালে যাদের গুলি করে মারে ডান। ওই সময় ট্রেসির বয়স ছিল আট, অ্যান্ড্রুর চার।’  

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে- কেন ওই ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন ডান? তবে শুনুন, স্টোকসের মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদটা নাকি একেবারেই মেনে নিতে পারেননি ডান। বিশেষ করে ডান যখন শোনেন, রাগবি কোচ জেরার্ড স্টোকসের (বেন স্টোকসের বাবা) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন ডেব, তখন আর মাথা ঠিক রাখতে পারেননি তিনি। 

বিচ্ছেদের পর আদালতের নির্দেশে সপ্তাহে দু’দিন করে বাচ্চাদের দেখভালের দায়িত্ব ছিল ডানের উপরে। ওই রকমই একটা দিনে দুই বাচ্চাকে কাছে পেয়ে রাইফেল দিয়ে গুলি করে মারেন ডান। এরপরে তিনি যান সাবেক স্ত্রী অর্থাৎ স্টোকসের মা ডেবের বাড়িতে। কিন্তু স্টোকসের মা তখন সেখানে ছিলেন না। এরপরে বাড়িতে ফিরে এসে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন ডান। 

যখন বাড়িতে পুলিশ আসলো তখন নিজের ঘরে ঢুকে যান ডান। এর মিনিট দশেক পরে পরপর দুটো গুলির আওয়াজ হলো। পুলিশ ঘরে ঢুকে দেখতে পায় আত্মহত্যা করেছেন ডান। তার কিছুক্ষণ পর ওই বাড়িতে দুই শিশুর মৃত দেহও খুঁজে পায় পুলিশ। 

স্বাভাবিকভাবেই বেন স্টোকস কোনদিন এই নিয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ডানের প্রথম পক্ষের মেয়ে জ্যাকির কারণে। ট্যাবলয়েডে জ্যাকি বলেছেন, ‘আমার বয়স তখন ১৮, এ সময় একটা দোকানে কাজ করতাম। ওই ঘটনার আগের দিন বাবা দেখা করতে এসেছিল আমাকে। কিন্তু আমি ছিলাম না, তাই দেখা হয়নি। ওই দুর্ঘটনার কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারিনি।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ডেব (স্টোকসের মা) এই ঘটনায় এতটাই বিধ্বস্ত আর বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল যে, বাবার কফিনে ক্রমাগত লাথি মারতে থাকে।’ এই ঘটনার তিন বছর পরে বেন স্টোকসের জন্ম। তাকে নিয়েই ফের বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন ডেব। 

মঙ্গলবার এই কাহিনী প্রকাশ হওয়ার পরে দীর্ঘ টুইটে বেন স্টোকস আরও লেখেন, ‘তিরিশ বছর ধরে এই ঘটনা ভুলে থাকতে চেয়েছিল আমার পরিবার। দ্য সান এক সাংবাদিককে পর্যন্ত পাঠিয়ে দিয়েছিল ক্রাইস্টচার্চে, আমার বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে। আমার নাম করে বাবা-মার ব্যক্তিগত জীবন ধ্বংস করার এই চেষ্টা ন্যক্কারজনক।’ 

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি